পরোপকারের অন্যতম সোপান হলো সুপারিশ

পরোপকারের অন্যতম সোপান হলো সুপারিশ

Other

মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসা, তাদের দুশ্চিন্তা দূর করা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুসলমান মুসলমানের ভাই। সে তার ওপর জুলুম করতে পারে না, তাকে অপমানিত করতে এবং শত্রুর হাতে তুলে দিতে পারে না। আর যে তার ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করে, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করে দেন।

যে (দুনিয়াতে) কোনো মুসলমানের একটি বিপদ ও দুশ্চিন্তা দূর করে দেয় আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার বিপদ ও দুশ্চিন্তা দূর করে দেবেন। ’ (বুখারি, হাদিস: ২৪৪২)

নানাভাবে এক মুসলমান অন্য মুসলমানের দুশ্চিন্তা দূর করতে পারে। সৎ, যোগ্য ও দক্ষ লোকের দুশ্চিন্তা দূর করতে বা কোনো হক আদায় করে দিতে ছোট একটি সুপারিশও অনেক বড় সওয়াব এনে দিতে পারে। পরোপকারীমূলক এই সুপারিশের কথা কোরআনেও বর্ণিত হয়েছে, ‘যদি কেউ কোনো ভালো (কাজের) সুপারিশ করে তাহলে তাতে তার অংশ থাকবে, আর কেউ কোনো মন্দ (কাজের) সুপারিশ করলে তাতে তার অংশ থাকবে।

আর আল্লাহ সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত থাকেন। ’  (সুরা : নিসা, আয়াত : ৮৫)

রাসুল (সা.) যোগ্য মানুষের জন্য সুপারিশ করেছেন এবং অন্যদের সুপারিশ করার তাগিদ দিয়েছেন। বুখারি শরিফের এক বর্ণনায় এসেছে, সাহাবি আবু মুসা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে যখন কোনো সাহায্যপ্রার্থী আসত কিংবা তাঁর কাছে কোনো প্রয়োজনের কথা বলা হতো, তিনি তখন (উপস্থিত সাহাবিদের) বলতেন, তোমরা (তার পক্ষে) সুপারিশ করো, তাহলে তোমরা পুরস্কৃত হবে। আর আল্লাহ যা চান, তাঁর নবীর জবানে সেই ফয়সালা করাবেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৪৩২)

উপরোক্ত হাদিসের শিক্ষা হলো, প্রয়োজনে ও বিপদে কেউ যখন কারো কাছে সুপারিশের জন্য আসে তখন তাকে ফিরিয়ে না দেওয়া। চাই তা গৃহীত হোক বা না হোক সুপারিশ করে যাওয়া। সুপারিশ গৃহীত না হলেও সওয়াব পাওয়া যাবে।

সুপারিশ একটি অনুরোধ ও পরামর্শ। যার কাছে সুপারিশ করা হবে তার মনঃপুত না হলে তা গ্রহণ না করার অধিকার থাকবে। তাই সুপারিশ প্রত্যাখ্যানে তার প্রতি রুষ্ট হওয়া যাবে না। বারিরা (রা.)-কে রাসুল (সা.) তাঁর পারিবারিক জীবন নিয়ে একটি পরামর্শ দিয়েছিলেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি শুধু একজন সুপারিশকারী (অর্থাৎ এটা তোমার প্রতি আমার আদেশ নয়। পরামর্শ ও অনুরোধ)। ’ তখন বারিরা (রা.) বলেন, তা-ই যদি হয়, তাহলে তার কাছে আমার কোনো প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ তাকে আবার গ্রহণ করে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ’ (আবু দাউদ, হাদিস: ২২৩৩)

বারিরা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুপারিশ গ্রহণ করেননি। এটা ছিল তাঁর অধিকার ও স্বাধীনতা। নবীজি (সা.)ও  তাঁর ওপর বিষয়টি চাপিয়ে দেননি।

অবশ্য যৌক্তিক ও যথাযোগ্য সুপারিশ গ্রহণ করে নেওয়া উচিত। কেননা সুপারিশ কোনো না কোনো সম্পর্কের ভিত্তিতেই করা হয়। প্রত্যাখ্যাত হলে সুপারিশকারী ভুক্তভোগীর কাছে লজ্জিত ও অপমানিত হন। তাই আইন মেনে সুপারিশ গ্রহণের সুযোগ থাকলে সুপারিশ প্রত্যাখ্যানের আগে সুপারিশকারীর সম্মান ও মর্যাদার কথা ভাবা উচিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষকে তাদের উপযুক্ত মর্যাদা দাও। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৪৪)

আরও পড়ুন:


আইএসকে পৃষ্ঠপোষকতার দায়ে আমেরিকাকে জবাবদিহী করতে হবে: ইরান

৭ মিনিটেই স্থগিত! পূর্ণ তিন পয়েন্ট পেতে চলেছে আর্জেন্টিনা

কয়েকশ মার্কিন নাগরিক আটকা পড়ে আছে আফগানিস্তানে

দেশের অর্ধেক ইন্টারনেট টিকটক, লাইকি আর পর্নোগ্রাফিতেই শেষ!

যার কাছে সুপারিশ করা হবে তার ব্যক্তিত্ব ও অবস্থান বিবেচনা করাও জরুরি। সুপারিশ করার আগে যার ব্যাপারে বা যে বিষয়ে সুপারিশ করা হবে তার যোগ্যতা ও দক্ষতা এবং বিষয়টির গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করা উচিত। যেনতেন বিষয়ে ও অযোগ্য কোনো ব্যক্তির ব্যাপারে সুপারিশ করে কাউকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলা উচিত নয়।

মহান আল্লাহ আমাদের কল্যাণকর সুপারিশসহ মানুষের যে কোনো প্রয়োজনে এগিয়ে আসার তাওফিক দান করুন।

news24bd.tv রিমু

এই রকম আরও টপিক