ভালোবাসা নিয়ে আমি আগেও অনেক বার লিখেছি। ভালোবাসার কোনো সংঙ্গা নেই, কোনো সীমারেখা নেই রূপ রস গন্ধ, বর্ণ কোনটাই নেই। সবটাই অনুভবের ব্যাপার।
তবুও নেই নেই করেও ভালোবাসার অনেক রূপ।
সন্তানের জন্য মায়ের ভালোবাসা, মায়ের জন্য সন্তানের ভালোবাসা, প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসা,বন্ধুর জন্য বন্ধুর ভালোবাসা, শিক্ষকের জন্য ছাত্রের ভালোবাসা। জীবনের জন্য ভালোবাসা, প্রকৃতির জন্য ভালোবাসা,সবই আছে, কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন রূপ নিয়ে।আজকে আমি যে ভালোবাসার গল্প শোনাব সেটা ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার একটা মিশেল।
আমিতো হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে দীর্ঘদিন কাজ করেছি।
হলি ফ্যামিলিতে রাউন্ড দেওয়ার সময় আমি একটা নিজস্ব স্ট্যাটাইল তৈরী করেছিলাম। ঠিক সাড়ে আটটায় রাউন্ড শুরু করতাম। আমিই প্রথম good morning এবং আসসালামু আলাইকুম বলে রাউন্ড শুরু করতাম। ওপাশ থেকে অর্থ্যাৎ আমার ইউনিটের অপেহ্মমাণ ডাক্তারও সমস্বরে good morning ম্যাডাম, ওলাইকুম আসসালা ম্যাডাম বলে উঠত, আমার খুব ভালো লাগত।
তারপর রোগী দেখা,পড়ালেখা আর হাসি খুশি দুষ্টমির মধ্যে দিয়ে রাউন্ড শেষ করতাম ২ থেকে ৩ ঘন্টা লাগিয়ে। খুব ভাল সময় কাটত। ২০১৫ সালে এপ্রিলে অবসরে গেলাম। সবাই কেদেঁ কেটে একাকার করল। গ্রুপে গ্রুপে ফেয়ার ওয়েল দিল।
যেতে নাহি দিব, তবু যেতে দিতে হলো, চলে আসতে হলো আমাকে। হাসপাতালকে খুব মিস করতাম,এখনো করি। বিশেষ করে রাউন্ড শুরুর অংশটা।
সময়ের ব্যবধানে সব কিছুই সয়ে যায়। প্রথম প্রথম আমার সব ডাক্তাররা ফোন করত, মেসেজ পাঠাত। এখনো অনেকে পাঠায়। কিন্তু সেই ছেলেটা,যার কথা বলছিলাম বর্তমানে একজন নামকরা অধ্যাপক।
আরও পড়ুন:
সপ্তাহে কতদিন ক্লাসের পরিকল্পনা সরকারের, জানালেন শিক্ষা উপমন্ত্রী
পাসপোর্ট অফিসে দালালদের নিয়ন্ত্রণে সিসি ক্যামেরা
১০ হাজার 'ভুয়া' মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল
নভেম্বর-ডিসেম্বরে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে নন অনেকেই
সে কিন্তু এখনো তার স্মৃতিতে উজ্জল রেখেছে আমাকে। প্রতিদিন সকালে ফেসবুক খুললেই good morning wish এবং সেই সাথে একটা সুন্দর ছবি পাই তার কাছ থেকে। এপ্রিল ২০১৫ থেকে আজ ২০২১সেপ্টেম্বরের শুরু,বোধহয় একটা দিনও এর বাদ পড়েনি তার good morning wish পাঠানো।
কখনো ধূমায়িত চায়ের কাপ,কফির মগ বিভিন্ন ফুলের ছবি,পাখির ছবি, সূর্যেদয়ের ছবি, অথবা মিষ্টি গানের চার লাইন। তার good morning wish আনন্দ চিত্তে গ্রহণ করতাম আমি প্রতিদিন। আর শুধু লাইক দিয়ে ছেড়ে দিতাম।
আজ মনে হলো তার এই দীর্ঘ সময় ধরে শ্রদ্ধা মিশ্রিত ভালোবাসার জন্য তাকে আমার ধন্যবাদ জানানো অবশ্যই উচিত। তাই এই লেখাটা তার জন্য উৎসর্গ করলাম। ভালো থেকো বাবু, খুব ভালো থেকো, এই রকম ই হৃদয়বান থেকো সারাজীবন।
লেখাটি ডাক্তার কানিজ মওলার ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া।
সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )
news24bd.tv নাজিম