একচুয়াল পারফেকশন বলে আসলে কিছু নেই

একচুয়াল পারফেকশন বলে আসলে কিছু নেই

Other

পারফেক্ট বলে আসলে কিছু হয় না। কারণ ভালোর চেয়ে ভালো, তার চেয়েও ভালো হয়। এর কোনো সীমারেখা নেই। আবার একই জিনিস একজনের কাছে পারফেক্ট আরেকজনের কাছে মূল্যহীনও হতে পারে।

তাই "একচুয়াল পারফেকশন" বলে আসলে কিছু নেই। কারণ এটা সার্বজনীন না। কোনো কিছুই একবারে মনের মতো হয়ে আসেনা। করে নিয়ে পারফেক্ট ভাবতে জানতে হয়।
নাহলে জীবনে হাসি আসলেও খুশিটা আসেনা।  

আরেকটা বিষয় হলো একই জিনিস কে কীভাবে দেখছে। গ্লাসে রাখা অর্ধেক পানির সাধারণ উদাহরণটাই যদি টানি। মানে হাফ পূর্ণ আর হাফ খালি। ইতিবাচকভাবে দেখলে আপনার চোখে পূর্ণতাটা পড়বে আর নেতিবাচকভাবে দেখলে আপনি দেখবেন শূন্যতাটুকু।

এই ব্যাপারটার সাথে চাহিদা শব্দটা কিছুটা জড়িত। যেমন যিনি পূর্ণতা দেখছেন তার চাহিদা কম। অল্পতে তুষ্ট থাকা মানুষ। আর শূন্যতা যার চোখে, তার চাহিদাটা বোধহয় একটু বেশি৷ তাই আরও কিছু যোগ করে খালি জায়গাটা পূর্ণ করে পেতে চান। তবে এই ব্যাপারটাও অনেকটা নির্ভর করে জীবনের প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির উপর। একজন দিনমজুর তার জীবনযাপনের জন্য একদিনের জন্য যা প্রয়োজন সেটা পেয়ে গেলে তার চাহিদা বেড়ে সর্বোচ্চ এটা হতে পারে যে তিনি দুই তিন বা ১৫ দিনেরটা একবারে যদি জোগাড় করতে পারতেন! কিন্তু তার চাহিদা কখনো এটা হবে না যে সে প্রাসাদে বাস করবে। আর যিনি নিজের প্রাসাদে বাস করেন তার মনে আরও কয়েকটা প্রাসাদের মালিক হওয়ার চাহিদা আসতেই পারে।  

চাহিদা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পূরণ করা সম্ভব। কিন্তু এর সাথে মানুষ স্বপ্নও যে দেখে! কিন্তু কিছু স্বপ্ন অজান্তেই একটু বেশি হয়ে যায় অথবা জীবনের সাথে মেলবন্ধন ঘটেনা বলে সবারটা ধরা দেয়না!

বছরে একটা নতুন লালজামা পথশিশুর মুখে যে হাসি এনে দেয়, প্রাসাদের ছেলেমেয়েদের একটা  আইফোন পাওয়া তার কাছে অতি তুচ্ছ! তাই শুধু জীবন আর যাপনের পার্থক্যের সাথে সাথে পারফেকশন, চাহিদা আর স্বপ্ন এই শব্দগুলো পরিবর্তন হয়। জীবনে ভালো থাকতে খুব বেশি কিছু লাগেনা। শুধু যে যতটুকু ডিজার্ভ করে ততটুকু পেলে চাহিদা বা প্রত্যাশার ইতি টানা বোধহয় ভালো। কিন্তু নিজের প্রাপ্যটা অর্জন করা পর্যন্ত ছুটে চলা উচিৎ এবং সেই প্রাপ্তিটাকেই নিজের জন্য পারফেক্ট ভাবলেই সব গন্ডগোল সমাধান। এরপর জীবন যা দিবে সেটা বোনাসের আনন্দ এনে দিবে এটা হলফ করে বলা যায়। আবার বোনাসের পারফেকশন খুঁজতে গেলে কিন্তু বিপদ! কারণ ওই যে, এর সীমারেখা নেই। তাই নিজের মতো করে সীমারেখা টেনে নিতে হয়।  

লেখাটি এমি জান্নাত-এর ফেসবুক থেকে নেওয়া (সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

এমি জান্নাত, সংবাদকর্মী

news24bd.tv/আলী