মাদ্রাসার শিশু ছাত্রকে খুটির সঙ্গে বেধে নির্যাতনের অভিযোগ

মাদ্রাসার শিশু ছাত্রকে খুটির সঙ্গে বেধে নির্যাতনের অভিযোগ

Other

চোর সন্দেহে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ৯ বছরের মাদ্রাসার এক শিশু ছাত্রকে সিমেন্টের খুটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে।  

নির্যাতনের শিকার শিশু সিরাজগঞ্জের তারাশ থানার মাঝ দক্ষিণা এলাকার সুবহান মিয়ার ছেলে নাহিদ মিয়া (৯)। শিশুটি ওই এলাকার স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ২য় শ্রেনীতে পড়ে।

এলাকাবাসী, পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৫/৬ বছর আগে সুবহান মিয়া ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে জীবিকার খোঁজে সিরাজগঞ্জ থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর আসে।  

পরে উপজেলার ডাইনকিনি এলাকার শহীদের বাসা ভাড়া নিয়ে সুবহান স্থানীয় ওয়ালটন কারখানায় এবং তার স্ত্রী স্থানীয় পোশাক কারখানায় কাজ করে আসছেন। কিন্তু তাদের ছোট ছেলে নাহিদ গ্রামের বাড়ি তারাশ থানা এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ২য় শ্রেণীতে পড়ে।  

গত ৫/৬ মাস আগে করোনাকালিন সময়ে নাহিদ তার মা-বাবার কাছে ডাইনকিনি এলাকায় বেড়াতে আসে।

প্রতিদিনের মতো রোববার সকালে বাবা-মা তাদের কর্মস্থলে যান। এ সুযোগে ওই শিশু সকাল ৭টার দিকে পাশের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় ঘুরতে যায়।  

এক পর্যায় ওই শিশু পাশের রঞ্জিত মেডিকেল হল নামে একটি ঔষধের দোকানের ভিতরে ঢুকে। তখন ঔষধের দোকান মালিক মিছির কুমার বাইরে পানি আনতে যান। এ সময় পাশের ভাই ভাই হার্ডওয়ার দোকানের মালিক আনোয়ার হোসেন চোর সন্দেহে ওই শিশুকে আটক করে।  

পরে আনোয়ার ও মিছির কুমার মিলে তাকে সিমেন্টের একটি খুটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশের এসআই সুকান্ত বিশ্বাস সেখানে যান এবং ওই শিশুকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তা শিশুটির মা নাছিমা বেগমকে খবর দিয়ে তার কাছে তাকে হস্তান্তর করে। কিন্তু চোর সন্দেহে খুটির সঙ্গে বেঁধে শিশুকে নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে থানা পুলিশ ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।

শিশুটির মা নাছিমা বেগম মুঠোফোনে বলেন, খবর পেয়ে থানায় গেলে পুলিশ আমাকে বলে ছেলেকে শাসন করবেন। আর কোন দিন এমন কিছু না করে। পরে ছেলেকে আমার কাছে দিয়ে দিলে আমরা বাসায় চলে আসি। কিন্তু যারা তাকে বেঁধে রেখেছিল পুলিশ তাদের কিছু বলেনি।

নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ভাই ভাই হার্ডওয়ার দোকানের মালিক আনোয়ার হোসেন জানান, আমি আপনার কাছে জবাব দিতে বাধ্য না। তবে অপর অভিযুক্ত রঞ্জিত মেডিকেল হলের মালিক মিছির কুমার জানান, আমি পানি আনতে গেলে ওই শিশু আমার ক্যাশে হাত দেয়। কিন্তু টাকা চুরি করতে পারেনি। বিষয়টি টের পেয়ে পাশের দোকানদার তাকে ধরলে সবাই তাকে বেধেছিল। তখন তাকে একটি চর দিলেও তাকে আর মারধর করা হয়নি।

কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত বিশ্বাস জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে বাধা পাইনি। তাকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে তাকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। তার মাকে ওই শিশুকে নির্যাতনের কথা জানালেও তিনি অভিযোগ করতে রাজি হননি। পরে তার মায়ের কাছে শিশুকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

NEWS24.TV / কামরুল