মর্গে মৃত ৭ তরুণীকে ধর্ষণ: দুই মামলায় চার্জশিট জমা

মর্গে মৃত ৭ তরুণীকে ধর্ষণ: দুই মামলায় চার্জশিট জমা

অনলাইন ডেস্ক

হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য রেখে দেওয়া মৃত তরুণীদের নিয়মিত ধর্ষণ করে আসা ডোম মুন্না ভগতের বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে সিআইডি।

শুক্রবার (২০ আগস্ট) আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত ৩০ মে শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় মুন্না ভগতের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সুব্রত কুমার রায়। তবে সে সময়ে চার্জশিট জমা দিলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে আদালতের কার্যক্রম স্থগিত থাকায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এর আগে, গত বছরের ২০ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন মুন্না ভগত। ১৯ নভেম্বর রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

সিআইডি সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন স্থান থেকে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে আনা মৃত তরুণীদের ধর্ষণ করতেন মুন্না ভগত।

সিআইডি ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া মুন্না ভগত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে ডোম জতন কুমার লালের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন।

২-৩ বছর ধরে সে মর্গে থাকা মৃত তরুণীসহ অন্য নারীদের লাশে বিকৃত ধর্ষণকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। এমন একটি অভিযোগ পেয়ে মুন্নার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মুন্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুন্না মৃত নারীদের ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছিলেন।

সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, মৃত তরুণী বা নারীদের ধর্ষণ করা পৃথিবীর জঘন্যতম একটি কাজ। সুস্থ ও স্বাভাবিক কেউ এমন জঘন্যতম কাজ করতে পারে না। গ্রেপ্তার মুন্না বিকৃত মানসিকতার। তা না হলে এমন কাজ তার করার কথা নয়। এটি তার বিকৃত যৌনতা।

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে দায়িত্বরত ডোম ও মুন্নার মামা জতন কুমার লাল জানান, মুন্না গত ২ থেকে ৩ বছর ধরে তার সহযোগী হিসেবে মর্গে কাজ করছিলেন। তার বাবার নাম দুলাল ভগত। গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ বাজারে। তিনি আরও ২ থেকে ৩ জনের সঙ্গে মর্গের পাশে একটি কক্ষেই রাত কাটাতেন। সেখানে সবাই ঘুমিয়ে গেলে গোপনে লাশ রাখার কক্ষে ঢুকে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হতেন মুন্না।

সিআইডি প্রমাণ পেয়েছে- ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ থেকে ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ৭ জন মৃত কিশোরীর মরদেহ ধর্ষণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, মর্গে রাখা অল্পবয়সী মৃত তরুণীদের লাশ কাটার আগে নিয়মিত ধর্ষণ করা ছিলো বিশ বছর বয়সী মুন্নার নেশা। তার এই জঘন্যতম বিকৃত যৌনতার বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন। মৃত তরুণীদের যাদের বয়স ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে তাদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট ছিল ডোম মুন্না। ময়না তদন্তের ফরেনসিক রিপোর্টে জানা গেছে গেছে- অন্তত ৭ জন নারীর মরদেহ ধর্ষণ করেছে মুন্না। প্রত্যেকটি তরুণীর ফরেনসিক রিপোর্টে একজন ব্যক্তির শুক্রাণুর প্রমাণ পাওয়ায় সেটির রহস্য খুঁজতে গিয়ে মুন্নার জগন্যতম যৌনতার বিষয়টি জানতে পারে সিআইডি।

সম্পর্কিত খবর