ইসির হাতেই থাকছে এনআইডি নিবন্ধন, নথি ফেরত আইন মন্ত্রণালয়ের

ইসির হাতেই থাকছে এনআইডি নিবন্ধন, নথি ফেরত আইন মন্ত্রণালয়ের

অনলাইন ডেস্ক

এবার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন কার্যক্রম নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরলো আইন মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রম সেবা তুলে দেওয়ার কথা উঠলেও সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি আইন মন্ত্রণালয়। ফলে আপাতত নির্বাচন কমিশনের হাতেই থাকছে এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রম।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রস্তাব করেছিল ‘রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬’-এর সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধনের মাধ্যমে এনআইডি সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের হাতে দিতে।

কিন্তু সেই প্রস্তাবে সম্মতি না দিয়ে এ-সংক্রান্ত নথি ফেরত পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি করতে হলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০-এ সংশোধনী আনতে হবে। এ জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন ও প্রস্তাবিত সংশোধনী আইনটি বিল আকারে জাতীয় সংসদে পাসও হতে হবে। ফলে এসব প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইসির হাতেই থাকছে এনআইডি সেবা।

তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এনআইডি সেবা-সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতায় দিতে হলে অবশ্যই এ-সংক্রান্ত জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০-এর সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধন করতে হবে। আইনে উল্লিখিত ‘নির্বাচন কমিশন’-এর স্থলে ‘সরকার’ শব্দ অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন হবে। আর এটি করতে হলে এ-সংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগবে, সঙ্গে অনুসরণ করতে হবে বিভিন্ন প্রক্রিয়া। এর পরই রুলস অব বিজনেস সংশোধন করতে হবে। কিন্তু তা না করে শুধু রুলস অব বিজনেসের সংশোধন করার প্রস্তাব পাঠানোর কারণেই নথিটি ফেরত এসেছে। সরকার চাইলে এখন সেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এনআইডি সেবা সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতায় দিতে পারে। এ জন্য কিছুদিন সময় প্রয়োজন। সেই সময় পর্যন্ত ইসির হাতেই থাকছে এনআইডি সেবা কার্যক্রম।

জানা গেছে, ২০০৭ সাল থেকে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নকাজের অংশ হিসেবে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে আসছে ইসি। তারাই এখন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের সব কার্যক্রম পরিচালনা করে। ইসিকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ১৭ মে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এক চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাহী বিভাগের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন দেশের উদাহরণের আলোকে সুরক্ষা সেবা বিভাগ ওই দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বিবেচিত। এ জন্য এ-সংক্রান্ত দায়িত্ব সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্ত করার লক্ষ্যে ‘অ্যালোকেশন অব বিসনেস অ্যামং ডিফরেন্ট মিনিস্ট্রিস অ্যান্ড ডিভিশনস’-এ সুরক্ষা বিভাগের দায়িত্বসমূহের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এ জন্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০-এ ‘নির্বাচন কমিশন’-এর পরিবর্তে ‘সরকার’ শব্দ অন্তর্ভুক্তকরণসহ প্রয়োজনীয় সংশোধনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল ইসি থেকে সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন


হাসপাতালে নুসরাত, নতুন সদস্যের আগমন কবে জানা গেল

কুষ্টিয়ায় পদ্মা-গড়াইয়ে পানি কমছে, বাড়ছে ভাঙন

প্রেমিকের সঙ্গে তরুণীর ঝগড়া, অতঃপর ভয়াবহ দৃশ্য

‘যন্ত্র’ বলে নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করলেন রাহুল গান্ধী


এর পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগকে নির্দেশ দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর আলোকে ১৬ জুন সুরক্ষা সেবা বিভাগ আন্তমন্ত্রণালয় সভা করে রুলস অব বিজনেস সংশোধনের প্রস্তাব পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। কিন্তু ওই সভায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন সংশোধনের বিষয়ে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সে অনুযায়ী এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব ৮ জুলাই প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উপস্থাপন করা হলে রুলস অব বিজনেস সংশোধনের সুপারিশ করে কমিটি। এর পরই প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে ভেটিং করতে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন সংশোধনের বিষয় উল্লেখ না থাকায় প্রস্তাবটি ফেরত পাঠায় আইন মন্ত্রণালয়। সূত্র: কালের কণ্ঠ।

news24bd.tv এসএম