ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তরিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি এলাকার একাধিক মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই টাকা লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁস ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আর অর্থ দিয়েও আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর না পাওয়ায় ও জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করায় হুমকী প্রদান করা হচ্ছে এই মর্মে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী নারী আলিয়ারা খাতুন। হরিপুর উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বন্টন নিয়ে অর্থ লেনদেনের যেমন অভিযোগ রয়েছে তেমনি ঘরগুলো নিম্নমানের তৈরি করায় ফাঁটল ধরেছে এমন সংবাদও প্রকাশ হয়েছে।
জানা যায়, অভিযুক্ত তরিকুল ইসলাম হরিপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের তারবাগান গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে এবং হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিমের ব্যক্তিগত কর্মচারী।
হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিমের ব্যক্তিগত কর্মচারী হওয়ার সুবাদে উপজেলার ৫নং হরিপুর ইউনিয়নের জীবনপুর (কুশগাঁও) গ্রামের আলিয়ারা খাতুন নামের স্বামী পরিত্যক্তা নারীর কাছ থেকে ৬০ হাজার ও একই ইউনিয়নের বজ্রমতুলি গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে রিনা আক্তারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকাসহ একাধিক মানুষের কাছ থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সদর ইউনিয়নের বজ্রমতুলি গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে রিনা আক্তারের কাছ থেকে গত ৭ মাস আগে ৪০ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়ে ৩ মিনিট ১৬ সেকেন্ড কথোপকথনের একটি ফোনালাপ ফাঁস হলে তার টাকা নেওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
অপরদিকে স্বামী পরিত্যক্তা অসহায় মহিলা আলিয়ারা খাতুন (২৫)।
আলিয়ারা খাতুন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানান, ভূমিহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়া হবে জানার পর আলিয়ারা তদবির শুরু করেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের তদারককারী তরিকুল ও উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মচারী মানিকের কথামত সে নিজের গাভী বিক্রি করে ইউএনওর শ্যালক তানভীন হাসানকে সরাসরি ৬০ হাজার টাকা প্রদান করে।
আরও পড়ুন
ইভ্যালির রাসেল দম্পতিকে আদালতে তোলা হবে আজ
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশেষ সম্মাননা
নোয়াখালীতে ৯ ইউনিয়নে আ.লীগ প্রার্থী ও ৪টিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর জয়
সৌদিতে বয়লার বিস্ফোরণে বাংলাদেশি যুবক নিহত
পরে তারা আলিয়ারাকে তারবাগান এলাকায় অবস্থিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২ নং ঘরটির দখল বুঝিয়ে দেয়। সেই ঘরে তিনি প্রায় চার মাস যাবৎ শিশু সন্তানসহ বসবাস করছিলেন। পরবর্তীতে তরিকুল ও মানিক আলিয়ারার কাছে পুনরায় ২০ (বিশ) হাজার টাকা দাবি করে এবং টাকা না দিলে ঘর থেকে বের করে দিবে বলে হুমকি দেয়। টাকা দিতে না পারায় তারা আলিয়ারাকে গত ০১ সেপ্টেম্বর ঘর থেকে বের করে দেয়।
এসব বিষয়ে আলিয়ারা ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবর গত ৫ তারিখে একটি লিখিত অভিযোগ করে। সেটা জানার পর ১৩ তারিখ দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল করিম তাকে কৌশলে কার্যালয়ে ডাকে। সেখানে ইউএনও আলিয়ারাকে পুলিশ ও তার কার্যালয়ের কর্মচারী দ্বারা মানসিক ও শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে এবং হুমিকি দেয় যে, তাদের মত করে জবানবন্দি না দিলে বড় ধরনের ক্ষতি করবে।
অভিযুক্ত তরিকুল ইসলামের কাছে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে তার ফোনালাপের রেকর্ড এর কথা বললে তিনি কৌশল অবলম্বন করে বলেন, আমি রিনা আক্তারের কাছ থেকে ধার হিসেবে ২০ হাজার টাকা নিয়েছি।
এ বিষয়ে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিমের সাথে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
news24bd.tv এসএম