কাপ্তাই হ্রদে পোনা অবমুক্তকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন

কাপ্তাই হ্রদে পোনা অবমুক্তকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন

ফাতেমা জান্নাত মুমু  • রাঙামাটি

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পোনা মাছ অবমুক্তকরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ (১৯ মে) দুপুর ১২টার দিকে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) উদ্যোগে রাঙামাটি ফিসারির ঘাটে আনুষ্ঠানিকভাবে হ্রদে পোনা মাছ অবমুক্ত কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রইছউল আলম মণ্ডল। এসময় তিনি অবৈধ কারেন্ট জাল পুড়ানো কার্যক্রমেও অংশগ্রহণ করেন।  

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. দিলদার আহমদ, রাঙামাটি ডিজিএফআই অধিনায়ক কর্ণেল মো. শামসুল আলম, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্র ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আসাদুজ্জামান খাঁন আসাদ।

news24bd.tv

পোনা মাছ অবমুক্ত করার পর বাংলাদেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রইছউল আলম মণ্ডল বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলধারা ও বাংলাদেশের প্রধান মৎস্য উৎপাদন কেন্দ্র কাপ্তাই হ্রদে মাছধরার ওপর ৩ মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ  করা হয়েছে, শুধুমাত্র মাছের সুষ্ঠু ও প্রাকৃতিক প্রজনন, বংশবৃদ্ধি এবং উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে।  

আর বন্ধকালীন সময় কাপ্তাই হ্রদে যে পরিমাণ পোনা মাছ ছাড়া হবে, তা বড় হতে প্রায় ৩মাস সময় লাগবে। এই ৩ মাস সমস্ত জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের অপেক্ষা করতে হবে। কারণ এসব পোনা মাছ বড় হলে তার সুফল এ অঞ্চলের মানুষ ভোগ করবে।

তাই কাপ্তাই হ্রদে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

এ ব্যাপারে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্র ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ দেশের কার্প জাতীয়  মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের একটি অন্যতম স্থান। এই হ্রদে প্রতি বছর প্রাকৃতিক প্রজননে কাতাল, রুই, মৃগেল ও কালিবাউশের বাম্পার প্রজনন হয়। যা দেশের সামগ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই চলতি বছর বন্ধ মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে ১৫দিনব্যাপী ৩০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় পোনা মাছ অবমুক্ত করা হবে।  

শুরুতেই হ্রদে ২২ মেট্রিক টন পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে অবমুক্তকরণ করা হবে। এছাড়া বিএফডিসি কর্পোরেশনের উদ্যোগে বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যারচর এলাকার হ্যাচারি ও নার্সারি থেকেও কিছু পোনা মাছ উৎপাদন হয়েছে, তাও হ্রদে অবমুক্ত করা হবে। এসব মাছ বড় হলে এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা সম্ভব হবে। এতে একদিকে রাজস্ব খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়বে, অন্যদিকে হ্রদের মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা লাভবান হবে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১মে থেকে আগামী ৩১জুলাই পর্যন্ত রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু ও প্রাকৃতিক প্রজনন, বংশবৃদ্ধি এবং উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ। সে সময় কাপ্তাই হ্রদ এলাকায় সকল প্রকার মৎস্য আহরণ, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ, শুকানো ও পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সাথে এই নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়।

মুমু/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর
 

সম্পর্কিত খবর