সিভিল সোসাইটি বলতে এখন আর কিছুই নেই : সুলতানা কামাল

সিভিল সোসাইটি বলতে এখন আর কিছুই নেই : সুলতানা কামাল

অনলাইন ডেস্ক

সিভিল সোসাইটি বলতে এখন আর কিছুই নেই; কারণ কথা বলতে গেলেই বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সুলতানা কামাল।

আজ বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র উদ্যেগে আয়োজিত “পরিবেশ ও ডেঙ্গু: স্বাস্থ্যগত দৃষ্টিকোণ”শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে  তিনি একথ বলেন।

সুলতানা কামাল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জনসচেতনতার মধ্যে সমম্বয় না থাকলে ডেঙ্গু থেকে বাঁচা দুঃসাধ্য। দেশের পরিবেশ ঠিক না থাকার কারণে আজ বিভিন্ন রোগ-বালাই বেড়েই চলেছে।

গর্ভনেন্স না থাকলে কোনো আলোচনা ফলপ্রসূ হয় না। দায়িত্ব ও অধিকারবোধের মধ্যে সমন্বয় আজ জরুরি। এটির অভাব দেখা দিলে সমাজে এ ধরনের রোগ বালাই থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না।  

তিনি অভিযোগ করে বলেন, পরিবেশবাদীদের কথা সরকারের নিকট নিস্ফল লম্ফজম্ফ মনে হয়; যা অত্যন্ত দূঃখজনক।

 

তিনি বলেন, যারা এই ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর্ম প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত তাদেরকে নিয়ে আমাদেরকে কাজ করতে হবে। ওয়ার্ড কমিশনারদের নিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আলোচনা করা জরুরি। একইসাথে মেয়রদের সাথে আলোচনা করতে হবে; কারণ মূল দায়িত্ব নীতি-নির্ধারকদের, সে দায়িত্ব তারা কখনও এড়িয়ে যেতে পারেন না। সামগ্রিক আঙ্গিকে কাজ না করলে এর সুফল পাওয়া দূষ্কর বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আলোচনা সভায় বাপা পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব, বিধান চন্দ্র পালের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও রোগ নিয়ন্ত্রণের সাবেক পরিচালক এবং বাপার পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক আবু মোহাম্মাদ জাকির হোসেন।

ড. এ. এম. জাকির হোসেন তার মূল বক্তব্যে বলেন, ১০০ জনের মধ্যে ভাইরাস গেলে তাদের ৫৪ জনের মধ্যে ডেঙ্গুর উপসর্গ প্রকাশ পাবে না। ডেঙ্গু হলে উচ্চমাত্রায় জ্বর হবে, চোখের পিছনে, মাথায় ও হাড়ের সন্ধিগুলোতে প্রচণ্ড ব্যাথার সৃষ্টি হবে। গ্লান্ডগুলো ফুলে যেতে পারে।  

দ্বিতীয়বার অন্য একটি সিরোটাইপ দিয়ে ডেঙ্গু হলে তার ফলে হেমোরেজিক জ্বর বা শক সিন্ড্রোম হতে পারে এবং এর ফলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অর্গানগুলো থেকে প্লাজমা বের হয়ে যায় (অনূর্ধ্ব এক বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে তা প্রথম বারেই হতে পারে)।  

দ্বিতীয়বার অন্য টাইপ দিয়ে ডেঙ্গু হলেই এরকম ভয়ানক অবস্থার সৃষ্টি হয়। মানুষের শরীরের স্বাভাবিক রোগ-প্রতিরোধ শক্তি, যেমন, এন্টিবডি সংক্রমণকারী ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে না। এন্টিবডি যেখানে শরীরের উপকার করে এক্ষেত্রে বরং বিরূপ প্রভাব ফেলে।  

ড. এ. এম. জাকির বলেন,  গর্ভবতী মহিলার ডেঙ্গু হলে এন্টিবডি তৈরি হয় যা শিশুদের বিরূপ উপর প্রভাব ফেলে। ডেঙ্গুতে রক্তের প্লেটিলেট কণিকা অনেক কমে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেঙ্গুকে দুইভাগে ভাগ করেছে। একটি সাধারণ এবং অন্যটি মারাত্নক ডেঙ্গু। মারাত্নক ডেঙ্গু হলে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে যাওয়াসহ আরো অনেক জটিল উপসর্গ দেখা দেয়। সাধারণত ডেঙ্গু হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ দেওয়া হয়; অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ দেওয়া যাবে না; এর ফলে রক্তনালী থেকে আরো বেশি তরল বের হয়ে যাবে।   

তিনি বলেন, যে পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকে সেখানে লার্ভা পাওয়া যায়। লার্ভাগুলো ফড়িং ও ট্রাইটিনোরিংকাস মশার লার্ভা ও কিছু কিছু মাছ খেয়ে ফেলে। পানিতে ডিম পাড়ার পরে যদি পানি শুকিয়ে যায় তার পরেও এই ডিমগুলো মাসের পর মাস বেঁচে থাকতে সক্ষম। তাপামাত্রা ও বাতাসে আর্দ্রতার কারণে ডেঙ্গু বৃদ্ধি পায় বলেও তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।  

আরও পড়ুন:

অবশেষে ব্রিটেনের লাল তালিকা থেকে বাদ পড়ছে বাংলাদেশ

বেড়াতে গিয়ে অতিরিক্ত মদ পানে দুই ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যু

আর কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না, জানালেন কৃষিমন্ত্রী

ইভ্যালির সঙ্গে আর সম্পর্ক নেই তাহসানের


 

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- বাপার কোষাধ্যক্ষ মহিদুল হক খান, বিআইপি’র সাবেক সভাপতি, অধ্যাপক গোলাম রহমান, পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. আফতাব উদ্দিন, বাপা নির্বাহী সদস্য এম এস সিদ্দিকী, ফরিদ হাসান আহমেদ প্রমুখ।

news24bd.tv/আলী