রাজধানীতে আবাসিক হোটেল ব্যবসার আড়ালে দেহব্যবসা ও নারী পাচার (ভিডিও)

Other

আবাসিক হোটেল ব্যবসার আড়ালে চাকরীপ্রার্থী অসহায় নারীদের জোর করে আটকে রেখে দেহব্যবসা করতে বাধ্য করছে মানবপাচারকারী সিন্ডিকেট। শুধু তাই নয়, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অসহায় নারীদের পার্শবর্তী দেশ ভারতেও পাঁচার করছে এ চক্র।  

এসব ঘটনার সংশ্লিষ্টতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযান ও মামলা হলেও, আইনকে যেন তোয়াক্কাই করে না প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। নিউজ টোয়েন্টিফোর বিশেষ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমনই এক ভয়ঙ্কর অপরাধের চিত্র।

 

অভাবের তাড়নায় কাজ খুঁজতে যাত্রাবাড়ি এসেছিলেন স্বামী পরিত্যক্তা শিউলি। সেখানে পরিচয় হয় পাচারকারী চক্রের এক সদস্যর সঙ্গে। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে  চক্রের  সদস্য শিউলিকে বিক্রি করে দেন হোটেল প্রভাতীতে। জোর করে আটকে রেখে কিছুদিন পর সুযোগ বুঝে শিউলিকে পাচার করে দেয়া হয় ভারতে।

ভারতে পাচারের শিকার ভুক্তভোগী (দুইটা মেয়ে আছে। স্বামী চলে গেছে। অভাবের কারণে চাকরি খুঁজি। চাকরির লোভ দেখিয়ে ...অমুক অমুক আমাদের ভারতে পাঁচার করে। আমরা ৮জন নারী সাতক্ষীরা দিয়ে রাতের আঁধারে বর্ডার পার হই। সেখান থেকে হায়দ্রাবাদে পাঠায়। খারাপ কাজ না করলে খুব অত্যাচার করতো, পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখাত। পরে এক লোকের সহযোগীতায় বর্ডার পার হয়ে চলে আসি। এখন ভয়ে আমরা পালিয়ে থাকি। এই এলাকায় আর আসি না। )

যাত্রাবাড়ির সামিউল্লাহ প্লাজার ৪ তলায় অবস্থিত প্রভাতী আবাসিক হোটেল। বাইরে থেকে খুব সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল মনে  হলেও এই হোটেলকে ঘিরে মানবপাচারকারীরা তৈরি করেছেন  ভয়ঙ্কর এক ফাঁদ। শুধু ভুক্তভোগীর অভিযোগেই নয়, বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে অনুসন্ধানে মাঠে নামে নিউজ টোয়েন্টিফোর।

ছদ্মবেশী পরিচয়ে দালালের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে নিউজ টোয়েন্টিফোরের অনুসন্ধানী দল। হোটেলে প্রবেশ করতেই  গোপন ক্যামেরার চোখে ধরা পড়ে অপেক্ষমান বহু খদ্দের ও নারীদের আনাগোনা।
 
খদ্দের বেশে এক নারীকে নিয়ে একটি রুমে প্রবেশ করে প্রতিবেদক। কিছুটা সখ্যতাও জমাতেই বেরিয়ে আসে পাচারকারী সিন্ডিকেটের ভয়ঙ্কর ফাঁদের গল্প!

এক নারী বলেন, আমি কাজের জন্য আসছিলাম। অফিসিয়াল কাজের কথা বলে নিয়ে আসছে। শিশির আছে, সাজ্জাদ আছে। আরও অনেকেই আছে যাদের নাম জানি না। আমাকে দিয়ে নোংরা কাজ করায়। আমাকে এক রুমেই আটকে রাখা হয়েছে। আমাকে বের হতে দেয় না। আমি মুক্তি চাই। আমি বের হতে চাই। এখানে কতদিন? এইতো ১০-১৫ দিন ধরে ।

নিউজ টোয়েন্টিফোরের অনুসন্ধান বলছে, যাত্রাবাড়ির শহীদ ফারুক সড়কে অবস্থিত প্রভাতী ও পপুলার নামের দুইটি  হোটেলের মালিক শিশির চৌধুরী মূলত মানবপাচারকারী চক্রের প্রধান হোতা। চলতি বছরের মে ও জুন  মাসেই মানবপাচার দমন আইনে পাচারকারী সিন্ডিকেটের ৬ জনের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ি থানায় মোট ৫টি মামলা দায়ের করে র‌্যাব।

মামলায় যুবতীতের জোর পূর্বক আটকে রেখে যৌনবৃত্তির কাজে নিয়োজিত করার অভিযোগ আনা হয়। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিভাবে অভাবগ্রস্ত নারীদের টার্গেট করছে এসব চক্র (সিআইডি) তবে এলিট ফোর্স র‌্যাবে দাবি, অভিযান চালিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কিছু চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে। চক্রের কিছু সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এত এত অভিযান কিংবা মামলার পরেও আইনের ধরাছোয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে মানব পাচারকারীরা। এই চক্রের কারণে আর কোন নারীর জীবন যেন ধংস্ব না হয়, এমন আশায় দিন গুনছেন ভুক্তভোগীররা।

আরও পড়ুন: 


স্কুলের আলমারিতে মিলল ব্যালট পেপারের মুড়ি

জামায়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিসহ ৫ নেতা রিমান্ডে

ভাসানচর থেকে পালানোর সময় দুই রোহিঙ্গা আটক

তালেবান নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ


NEWS24.TV / কেআই