দেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোলে দীর্ঘদিন ধরে পণ্যাগারের অভাব দেখা দিয়েছে। দিনদিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি পণ্যাগার। তাই জায়গার অভাবে খোলা আকাশের নিচেই পড়ে আছে মূল্যবান গাড়িসহ কোটি কোটি টাকার আমদানি পণ্য। এতে রোদ-বৃষ্টিতে আমদানিকৃত মালামালসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ভারত থেকে প্রতিদিন অন্তত ৬শ ট্রাক পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। এর মধ্যে অন্তত ৫শ ট্রাক পণ্যই আমদানিকৃত। কোটি কোটি টাকার এসব মালামাল রাখার জন্য বন্দরে ছিল ৪২টি পণ্যাগার বা শেড। এর মধ্যে দুই বছর আগে ৮টি পণ্যাগার ভেঙে ফেলা হয়।
বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী জানান, বেনাপোল বন্দরের শেড সমস্যা অনেক পুরাতন। সে কারণে এ বন্দরের শেড নিমার্ণের দাবি আমাদের দীর্ঘ দিনের। শেডের অভাবে বন্দরে যে পরিমাণ মালামাল আমদানি হচ্ছে, সেই পরিমাণ পণ্য আমরা রাখতে পারছি না।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, পোর্ট গোডাউন ভাড়া নিচ্ছে। তার ক্ষতিপূরণ নিচ্ছে। কিন্তু রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নিচে আমাদের কোটি কোটি টাকার পণ্য পড়ে রয়েছে। এগুলো পানিতে ভিজে, রোদে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে। অথচ এসব দেখার কেউ নেই।
অবশ্য পণ্যাগার সঙ্কটের কথা স্বীকার করেছেন বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. বেলাল হোসাইন চৌধুরী। তিনি জানান, এ সমস্যা নিয়ে তারা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে কয়েক দফা আলোচনা করেছেন। ইতোমধ্যে দুটি শেড নির্মাণের কাজ চলছে। অন্যদিকে, শিগগিরই ২৪ দশমিক ৯৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। কাজটি সম্পন্ন হলে বাড়তি শেড নির্মাণ করা হবে। তাহলেই সমস্যার সমাধান হবে।
প্রকৃতপক্ষে দেশের প্রধান স্থলবন্দর যেমন হওয়ার কথা ছিল, তার চেয়ে সক্ষমতা কম রয়েছে। আন্তর্জাতিক এই বন্দরের আরো সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রযোজন বলে জানান বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম।
আর যত্রযত্র মূল্যবান গাড়িসহ কোটি কোটি টাকার মালামাল পড়ে থাকায় সেগুলোর নিরাপত্তা প্রদানে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানালেন বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান।
বেনাপোল বন্দরের পণ্যাগার সমস্যা সমাধানে সরকার অতিসত্বর কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে-এমনটাই প্রত্যাশা বন্দর ব্যবহারকারীদের।
রিপন/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর