মাদক কারবারির সাথে সম্পর্ক প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা: আইজিপি

মাদক কারবারির সাথে সম্পর্ক প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা: আইজিপি

অনলাইন ডেস্ক

‌‘নতুন নীতিমালায় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ করা হচ্ছে। কনস্টেবল নিয়োগ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে। আমরা পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশ এবং উন্নত অনেক দেশের নিয়োগ নীতিমালা পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ পুলিশের উপযোগী কনস্টেবল নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। এর ফলে আমরা কনস্টেবল পদে মেধা ও শারীরিক দিক থেকে অধিকতর যোগ্যতা সম্পন্ন পুলিশ সদস্য নিয়োগে সক্ষম হব।

অচিরেই পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর এবং সার্জেন্ট পদেও নতুন নীতিমালা অনুযায়ী লোক নিয়োগ করা হবে। ’

আজ মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে তিন দিনব্যাপী অপরাধ পর্যালোচনা সভার শেষ দিনে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সমাপনী বক্তৃতায় এসব কথা বলেন পুলিশের মহাপরিচালক (ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ) ড. বেনজীর আহমেদ।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের হল অব ইন্টেগ্রিটিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনায় আমরা দেশ ও জনগণের কল্যাণে দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

পুলিশের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, পুলিশের কোনো সদস্যের মাদকের সাথে কোনো সংশ্লেষ থাকতে পারবে না। কারো যদি মাদকের সাথে সংশ্লেষ থাকে তাকে বেরিয়ে আসতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্যের মাদক গ্রহণ, মাদক কারবারি বা মাদক কারবারির সাথে সম্পর্ক রয়েছে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দৃঢ় প্রত্যয় পুনরায় ব্যক্ত করেন আইজিপি।

আরও পড়ুন: 


মোংলা বন্দরে চাল ও সার বোঝাই জাহাজের পণ্য খালাস বন্ধ

দুই শিশুকে ধর্ষণের দায়ে ৬০ বছর কারাদণ্ড

ঘাস সংগ্রহ করতে নাগর নদী পার হচ্ছিল মৃত দুই নারী

নীলফামারীতে বিমান কোস্টার সার্ভিস উদ্বোধন


তিনি বলেন, একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যাতে পুলিশ বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়, দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, দেশের জনগণের ক্ষতি হয়।

বাংলাদেশ পুলিশকে একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, বাহিনীর শৃঙ্খলা এবং কল্যাণ এক বিষয় নয়। শৃঙ্খলাকে কল্যাণের সাথে মিলিয়ে ফেলা যাবে না। বাহিনীর শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে কোনো ধরনের আপোষ করা যাবে না। কোনো পুলিশ সদস্য শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করতেও আমরা যথেষ্ট সচেষ্ট রয়েছি।

তিনি বলেন, জুনিয়রদের কাজকর্ম তদারক করতে হবে। তাদেরকে পুলিশ বাহিনীর একজন যোগ্য সদস্য হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব সিনিয়র সহকর্মীদের পালন করতে হবে।

জনগণের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা নিয়ে যাওয়ার একটি কার্যকর পদ্ধতি ‘বিট পুলিশিং’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সামাজিক অনেক অপরাধ প্রতিরোধ করা যায়। বিট পুলিশিংয়ের কারণে বর্তমানে মামলা অর্ধেকে নেমে এসেছে। তিনি বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে চুরি, ডাকাতিসহ অন্যান্য অপরাধ দমনে তৎপর হওয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

উদ্ভাবনী পুলিশিংয়ের ওপর জোর দিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, পুলিশিংয়ের ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী কৌশল ব্যবহার করতে হবে। পুলিশে বেস্ট প্র্যাকটিসের চর্চা বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা যেখানেই কাজ করি না কেন, আমাদেরকে পদচিহ্ন রেখে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যাতে মানুষ আমাদেরকে স্মরণ করে, মনে রাখে।

তিনি সাধারণ মানুষের প্রতি আচরণ বদলানোর আহবান জানিয়ে বলেন, মানুষের প্রতি অমানবিক আচরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এজন্য প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো। আর এটা এক্ষুণি করা যায়। এতে সময় এবং আর্থিক বিনিয়োগ কোনোটারই প্রয়োজন হয় না।

মামলা তদন্ত পুলিশের প্রধান দায়িত্ব উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, মামলা তদন্তের মান আরও বাড়াতে হবে। তদন্তের প্রতি অত্যন্ত মনোযোগী হতে এবং তদারকি বাড়াতে তিনি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

আইজিপি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া নিয়মিত মনিটর করতে হবে, যাতে কোনো সাধারণ নাগরিক সাইবার ক্রাইমের শিকার না হন।  

তিনি পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারের ও পুলিশ বাহিনীর অনুশাসন মেনে চলার নির্দেশ দেন।

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ও বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রজেক্টে অনেক বিদেশি নাগরিক কাজ করছেন। তাদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আগামীতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, শুধু চাকরি করলে হবে না। চাকরিতে প্রাইড নিয়ে আসতে হবে। এজন্য মানসিকতা ও মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন আনতে হবে।

তিনি বলেন, চাকরির প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে, তাহলেই আমরা এগিয়ে যাব।

তিনি সংগঠনকে বটবৃক্ষের সাথে তুলনা করে বলেন, সংগঠন যত বড় হবে, তত এর শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে। দেশ ও দেশের জনগণ উন্নত সেবা পাবে। তিনি দেশের জন্য, দেশের সাধারণ জনগণের জন্য কাজ করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান।

news24bd.tv তৌহিদ