তৃতীয়বারের মতো পরীমনিকে রিমান্ডে পেল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিকে আবারও একদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
এর আগে সকালে আটটার দিকে পরীমনিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।
গতকাল বুধবার (১৮ আগস্ট) এ অভিনেত্রীর আরও পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। বুধবার (১৮ আগস্ট) আদালতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তাফা।
তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) শুনানির দিন ধার্য করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাসের আদালত।
একই দিন পরীমনির জামিন আবেদনের শুনানিও করার কথা ছিল।
পূর্বের জিজ্ঞাসাবাদে মামলার ঘটনা ও নেপথ্যে থাকা মূল হোতাদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন পরীমনি। আসামিকে রিমান্ডে পাওয়া গেলে মাদক ব্যবসার মূল হোতাদের গ্রেপ্তার এবং এর অবৈধ উৎসসহ অপরাধলব্ধ আয়ের সন্ধান পাওয়া সম্ভব হবে। উল্লেখ করে রিমান্ড আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তাফা।
সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সৌরভী। এর আগে সোমবার (১৬ আগস্ট) নায়িকা পরীমনির জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী।
বুধবার (১৮ আগস্ট) শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে সিআইডি রিমান্ড আবেদন করায় পিছিয়ে দেওয়া হয় জামিন শুনানি। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) পরীমনির রিমান্ড এবং জামিন শুনানি হবে।
পরীমনি নির্দোষ এবং ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী মো. মজিবুর রহমান।
তিনি উল্লেখ করেন, আসামি একজন নারী। ফলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ৪৭(১) (গ) মোতাবেক জামিন পেতে পারেন। জামিন পেলে আসামি জামিনের শর্ত ভঙ্গ করবেন না এবং আদালতের নির্দেশ মতে জামিনদার প্রদান করবেন।
আসামি দু’দফায় ছয়দিন রিমান্ডে থাকাসহ প্রায় ২৬ ঘণ্টা পুলিশ হেফাজতে থাকলেও মামলা সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
জামিন আবেদনে আরও বলা হয়, আসামি ‘ভারটিগো’ এবং ‘প্যানিক অ্যাটাক’ এর রোগী, দীর্ঘসময় পুলিশ কাস্টডিতে থেকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বিপর্যস্ত ও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসার স্বার্থে দরখাস্তকারী আসামিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া আবশ্যক। আসামির দখল ও নিয়ন্ত্রণ থেকে মদ ও মাদক উদ্ধার হয়নি।
আসামি নির্দোষ, ষড়যন্ত্রের শিকার বিধায় আসামিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া আবশ্যক।
পরীর আইনজীবী আদালতকে বলেন, এজাহার মোতাবেক ঘটনার অভিযান পরিচালনাকারী র্যাব টিম ‘দ্য আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ এর ৬ এবং ৬-এর এ ধারা লঙ্ঘন করে অভিযান পরিচালনা করে। যার ফলে একটি ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করার কারণে আসামি জামিন পাওয়ার হকদার। আসামি পরীমনি একজন প্রথম সারির চিত্রনায়িকা। ‘ফোর্বস ম্যাগাজিন’ ডিজিটাল তারকা হিসেবে বিশ্বের ১০০ জনের মধ্যে তার নাম অন্তর্ভুক্ত। আসামি জেলহাজতে আটক থাকলে চলচ্চিত্র অঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।
গেল ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীর বাসা থেকে পরীমনিকে আটক করে র্যাব। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তার বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে পরীমনির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক পাওয়ার দাবি করে র্যাব। ৫ আগস্ট র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাদকে আসক্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেন পরীমনি, দাবি র্যাবের।
আরও পড়ুন:
বরিশালে অবৈধ ব্যানার-বিলবোর্ড অপসারনকে কেন্দ্র করে রনক্ষেত্র
পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে পালাল ধর্ষণ মামলার দুই আসামি
ভারতের সঙ্গে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করল তালেবান
বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণ মামলায় বাদীর স্বাক্ষ গ্রহণ
NEWS24.TV / কামরুল