আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে, হোম ডেলিভারির মাধ্যমে মাদক বিক্রিকে জনপ্রিয় করার ভয়াবহ কৌশলে, মাদকের গড়ফাদাররা। হোম ডেলিভারির পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ীরা দিচ্ছে কাস্টমার কেয়ার সুবিধা।
অর্থাৎ ক্রেতা শুধু অনলাইন কিংবা অফলাইনে অর্ডার করে ঘরে বসে থাকবেন, বাকীটা তারাই করবে। এই পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ঘন ঘন অভিযানের কারণে এমন নিত্য নতুন কৌশল অবলম্বন করছে মাদক কারবারীরা। তবে, এই সিন্ডিকেটগুলোকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষগুলো।এভাবে ফোন দিলেই ইয়াবা নিয়ে সরাসরি ক্রেতার বাসায় চলে আসছে বিক্রেতারা। কেবল বাসায় নিয়ে আসাই নয় ক্রেতার চাহিদা মতো ইয়াবা সেবনে সব ধরণের সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত তারা।
শুধু তাই নয় বিভিন্ন সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে আইডি ও পেইজ খুলে চলে ইয়াবা ব্যবসা। যোগাযোগ করলে সহজেই জানা যায়, ইয়াবার রেট ও প্রাপ্তির লোকেশন।
ইয়াবা ব্যবসায়ীরা বলছেন রাজধানীতে মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ঘন ঘন অভিযানের কারণে এমন নিত্য নতুন কৌশল অবলম্বন করছে তারা। যার মধ্যে জনপ্রিয় হলো হোম ডেলিভারি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, মিয়ানমার থেকে অবৈধ উপায়ে প্রবেশ করা ইয়াবার মাত্র ১০ থেকে ২০ শতাংশ ধরা পড়ে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিভিন্ন অভিযানের পরিসংখ্যান দেখলেও এর সত্যতা পাওয়া যায়।
পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক বিরোধী অভিযানের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৯ সালে ৩ কোটি ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩২৮ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিলো ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৮১ হাজার ১৭ পিস আর ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত ধরা পড়ে ১ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৭৯৫ পিস ইয়াবা।
জানা যায়, ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত দেশব্যাপী ১ হাজার গডফাদারসহ খুচরা ও পাইকারী মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার মাদক ব্যবসায়ীর তালিকা করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। যাদের অনেকেই হোম ডেলিভারি পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা করছে। শিগগির এদের ধরতে সাড়াশি অভিযানে নাম্বার পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষের।
পুলিশ জানায়, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন কৌশলের ফলে সাপ্লাই বেড়ে গেছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনগত বিছু সীমাবদ্ধতার কথাও জানায় পুলিশ।
আরও পড়ুন
পিএইচডি ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রির কোনো মূল্য নেই : তালেবানঘোষিত শিক্ষামন্ত্রী
মোবাইল ফোন গিলে ফেলে হাসপাতালে ভর্তি!
নতুন ছবিতে আবারও ভক্তদের মনে ঝড় তুললেন জয়া
কেবল মাঠ পর্যায়ে অভিযানের মাধ্যমেই ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। পর্দার আাড়লের গডফাদারদের ধরতে বিচার ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা জরুরী।
অপরাধ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, ২০১৮ সালে জাতিসংঘের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ইউএনওডিসির তথ্যমতে দেশে উদ্ধার হওয়া মাদক মোট বিক্রির মাত্র ১০ শতাংশ। বিক্রি হওয়া মাদকের বাজারমূল্য প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা যার অর্ধেকই চলে যায় দেশের বাইরে।
news24bd.tv/এমি-জান্নাত