পুষ্টি, নাকি কেবলই তুষ্টি?

পুষ্টি, নাকি কেবলই তুষ্টি?

Other

অ্যাপল সাইডার ভিনেগার হলো মূলত এক প্রকারের ভিনেগার বা সিরকা যা আপেল পিষে তৈরি করা হয়। এখানে দুই দুইবার গাঁজনের মাধ্যমে ভিনেগার বা সিরকা তৈরি করা হয়। প্রথমবার আপেল পেষা রস গাঁজনের মাধ্যমে তৈরি হয় এলকোহল। দ্বিতীয় গাঁজনে এলকোহল থেকে তৈরি হয় ভিনেগার।

  যেখানে ৫-৬ শতাংশ এসেটিক এসিড থাকে।  

অ্যাপল সাইডার ভিনেগার আর সব ভিনেগারের মতই। এখানে ভিটামিন, প্রোটিন, ফ্যাট এর পরিমাণ শূন্য। অল্প কিছু শর্করা আর খনিজ বা মিনারেল আছে।

যার বেশির ভাগই পটাশিয়াম।  

এপল সাইডার ভিনেগার আর সব ভিনেগারের মতই মূলত একধরণের ফুড প্রিজারভেটিভ এবং এডেটিভ যা সালাদ বা মাছ মাংসে ব্যাবহার করা হয় স্বাদ বর্ধক হিসেবে। এর এসিটিক এসিডের কারণে এটি এন্টিব্যক্টেরিয়াল হিসেবে কাজ করে, ফলে খাবার দীর্ঘ সময় ভাল থাকে।  

এপল সাইডার ভিনেগার সহ সকল প্রকার ভিনেগারই সুদীর্ঘকাল ধরে জীবানু নাশক হিসেবে ব্যাবহার হয়ে আসছে৷ ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চিকিৎসা শাস্ত্রের জনক হিপোক্রেটিস ক্ষতস্থান ড্রেসিং এ এপল সাইডার ভিনেগার ব্যাবহার করতেন। তবে আধুনিক কালে প্রচুর স্যানিটাইজার, এন্টিসেপ্টিক ও এন্টিবায়োটিক আবিষ্কার হওয়াতে এর ব্যাবহার সীমিত হয়ে পড়েছে। ।

অ্যাপল সাইডার ভিনেগারে অন্যান্য ভিনেগারের মতই এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে৷  তবে এর মান আপেলের তুলনায় অনেক অনেক কম। উপরন্তু অ্যাপল সাইডার ভিনেগারে ভিটামিন বা  ফাইবার একেবারে শূন্য যা একটি আপেলে অনেক বেশি থাকে।  

আর সবাই জানে যে ফাইবার হলো রক্তের ব্যাড কোলেস্টেরল বা চর্বি কমানোর আসল হাতিয়ার। অর্থাৎ ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে হলে আপেল বা এ জাতীয় ফলই খেতে হবে, ফল পেষা গাঁজানো ভিনেগার নয়।  

অ্যাপল সাইডার ভিনেগারের কোন পুষ্টিগুণ নেই। এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে বা রক্তে চর্বির মাত্রা কমায় এর স্বপক্ষে কোন উচ্চ মানের গবেষণাও নেই। তবে ধারণা করা হয় এর এসেটিক এসিড পাকস্থলীতে একধরণের Feeling of fullness ( পেট ভরার অনুভব) দিয়ে থাকে যা খাবার কম খেতে উৎসাহিত করে।   অবশ্য সব সিরকাতেই এই গুণ বিদ্যমান।  

অ্যাপল সাইডার ভিনেগারের স্বাস্থ্যঝুঁকিও আছে। আর সব ভিনেগারের মতই এটি বেশি বেশি খেলে অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয়, কিডনির পাথর ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।  

আরও পড়ুন


জাপানে এত বেশি ভূমিকম্প কেন হয়?

জাপানে অলিম্পিক আসরের মধ্যেই ভয়াবহ ভূমিকম্প

সাকিব-মোস্তাফিজ আইপিএল খেলতে পারবেন

গোয়েন্দার হাতে পিয়াসার ১৭ গোপন ভিডিও, মৌ’র বিয়ে ১১টি


মোদ্দাকথা হলো গুন ও দোষের বিবেচনায় এপল সাইডার ভিনেগার আর সাধারণ ভিনেগারের মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই। পার্থক্য অনেকটা কেরুর মদ আর বিদেশি মদের মত। পার্থক্যটা জাস্ট স্বাদ-গন্ধ আর অনুভবে।  

পুষ্টির কথা ভাবলে এপল সাইডার ভিনেগার খাওয়ার চেয়ে আপেল খাওয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।  

তবে সালাদের স্বাদ বাড়াতে, ম্যারিনেট করতে ভিনেগার ব্যবহার করতেই পারেন।  ব্যাপক পুষ্টিগুণ আছে এমন অসৎ ও মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে বাজারে অ্যাপল সাইডার ভিনেগার উচ্চদামে বিক্রি করা হচ্ছে। জনতার সরল বিশ্বাসকে পুঁজি করে বাণিজ্যের পসার বাড়ানোর ধান্দা নতুন কিছু নয়।

news24bd.tv নাজিম