নীলফামারী সদর উপজেলায় এক নারী গার্মেন্টস কর্মীর ইজ্জতের মূল্য মাত্র ৮৫ হাজার টাকায় ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে গোপনে মীমাংসা করেছে স্থানীয় মাতব্বররা। এই ঘটনাটি উপজেলার কুন্দুপুকুর ইউনিয়ন সরকার পাড়া ও পৌরসভার দক্ষিণ হাড়োয়া ফকিরগঞ্জ এলাকায়।
প্রেমের ফাঁদে পড়ে প্রেমিকের মিথ্যে বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক মেলামেশা করায় অন্তঃসত্বা হয়। এই অবৈধ সন্তানকে নষ্ট করে বিয়ে করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় প্রেমিক।
ওই তরুণী দীর্ঘদিন যাবত নীলফামারী পৌর শহরে এভারগ্রীন নামে এক কোম্পানীতে ওয়ার্কার হিসেবে কাজ করে আসছিলেন।
একই কোম্পানীতে কাজ করতেন পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড দক্ষিণ হাড়োয়া ফকিরগঞ্জ এলাকার মৃত. তফিল উদ্দিনের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (২৩)। সেখানেই তাদের পরিচয়, অল্পদিনের মধ্যে গড়ে উঠে দুজনের প্রেমের সম্পর্ক। মন দেয়া নেয়ার একপর্যায়ে তারা শারীরিক মেলামেশা হয়।
যার ফলে গর্ভে সন্তান আসে। সেটা নষ্ট করলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন ওই তরুণী। প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় গত ২২ জুলাই নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং দুইদিন চিকিৎসা নেয়ার পর বাড়িতে চলে যায়।
গোঁপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (২৮ জুলাই) সরেজমিনে গেলে কথা হয় ধর্ষিতা ও তার পরিবারের লোকজনের সাথে। ধর্ষিতা ওই তরুণী জানান, আবুল কালামসহ এক কারখানায় কাজ করতাম। অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়।
ধর্ষিতা তরুণী আরও জানান, ঈদের দুদিন আগে (অর্থাৎ ১৯ জুলাই) রাতে আমার বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়ে ডেকে নেয় সে এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে শারীরিক মেলামেশা করে। পরে রাতে আমাকে টেবলেট খাওয়ানো হয়। এতে আমার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে আমি অসুস্থ্য হই, এরপর আর কিছুই বলতে পারি না। এ ঘটনায় ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়েছে ধর্ষিতার পরিবার।
ধর্ষকের সাথে বিয়ে হওয়ার কথা থাকলেও রাতে-আধারে মাত্র ৮৫ হাজার টাকায় একজন অবিবাহিত মেয়ে জীবন নষ্ট করেছে স্থানীয় মাতব্বররা বলে অভিযোগ উঠেছে।
ধর্ষিতার চাচা রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, আমার বড় ভাইয়ের মেয়ে, বড় ভাই দীর্ঘদিন যাবত রাজমিস্ত্রির কাজে ঢাকায় থাকেন। তাছাড়া আমরা গরীব মানুষ, টাকা-পয়সা নেই ঝামেলায় যেতে চাই না। এলাকার মাতব্বরদের পরামর্শে ৮৫ হাজার টাকায় আমরা মীমাংসা করেছি, আমাদের কোন দাবি-দাবা নেই।
কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সহির উদ্দিন জানান, শুনেছি মেয়েটা অসুস্থ্য হয়েছে, কিন্তু পরে কি হয়েছে তা আমি জানি না।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোটের আইনজীবি সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ মুঠোফোনে বলেন, ধর্ষণের মতো জঘন্যতম ঘটনা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা যোগ্য নয়।
আরও পড়ুন:
দেশে একদিনে করোনায় মৃত্যু বাড়ল
দক্ষিণের পথে পথে ঢাকামুখি মানুষের স্রোত
বগুড়ায় করোনা ও উপসর্গে ৯ জনের মৃত্যু
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ১২ দিন পর চালু
news24bd.tv / কামরুল