পিনন-হাদিতে স্বপ্ন বুনছে পাহাড়ি নারীরা

পিনন-হাদিতে স্বপ্ন বুনছে পাহাড়ি নারীরা

Other

‘পিনন-হাদি’ অর্থাৎ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের পরিধানে বিশেষ বস্ত্র। তাই এ পোশাক পার্বত্যাঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়। তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ১০টি ভাষাভাষীর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ১৪টি নৃ-গোষ্ঠীর নারীদের প্রধান ও ঐহিত্যবাহী পোশাক এটি।

প্রতিটি সম্প্রদায়ের কাছে ভিন্ন নামে পরিচিত পিনন-হাদি।

কালের পরির্বতনে আধুনিকতার ছোয়ায় পোশাকের আকর্ষণ রয়েছে পর্যটকদের কাছে। তাই পার্বত্যাঞ্চলের পর্যটন স্পটগুলো ঘিরে নিজেদের তৈরি পিনন- হাদিতে কুটি শিল্প গড়ে তুলেছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা। কিন্তু সম্প্রতিক বছরগুলোতে করোনার কারণে পিনন হাদি ব্যবসায় ধস নামলেও আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা পাহাড়ি নারীর। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানের গন্ডি ছাড়িয়ে এ পিনন-হাদি রপ্তানি হচ্ছে দেশ- বিদেশে।
লকডাউন খুঁলে দেওয়ার পর আবারও পিনন-হাদিতে স্বপ্ন বুনছে পাহাড়ি নারীরা। এরই মধ্যে ব্যবসার প্রসরা সাজিয়েছে অনেকেই। শুধু হাট বাজারে নয়, অন লাইনেও এ ব্যবসা জমে উঠেছে ব্যাপক ভাবে।

news24bd.tv

আরও পড়ুন: 


যে কারণে ৫ মিনিট চলেই বন্ধ হলো আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল ম্যাচ

তিতাসের আরও চার কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে

আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল খেলা শুরু(ভিডিও)

অবশেষে স্থগিত হয়ে গেল ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচ


জানা গেছে, রাঙামাটির বনরূপায় সাপ্তাহিক হাটবাজার ছাড়াও প্রায় প্রতিদিন বসছে পিনন হাদির হাট। হাটও জমজমাট। তাই ঘরে বসে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারীরা এ ব্যবসার লাভগুনছে। রেশমি সুতার নিখুঁত হাতের কাজ। আকর্ষণীয় ডিজাইন। যে কোনো মানুষকে এ পিনন হাদি আকর্ষণ করে সহজেই। তাই এ পোশাক দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। চাহিদা অনেক। লাভও বেশি। করোনার দখল কাটিয়ে এখন পিনন হাদি তৈরিতে কোমর তাতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা। এ ব্যবসায় অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। আগ্রহ বেড়েছে বেকার নারী-পুরুষদেরও। রাঙামাটি শহরের পর্যটন কেন্দ্র, চাকমা রাজবাড়ি এলাকা ও বনরূপায় ব্যক্তি উদ্যোগে এসব বস্ত্রের গড়ে উঠেছে বিভিন্ন বিক্রয় প্রতিষ্ঠান।

news24bd.tv

এ ব্যাপারে পিনন হাদি বিক্রেতা মেনটেলা চাকমা বলেন, রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে এসব কাপড় খুবই প্রিয়। কিন্তু করোনা আর লকডাউনের জন্য দীর্ঘ দিন এ ব্যবসা স্থবির ছিল। অনেকটা বেকার সময় কাটছিল সবার। কিন্তু এখন আবারও ব্যবসা সাজার কাজে  নেমেছি সবাই। পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আবারও ঘুড়ে দাঁড়াতে পারব।

আর জ্যোতিকা চাকমা বলেন, শুধু পিনন-হাদি নয় আমরা কোমর তাতে তৈরি করে থাকি সুতির, রেশম, মাসলায়স ও জরির কাজের বিভিন্ন ছোট বড়দের পোশাক। যেমন থ্রি পিছ, ফ্লোর ম্যাট, ডিনার ম্যাট, শাল, ব্যাগ, স্কুলবেগ, চাঁদর, রুমাল, গামছা। এক জোড়া পিনন-হাদির সর্বন্মিম ১হাজার থেকে ১০হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

news24bd.tv

রাঙামাটির রাঙাপানি এলাকার কোমড় তাঁতি কল্পনা চাকমা জানান, নিজেদের প্রয়োজনে এক সময় এ পিনন হাদি তৈরি করা অত্যাবশ্যকীয় ছিল পাহাড়ি নারীদের। কিন্তু এখন আত্মকর্ম সংস্থানের লক্ষ্যে অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগে কোমর তাঁতে পিনন-হাদি তৈরি করছে। একজন নারীর একজোড়া পিনন হাদি তৈরি সময় লাগে দশ থেকে পনের দিন। এখন পাহাড়ের বেশির ভাগ নারী নিজেদের উদ্যোগে পিনন তৈরি ব্যবসা গড়ে তুলেছে। কারণ পিনন-হাদি ঘরে বসে কোমড় তাঁতে তৈরি করা যায়। তার জন্য কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে যেতে হয় না তাদের। বিশেষ করে অবসর সময়টা কাজে লাগায় তারা এ বস্ত্র তৈরি করতে। একসময় জুমের তুলা থেকে সুতা তৈরি করে তাঁতে বুনন হোত এসব বস্ত্র। এখন এসব সুতা বাজারে পাওয়া যায়। তবে সুতার দাম একটু বেশি। তাই কাপড় তৈরি ব্যবসায় হিমশিম খেতে হচ্ছে অনেকেই। তাই পিনন-হাদি ব্যবসায় সাথে জড়িত নারীদের দাবি সরকারীভাবে সহায়তা দেওয়া হলে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে অনেক বেকার নারী-পুরুষও নিজেদের আত্মকর্মসংস্থান গড়ে তুলতে পারবে।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর