আইল্যান্ডকে কী ‘ফুলদানি দ্বীপ’ বলা যায়!

আইল্যান্ডকে কী ‘ফুলদানি দ্বীপ’ বলা যায়!

Other

সাত সকালে প্রায় ১১০ কিলোমিটার ড্রাইভ করে হঠাৎ যখন জিপিএস সংযোগ হারিয়ে ফেলে একই জায়গায় কয়েকবার চক্কর খাইয়ে দেয়, আমাদের তখন মনে হয় কখনো কখনো পথ হারিয়ে ফেলাটাই বুঝি বেশি কাংখিত!

সবুজে একেবারে মুড়ে থাকা পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তার ব্রুস পেনিনসোলার ’টোবারমোরি’ নামের এই জায়গাটা খপ করে মনকে বেঁধে ফেলে আমাদের। কিন্তু আমাদের গন্তব্য ছোট্ট একটা দ্বীপ, উপকূলের সবুজের প্রেমে মজে থাকার ফুসরত আমাদের নেই যে! আমরা যতোই হারিয়ে যাওয়ার ভান করে অচেনা রাস্তায় ঢুকে পরার চেষ্টা করি না কেন, আমাদের দলনেতা নাজমা কাজী আর খসরু ভাইর গাড়িটি ততক্ষণে ঠিকানা বের করে ফেলেছে। অগত্যা কী আর করা! 

ফেরি ছাড়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে- এই বার্তা পাওয়ার পর তো আর পথ হারানোর ভান ভণিতা চলে না। আমাদের গন্তব্য আসলে ছো্ট্ট একটা দ্বীপ- যার নাম ’ফ্লাওয়ার পটস আইল্যান্ড’।

ফ্লা্ওয়ার পটস আইল্যান্ডকে কী ‘ফুলদানি দ্বীপ’ বলা যায়! 

টোবারমোরি থেকে অল্পক্ষণের ফেরি যাত্রা আমাদের ‘ফুলদানি দ্বীপে’ পৌঁছে দেয়। তার আগে দ্বীপটার পাশ ঘেঁষে খানিকটা চক্কর খায় যেনো ফেরিটা। অগাধ জলরাশির মাঝখানে পাথরের কয়েকটা ফুলদানি- ’ফ্লাওয়ার পটস’ গাঢ় সবুজকে বুকে জড়িয়ে ধরে  কী দৃঢ়তায় দাঁড়িয়ে আছে! 

ফেরিটা আমাদের নামিয়ে দিয়েছে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। তারপর এসে আবার আমাদের শহরে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।

আমরা যেনো এই সময়টায় দ্বীপের বুকে লুকিয়ে তাকা নানা রহস্যের অনুসন্ধান শেষ করে ফেলি।  

দ্বীপটার নাম ‘ফ্লাওয়ারপট’ বা ’ফুলদানি দ্বীপ’ হলো কেন! বছরের পর বছর ধরে বাতাস বৃষ্টি আর ঢেউ মিলে পাহাড়ের খাঁজ থেকে  মাটি, পাথর ভাসিয়ে এনে ছিটকে পরা চূণাপাথরের কাছে গচ্ছিত রেখে রেখে করেছে সামদ্রিক এক স্তুপ।  

সমুদ্রের বুকে পাথরের এই কাঠামোটা দেখতে একেবারেই ফুলদানির মতো। আর সে থেকেই এর নাম ’ফ্লাওয়ার পটস আইসল্যান্ড’, আমি যাকে বলছি ফুলদানি  দ্বীপ। ১৯০৩ সাল পর্যন্ত এখানে তিনটি ফ্লাওয়ার পট থাকলেও এখন মাত্র দুটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।   

ফুলদানি দ্বীপের ভেতর দিয়ে বয়ে চলে এলোমেলো পথ ধরে এগুতে এগুতে আমরা প্রকৃতির অপর ক্ষমতা অবলোকন করতে থাকি। দ্বীপটাজুড়েই যেনো অসংখ্য গুহা, যার কতোগুলোর ভেতর যাওয়া যায়, অনেকগুলোর একেবারেই দুর্গম। প্রায় ১২ হাজার বছর আগের এই গুহাগুলো প্রকৃতির বিবর্তনের অমোঘ এক সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে।

কখনো গুহায় উঁকি দিয়ে, কখনো বা পাথরের বুক চিড়ে জন্ম নেয়া গাঢ় সবুজ বৃক্ষরাজির শেকড় খোঁজার ছলে ছুঁয়ে দিয়ে দিয়ে  সামনে এগুতে থাকি। মাটি নয়, পাথরের বুকেও যে এমন গভীর অরণ্য, সবুজ প্রকৃতি গড়ে উঠতে পারে, ফুলদানি দ্বীপে না এলে সেটি বোধ হয় জানাই হতো না!

আরও পড়ুন:


ময়মনসিংহে হাওড় এক্সপ্রেসের চাকা লাইনচ্যুত

যে কারণে আফগানিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করেনি সেনারা!

নেশার টাকা না পেয়ে বাবাকে পিটিয়ে হত্যা

মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ’কে নাগরিক সমাজের আহ্বান


NEWS24.TV / কামরুল