মমতা ব্যানার্জির সাদাসিধে জীবনের গল্প

মমতা ব্যানার্জি

মমতা ব্যানার্জির সাদাসিধে জীবনের গল্প

Other

পশ্চিমবঙ্গের অগ্নিকন্যা মমতা ব্যানার্জিকে নিয়ে নানা মহলে হাজারো কথা ও গল্প প্রচলিত রয়েছে। কলকাতার এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে থেকে আজ তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাকে নিয়ে মানুষের আগ্রহ থাকাটা খুব স্বাভাবিক।  

মমতা তার সুদীর্ঘ সংগ্রাম ও ত্যাগের মাধ্যমে সাফল্যের শিখরে উন্নীত হয়েছেন।

তবে রাজ্যের সর্বোচ্চ পদে বসেও নিজের শেকড় ভুলে যাননি। ভুলে যাননি পরিবারের অভাব অনটনের কথা।
 
তিনি চাইলে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করার পাশাপাশি বেছে নিয়েছেন এক সাদামাটা লাইফস্টাইল।

 
মমতার সাদাসিধে জীবনযাপন হাজারো মানুষকে মুগ্ধ করে। তবে ব্যক্তি মমতার অনেক কিছুই আজও মানুষের অজানা। আজ আমরা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তি জীবনের নানা দিক তুলে ধরব।
 
মমতা ব্যানার্জিকে সবসময় সাদা শাড়ি পড়তে দেখে অনেকেই মনে করেন তিনি হয়তো বিধবা। কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়। ব্যক্তিজীবনে মমতা কখনো বিয়েই করেননি। তিনি মূলত মাদার তেরেসাকে ভালোবেসে সাদা শাড়ি পরে থাকেন। মমতা শুধুমাত্র ধনিয়াখালি শাড়ি পরেন। পশ্চিমবঙ্গের হুগলির জেলার ধনিয়াখালি ব্লকে তৈরি হয় এই শাড়ি।
 
সেখানে বিভিন্ন রঙের শাড়ি তৈরি হলেও মমতা সবসময় সরু পাড় দেওয়া সাদা শাড়ি পরতে পছন্দ করেন।
মমতার সাদাসিধে জীবনের বড় প্রতীক হচ্ছে তার হাওয়াই চটি। হোক দিল্লি কিংবা প্যারিস, সর্বত্রই তার বিচরণ হাওয়াই চটিতে। তবে এখানেও মমতার বিশেষ পছন্দ রয়েছে। তিনি শুধু সাদা ও নীল স্ট্রিপের চটি পড়েন। ভারতের রাজনীতিতে মমতার চটি এখন 'পলিটিক্যাল সিম্বল' হয়ে গেছে।  

ব্যক্তিগতভাবে মমতা খুবই স্বাস্থ্য সচেতন। খাবারের বিষয়ে তিনি খুবই খুঁতখুঁতে। অতিরিক্ত তেল ও মশলা দেওয়া খাবার তিনি একেবারেই পছন্দ করেন না। তবে আলুর চপ দেখলে লোভ সামলাতে পারেন না। মমতার পছন্দের খাবারের মধ্যে রয়েছে চা, মুড়ি আর চকোলেট। এছাড়া তিনি প্রচুর পরিমাণ পানি খেয়ে থাকেন।  

স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার কারণেই মমতা ব্যানার্জি এখনও মাইলের পর মাইল হাঁটতে পারেন। মিছিলে এখনও তার সাথে হাঁটায় পেরে উঠতে পারেন না তরুণ-তরুণীরা। এর পেছনে অবশ্য মমতার নিয়মিত ব্যায়ামের ভূমিকা রয়েছে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ট্রেডমিলে ৫-৬ কিলোমিটার হাঁটেন।

এছাড়া বিধানসভার বারান্দায় হেঁটে হেঁটে রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে পছন্দ করেন। মমতার ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, তিনি একটানা ১০ কিলোমিটার হাঁটতে পারেন অনায়াসে।

মমতার ব্যানার্জির গুণের শেষ নেই। তিনি গান গাইতে, ছবি আঁকতে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করেন।
ব্যক্তিগতভাবে রবীন্দ্র সঙ্গীতের অনুরাগী। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তাকে টুকটাক গান গাইতেও দেখা গেছে।  
রবীন্দ্র সঙ্গীতকে তিনি এত বেশি পছন্দ করেন যে কলকাতার ট্রাফিক সিগন্যালে তা বাজানো বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। মাঝে মধ্যেই রং তুলি দিয়ে ক্যানভাসে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করেন মমতা। অল্প সময়ের মধ্যে বড় বড় ছবি এঁকে শেষ করার মতো দক্ষতা রয়েছে তার।  

মমতার অনেক ছবি বেশ ভালো দামে বিক্রি হয়েছে। সেসব অর্থ তিনি দল ও চ্যারিটির পেছনে ব্যয় করেছেন।  ছবি আঁকার পাশাপাশি কবিতা লিখতেও পছন্দ করেন মমতা। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে তাকে কবিতা লিখতে দেখা গেছে।  

এছাড়া প্রাণ-প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন মমতা। বিশেষ করে পাহাড় তার খুবই প্রিয়৷ তাই সময় হলেই ছুটে যান জঙ্গলমহল আর উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায়। মাঝে মাঝে বীরভূমের নানার বাড়িতেও ঘুরতে যান। তবে মমতা যেখানেই যান, সেখানকার হস্তশিল্প সংগ্রহ করেন। সাদাসিধে জীবনযাপন করতে পছন্দ করেন বলে লাল বাতি লাগানো কনভয়ে চলাফেরা করেন না। ক্ষমতায় বসার পরও নিজের পুরোনো স্যান্টো গাড়ি ব্যবহার করেন।

আরও পড়ুন


‘কালা নু’ শহর থেকে তালেবানদের বিতাড়িত করা হয়েছে: কাবুল

করোনায় এবার সাতক্ষীরাবাসীর পাশে শেখ তন্ময়

খুলনায় গৃহবধূর নগ্ন ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দিল সাবেক প্রেমিক

লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত


থাকার জন্য সরকারি বাসভবনও ব্যবহার করেন না। এর পরিবর্তে কলকাতার কালীঘাটে নিজের বাড়িতে থাকেন। মাটির টালি করা সেই বাড়ির ছাদ দিয়ে এখনও বৃষ্টির পানি ঝড়ে।

 অনেক সময় তাকে ইটের উপরে পা দিয়ে পানি পার হয়ে বাড়িতে ঢুকতে দেখা গেছে। অথচ ক্ষমতায় বসার পর তার দলের অনেক নেতা কর্মী বিলাসবহুল বাড়ি গাড়ীর মালিক হয়েছেন।

লেখাটি জাহিদ হাসানের  ফেসবুক থেকে নেওয়া (সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

news24bd.tv/এমিজান্নাত