কুরবানি করার আগে যে বিষয়ে জানা খুবই জরুরি

কুরবানি করার আগে যে বিষয়ে জানা খুবই জরুরি

অনলাইন ডেস্ক

আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের আশায় কুরবানি করা প্রত্যেক সামর্থবান মুসলিমের জন্য ফরজ। নামাজ রোজা হজ যাকাতের মতো কুরবানিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তবে কুরবানি করার আগে অবশ্যই কিছু বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হয়।

কুরবানি করার আগে অবশ্যই কুরবানি সম্পর্কে বেশকিছু জিনিস শেখার ও জানার আছে, যা অনেকেরই জানা নেই।

বিশেষ করে কুরবানি কী কারণে করতে হয় তা অনেকেই জানে না। তবে প্রথমেই যে বিষয়টি জানা জরুরি, তাহলো-

কুরবানি কী? এ প্রসঙ্গে আল্লাহ কী বলেছেন?

কুরবানি হচ্ছে মনের তাকওয়া। শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই কুরবানির পশু জবাই করা। কুরবানির মধ্যে যদি অন্য কোনো চিন্তা থাকে তবে সে কুরবানি আদায় হবে না।

কুরবানি প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-
لَن يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَاؤُهَا وَلَكِن يَنَالُهُ التَّقْوَى مِنكُمْ كَذَلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ لِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَبَشِّرِ الْمُحْسِنِينَ
'এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন। ' (সূরা হজ: আয়াত ৩৭)

এ জন্য কুরবানি করার আগে থামা এবং চিন্তা করা উচিত। কী জন্য এ কুরবানি? কেন কুরবানি করে মুমিন মুসলমান? কুরবানি করার সময় মুমিন মুসলমানের অবস্থা কেমন থাকবে? কুরবানির গোশত, রক্ত কি আল্লাহর কাছে পৌঁছে?

হ্যাঁ, কুরবানি হচ্ছে মানুষের মনে তাকওয়া। আল্লাহর হুকুম পালনে শুধু আল্লাহর জন্য কুরবানি করা। কুরবানি করার সময় প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের হৃদয়ে এ নিয়ত রাখা যে, কুরবানি শুধু আল্লাহর জন্য। মানুষের হৃদয়ে এ আবেগ ও অবস্থা বিরাজ করা জরুরি যে, মুমিন বান্দা বলবে-
'হে আল্লাহ! তোমার সন্তুষ্টির জন্য কুরবানি করছি। তুমি আমাদের কুরবানি কবুল করে নাও। ' কেননা এ কুরবানির পশুর কোনো অংশই তোমার কাছে পৌঁছায় না, পৌঁছে শুধু আমাদের হৃদয়ের খালেছ নিয়ত। কুরবানি করার আগে এভাবে নিজের নিয়তকে পরিশুদ্ধ করা জরুরি।

যদি নিয়ত এমন না হয় তবে আদৌ কুরবানি কবুল হবে না। করবানির হক আদায় হবে না। শুধু লোক দেখানো, আর গোস্ত খাওয়া ছাড়া কুরবানির কোনো ফায়েদাই পাবে না মানুষ।

কেননা এমন অনেক মানুষ রয়েছে, যারা এ কুরবানিকে লোক দেখানোর প্রতিযোগিতা স্বরূপ আদায় করে থাকে। এ যেন এক ফ্যাশন। কে কত বড় পশু কুরবানি করতে পারলো? কার পশুর দাম কত বেশি? কে দেশ সেরা পশু কুরবানি করলো? ইত্যাদি ইত্যাদি...

অনেক সময় মনের ভুলে বা খেয়াল না করে, আমরা কথার ছলে এসব বিষয়গুলো এসে যায়, যা তার কুরবানিকে নষ্ট করে দেয়। যার ফলে এ কুরবানি আর ইবাদত থাকে না। নিয়তের কারণে তখন আর কুরবানি ইবাদত থাকে না। কারণ ইবাদত হয় সেই কাজ, যে কাজ বান্দা মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য করে থাকেন।

আরও পড়ুন


করোনা : এক সপ্তাহে দেশে এক হাজার ৪৬৪ জনের মৃত্যু

সময় চেয়ে যা বললেন ইভ্যালির এমডি

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

বিশাল জয় বাংলাদেশের


ব্যাপকভাবে কুরবানি করার কিছু কারণ

কুরবানি এমন এক ইবাদত। যে ইবাদতে সব মানুষ অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করে। সমাজের একাংশের মানুষের কুরবানি করার অন্যতম কারণগুলো হলো-
- কুরবানির নগদ লাভ পাওয়া। কুরবানি করার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ নগদ লাভ হিসেবে গোশত পেয়ে থাকে। যা অন্য কোনো ইবাদতে পাওয়া যায় না। এ রমক নিয়ত থাকলেও কুরবানি হবে না।
- এক শ্রেণির মানুষ নেতৃত্বের খাতিরে কুরবানি করে থাকে। নিজেকে নেতা হিসেবে প্রতষ্ঠিা করতে কুরবানি করে থাকে। এমন চিন্তা থাকলেও কুরবানি হবে না।
- নাম যশের জন্য অনেকে কুরবানি করে। একাধিক সংখ্যক বড় পশু কুরবানি করে অন্যদের দৃষ্টি আকষণ করে থাকে। এ নিয়তে কুরবানি করলেও তা আদায় হবে না।

এ সবই কুরবানির নিন্দনীয় কাজ। এ কাজ ও নিয়তের ফলে মানুষের কুরবানি কবুল হয় না। সে কারণেই কুরবানি কী? আর কেন কুরবানি করতে হয়। কুরবানি প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ কী নসিহত করেছেন, তা বুঝতে হবে। চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। তারপর কুরবানির সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের এ আয়াতের আলোকে কুরবানির জন্য নিজেদের প্রস্তুত করার তাওফিক দান করুন। পশু কুরবানিকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম বানিয়ে দিন। আমিন।

news24bd.tv এসএম