ইউরোপের বাজার ধরতে ব্যস্ত শার্শার আম চাষিরা

ইউরোপের বাজার ধরতে ব্যস্ত শার্শার আম চাষিরা

ইউরোপের বাজার ধরতে ব্যস্ত শার্শার আম চাষিরা

রিপন হোসেন, যশোর

গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, ন্যাংড়া, গোপালভোগ, বোম্বাই, আম রুপালী, দক্ষিনা, মলয়, হিল্লোলে দোল খাচ্ছে আমের থোকা। সেই সাথে দোল খাচ্ছে আম চাষির স্বপ্ন। তাই আম ও গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে যশোরের শার্শা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের আম চায়ীরা। ইউরোপের বাজার ধরতে উত্তরণ সফল ও সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া থেকে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন।

সেই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে আম গাছের বিশেষ যত্ন নিচ্ছেন তারা। কারণ এই আমই যে দেশের গন্ডি পেরিয়ে যাবে বিদেশে। বর্তমানে বাজারে কাঁচা আম উঠলেও আর কিছুদিন পরেই বাজারে আসবে পাকা আম। তবে গাছে মুকুল আসার আগেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা আম বাগান ক্রয় করে পরিচর্যা শুরু করেন।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

যশোরে শার্শা উপজেলায় চলতি বছর ৩শ’ ৯০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে আমের বাগান রয়েছে ১ হাজার ৫শ'টি। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার মেট্রিক টন। মাটি ও আবহাওয়া আম চাষের অনুকূল হওয়ায় অন্য অঞ্চলে উৎপাদিত আমের চেয়ে এ এলাকার আম খেতে বেশী সুস্বাদু। সেকারণে এলাকায় গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, ন্যাংড়া, গোপালভোগ, বোম্বাই, আম রুপালীসহ নানা জাতের আমের বাগান রয়েছে। প্রতিটি গাছে গাছে এখন আমের সমারোহ। আমগুলোর ভারেই নুয়ে পড়েছে ডালগুলো। চাষিরা নিয়মিত পরিচর্যা করছে আমগাছগুলো। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মৌসুমে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও আম বিদেশে রপ্তানি হবে বলে মনে করছেন তারা।

আমের ন্যায্য মূল্য ও এলাকায় একটি হিমাগার স্থাপনের দাবি করেছেন আম চাষী হাফিজুর রহমান ও সাহা জামাল।
হায়দার আলী এবছর ১৪ বিঘা আম চাষ করেছেন। সেখানে খরচ হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। তিনি দাবি করেন যদি প্রকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে খরচ বাদে সাত থেকে আট লাখ টাকা লাভ হবে।

সাতক্ষীরা কলারোয়ার সলিডারিডাড নেটওয়ার্কের প্রোগ্রাম অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উত্তরণ সফল ও সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার সহযোগিতায় যশোরের শার্শা উপজেলায় ১শ’ ৫০ জন কৃষককে রপ্তানী যোগ্য ও বালাই মুক্ত আম উৎপাদনের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তার পরিপ্রেক্ষিতে এ আম দেশের বাহিরে নেয়ার জন্য আমাদের সাথে ইসলাম গ্রুপসহ ১৩টি আমদানী কারক প্রতিষ্ঠান সংযুক্ত হয়েছে। আশা করছি শার্শা উপজেলা থেকে এ বছর এক হাজার ৫শ’মেট্রিক টন আম সংগ্রহ করে আমদানী কারক প্রতিষ্ঠানের কাছে সরবরাহ করতে পারবো। আমদানী কারক প্রতিষ্ঠান এ আম ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করবে।

যশোর শার্শা উপজেলা কৃষি অফিসার হীরক কুমার সরকার বলেন, উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার চাষী আম চাষের সাথে জড়িত আছে। আশা করছি এ সকল বাগানে প্রায় দেড় হাজার মেট্রিক টনের অধিক আম উৎপাদিত হবে। যা এলাকার চাহিদা পুরণের পাশাপাশি ইউরোপসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে রপ্তানী হবে। তাই কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষীদের এনএটিপি ফেস-২ এর আওতায় প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এছাড়াও তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের উপকরণ দিয়ে সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

 

 

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কেআই)

সম্পর্কিত খবর