লকডাউন বাড়ানোর সুপারিশ করে যা বললো কমিটি

লকডাউন বাড়ানোর সুপারিশ করে যা বললো কমিটি

অনলাইন ডেস্ক

করোনায় বর্তমানে সারাদেশে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। কোভিডের এমতাবস্থায় লকডাউন শিথিল করার সরকারি সিদ্ধান্তে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করে চলমান লকডাউন আরও ১৪ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন।  

বুধবার (১৪ জুলাই) জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে শুরু করেছে।

এ অবস্থায় লকডাউন শিথিল করার সরকারি সিদ্ধান্ত গভীর উদ্বেগের।

জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৪১তম অনলাইন সভায় কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে বিস্তারিত আলোচনা শেষে ৬দফা সুপারিশ প্রস্তাব করা হয়।

সুপারিশগুলো হলো :
*সারাদেশে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ও মৃত্যুহার সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় লকডাউন শিথিল করার সরকারি সিদ্ধান্তে কমিটি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি চলমান কঠোর লকডাউন আরও ১৪ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করছে।  

*লকডাউনের অংশ হিসেবে কমিটি কোরবানির হাট বন্ধ রাখার প্রস্তাব করে, প্রয়োজনে ডিজিটাল হাট পরিচালনার ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। তবে সরকার লকডাউন শিথিল করে সীমিত পরিসরে কোরবানির হাট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিলে, সেক্ষেত্রে কমিটি প্রদত্ত বিধিনিষেধসমূহ প্রয়োগের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়।

*সরকার সারাদেশে কোভিড-১৯ পরীক্ষার সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করছে, যা সন্তোষজনক। জাতীয় পরামর্শক কমিটির পূর্ববর্তী সভার সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি পর্যায়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার মূল্য পুনর্নির্ধারণ করায় সভায় সরকারকে ধন্যবাদ জানানো হয়। দৈনিক পরীক্ষার সংখ্যা আরও বৃদ্ধির জন্য বেসরকারি পর্যায়েও টেস্ট বৃদ্ধি প্রয়োজন, এ লক্ষ্যে টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় কিটের দাম আরও হ্রাস পাওয়ায় আরটি-পিসিআর পরীক্ষার মূল্য কমিয়ে ১০০০-১৫০০ টাকার মধ্যে নির্ধারণের পরামর্শ দেয় কমিটি।  

*বর্তমানে অনেক কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে শয্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি আছে। যার ফলশ্রুতিতে চিকিৎসা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন অতীব জরুরি। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতর ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পর্যায়ে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ উদ্যোগকে সভায় অভিনন্দন জানানো হয় এবং দ্রুত বাস্তবায়নের অনুরোধ করা হয়।  

*সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে আমাদের দেশে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পর ফাইজার, মডার্না এবং সিনোফার্ম থেকেও কোভিড-১৯ এর টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে। এমনকি আবারও সারাদেশে একযোগে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। এই টিকার আওতায় দ্রুত আরও বেশি মানুষকে আনার উদ্দেশ্যে টিকার বয়সসীমা ১৮তে নামিয়ে আনা, এনআইডিবিহীন জনসাধারণকে টিকার আওতায় আনা, রেজিস্ট্রেশন সহজীকরণ ইত্যাদি বিষয়ে সরকারকে অতি দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।

*কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গৃহীত সরকারের পদক্ষেপসমূহকে সাফল্যমণ্ডিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়।

ঈদুল আজহা ও কোরবানি হাটের জন্য সুপারিশ :
জুলাইয়ের তৃতীয়/চতুর্থ সপ্তাহে ঈদুল আজহার সময় শহর এলাকায় কোরবানির পশুর হাট বসার অনুমতি না দেয়া; শারীরিক দূরত্ব ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে উন্মুক্ত স্থানে কোরবানির পশুর হাট বসানোর অনুমতি দেয়া যেতে পারে; বয়স্ক ব্যক্তি (৫০ বছর বা তার বেশি) এবং অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কোরবানির হাটে না যাওয়া; হাটে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য নির্দিষ্টভাবে আলাদা পথ রাখা; বাজারে আসা সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা।

আরও পড়ুন:


বাবরের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরির পরও হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় পাকিস্তান

ইসরাইলের নয়া প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এরদোগানের ফোনালাপ

ঈদযাত্রা: আজ পাওয়া যাবে যে তারিখের টিকিট


জনসাধারণকে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে না গিয়ে যে যেখানে আছেন, সেখানে অবস্থান করার বিষয়ে উৎসাহিত করা; জনসাধারণের অনলাইন কোরবানির হাটের সুবিধা গ্রহণ উৎসাহিত করা; বাড়ির আঙিনায় কোরবানি না করে সিটি করপোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে কোরবানির পশু জবাই করা এবং ঈদুল আজহার নামাজের জামাত সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করা।

news24bd.tv/আলী