ঢাকায় এতো যে ‘ড্রাই ক্লিনার্স’ সেগুলোর কাপড় ধোওয়া হয় কোথায়?

ঢাকায় এতো যে ‘ড্রাই ক্লিনার্স’ সেগুলোর কাপড় ধোওয়া হয় কোথায়?

Other

“ঢাকায় এতো যে ‘ড্রাই ক্লিনার্স’ সেগুলোর কাপড় ধোওয়া হয় কোথায়?” পাড়া-মহল্লার একেবারে গলি ঘুপচির মধ্যে যে সব লন্ড্রি সেগুলোর সাইনবোর্ডেও লেখা থাকে ‘ড্রাই ক্লিনার্স’, এগুলো তো ড্রাই ক্লিনার্স হবার কারণ নেই, একমাত্র ‘লীফা’ ছাড়া আর কারোই ড্রাই ক্লিনিংয়ের ব্যবস্থা নেই। তা হলে কাপড় ধোয় কোথায়? 

সেটা ১৯৮২ সালের কথা, আমি তখন সংবাদের ডেস্কে কাজ করি কিন্তু মাঝে মাঝে ফিচার লিখি, শেষ পাতায় ছাপা হয়। সেই সময়ে একদিন আমাদের ফটোগ্রাফার লুৎফুর রহমান বীনু'র সঙ্গে আড্ডায় এই রকমই কথা হল। বীনু বলে উঠলো – ‘রীয়াজ ভাই, চলেন এইগুলো খোঁজাখুঁজি করি।

’ মহল্লার ছোট একটি লন্ড্রিতে কাপড় দিয়ে সেটাকে অনুসরণ করলাম, ছবি তুললো বীনু কখন কাপড় ধোয়ার জন্যে নেয়, কারা নেয় – শেষ পর্যন্ত কামরাঙ্গির চড়ের খালের পাশে কাপড়-ধোয়া আর শুকানো পর্যন্ত যাওয়া গেলো। সেই নিয়ে ফিচার ছাপা হলো।  

আরেকবার আমার মাথায় প্রশ্ন আসলো – ঢাকায় সকালে সবচেয়ে আগে কারা কাজে যোগ দেন। ঢাকা তখনো এতটা ব্যস্ত হয়ে ওঠেনি।

শীতকালের কাকডাকা কয়েকটি ভোর বীনুর মটর সাইকেলের পেছনে কাটলো আমার। ছবি তোলা হল, ফিচার লেখা হলো, ছাপা হল। কিন্তু তারচেয়ে বেশি যা হল তা হল বীনুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। বীনুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চেষ্টা লাগতো না, সারাক্ষণ যার মুখে হাসি লেগে থাকে সেই বীনু যে কোনও কাউকেই সহজে আপন করে নেয়। তারপরে এক পর্যায়ে আমি রিপোর্টিংয়ে এলাম, এক সাথে এ্যাসাইনমেন্ট থাকলে বীনুর সঙ্গেই যাই। আমি সংবাদ ছাড়লাম, কিন্তু বীনুর সঙ্গে দেখা হয় রাজপথে – মিছিলের ছবি তুলতে এসে বীনু ‘কেমন আছেন?’ বলতে ভোলে না। মিছিলের সামনে থাকলে বীনু সামনে অনেকটা পথ ঘুরে এসে জানিয়ে দিয়ে যায় কোথায় পুলিশের প্রস্তুতি কি। প্রেস ক্লাবে দেখা হলে বলে, ‘চা তো খাবেনই, আর কি খাবেন?’ তারপরে আমাদের পথ ভিন্ন ভিন্ন দিকে চলে গেছে।

আরও পড়ুন


ঝিনাইদহে আজও ৪ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৭৩

গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা, যুবলীগ নেতা এখনও অধরা

খুলনার চার হাসপাতালে আরও ১১ জনের মৃত্যু

ভিয়েনা সংলাপকে বিপদগ্রস্ত করছে ইরান দাবি ফ্রান্সের


১৯৯৫ সালে বিবিসি সূত্রে সাংবাদিকতায় ফেরার কারণে ঢাকার সাংবাদিক মহলে আমার যোগাযোগ তৈরি হলো, ঢাকায় নিয়মিত যাওয়া হতো, বীনু আমাকে দেখলেই এমন ভাবে কথা বলে উঠতেন যেন তাঁর সঙ্গে গতকালই কথা হয়েছে। গত কয়েক বছরে মাঝে মাঝে কথা হয়েছে, বীনু আমেরিকা এলে কথা হয়েছে, দেশে থাকলেও। আজ যখন শুনলাম বীনু নেই তখন আবারো মনে হল আসলেই জীবন খুব ছোট। এখন প্রতিদিনই কেবল মৃত্যু সংবাদ শুনতে হয়। বড় দুঃসময়। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের মৃত্যুর খবর পাই, অপঘাতে মৃত্যুর খবর পাই, অকস্মাৎ পরিচিত জনের জীবনাবসানের খবর পাই। আহা! জীবন।

news24bd.tv এসএম

সম্পর্কিত খবর