তখন তো আর ফ্রিজ ছিল না যে গোশত তাতে সংরক্ষণ করে রাখবে। মাকে দেখতাম জ্বাল দিয়ে দিয়ে গোশত টিকিয়ে রাখতেন। কোরবানির দুই তিনের মধ্যেই ঝোল শুকিয়ে গোশত ঝুরঝুরে হয়ে যেত। এখন যা ঝুরি মাংস হিসেবে পরিচিত।
এ গোশতের স্বাদ-গন্ধ যে কত অভাবনীয় তা বরফ যুগের মানুষকে বুঝানো গেলেও ফিজের যুগের মানুষদের বুঝানো যাবে না। নলার ঝোল (নেহারী/;পায়ার রেসিপি) এর সাথে এ গোশতের জুটি মিলিয়ে দিলে তো কথাই নাই। সমস্যা হয় নলার ঝোল শেষ হয়ে গেলে।
তবে চট্টগ্রামের লোকদের এ নিয়ে তেমন চিন্তা করতে হয় না। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে এক অদ্ভুত রেসিপিতে চাটগাঁর মাানুষ বাঁধা পড়ে আছে আর তা হলো "হাঁজী"।
হলফ করে বলতে পারি শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর কোথাও কেউ এ রেসিপি সম্বন্ধে জানে না। বিভিন্নভাবে এ হাঁজী তৈরি করা যায়। বরইয়ের আচার বা অন্য কোন আচার দিয়ে সরিষার তেলযোগে সিম্পলি লবণ দিয়ে পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে দিন অথবা রসুন ও কাঁচামরিচ তাওয়ায় পুড়ে দুটোই একসাথে মেশ করে অল্প সরিষার তেল দিন এরপর লবণ দিয়ে পানিতে গুলিয়ে ফেলুন দেখবেন কি সুন্দর হাঁজী হয়ে গিয়েছে।
সরিষার তেল একটু হালকা ভাসতে থাকবে, দেখতেই ভাল লাগবে। হাতের কাছে কিছু না পেলে লেবুর রস চেপে তাতে লবণ ও সরিষার তেল দিয়ে পানিতে মিশিয়ে নিন তাতেও আপনার কাজ হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে সবাই যেমন তেল খায় হাঁজীও তেল ছাড়া আপনাকে ভাল ফ্লেভার দিবে না।
আরও পড়ুন
বিভিন্ন জেলায় করোনা ও উপসর্গে মৃত্যুর তথ্য
গার্মেন্টস খোলার ব্যাপারে যা জানালেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
বাল্যবিয়ে মুক্ত উপজেলায় বাল্যবিয়ের চেষ্টা, জরিমানা-মুচলেকায় রক্ষা
ময়মনসিংহ মেডিকেলে করোনায় মৃত্যুর রেকর্ড
এরপর ঝুরি গোশতের বা ঝুরঝুরে গোশতের বাটিটা টেনে নিন। গরম ভাতের সাথে এ অপূর্ব রেসিপি আপনাকে স্বর্গীয় ফিলিংস না দিলেও বাংলাদেশের যে কোন জায়গার রেসিপির চেয়ে ব্যাতিক্রমধর্মী স্বাদে ডুবিয়ে দিবে।
"সো, এরর" বলছি! তবে ঝুরি মাংসটা আবার একটু হালকা তেলে ভেজে বেরেস্তা দিয়ে দিলে "সেরাম" হতে দেখেছি। আহা! আহারে কোথায় গেলো সে হাঁজী আর ঝুরি গোশতের অপূর্ব স্বাদের দিনগুলি!
(সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )
news24bd.tv নাজিম