মাল্টা চাষে মডেলে পরিণত হয়েছেন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের এক আদর্শ কৃষক। পানের বরজ ভেঙ্গে সেই জায়গায় ৫ বছর আগে করা মাল্টা বাগান থেকে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকায় আয় করছেন তিনি। তবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় বিদেশি মাল্টার চেয়ে অর্ধেক মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে দেশে উৎপাদিত এই মাল্টা।
মাল্টা সংরক্ষণের জন্য একটি কৃষি সংরক্ষণাগারের দাবি করেছেন ভূক্তভোগীরা।
এদিকে শ্যামলের বাগানে উদ্বুদ্ধ হয়ে মাল্টা বাগান করেছেন আশপাশের অনেক বেকার যুবক। দেশিয় মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগীতা দেয়ার কথা বলেছেন কৃষি কর্মকর্তারা।৫ বছর আগেও প্রায় ২৫ শতাংশ জমিতে পানের বরজ ছিলো শ্যামল ব্যানার্জীর। খরচ বাদ দিয়ে বছরে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা আয় হতো তার।
এবার ফলন হয়েছে আরও বেশি। ইতিমধ্যে প্রায় অর্ধেক ফল বিক্রি করেছেন স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে এবং খুচরা বিক্রেতাদের কাছে। আর কিছু দিনের মধ্যে সব ফল বাজারজাত করতে হবে তাকে। নইলে গাছের ফল শুকিয়ে যাবে গাছেই। এ কারণে বাজারে থাকা বিদেশি মাল্টার অর্ধেকেরও কম দামে ১২০ টাকা কেজি দরে ফরমালিন বিহীন মাল্টা বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে। সংরক্ষণাগার থাকলে সারা বছর এই মাল্টা বাজারজাত করা সম্ভব বলে মনে করেন উদ্যোক্তা শ্যামল।
মাল্টা বাগানে সারা বছর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন কয়েকজন স্থানীয় শ্রমিক। তারা বলছেন, মাল্টা বাগানে কাজ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি। এছাড়াও যে সময়গুলোতে কাজ থাকতো না বসে থাকতে হতো সেই সময়ে কাজ করে স্বাবলম্বী হচ্ছি আমরা।
আরও পড়ুন
গাড়ি সাইড দেয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধর করলেন এমপি রিমন!
দল হারলেও মন জিতলেন ‘সুন্দরী সমর্থক’, ছবি ভাইরাল
হালখাতার কার্ডে নামের আগে আলহাজ্ব না লেখায় ৫ জনকে কুপিয়ে জখম
সূরা বাকারা: আয়াত ৮৫-৮৮, শুধু পাপ নয়, পাপীকে সহযোগিতাও নিষিদ্ধ
মাল্টা বিক্রেতারা বলছেন, বিদেশি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ টাকা কেজি দরে। অথচ ফরমালিন বিহীন দেশি মাল্টা সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় বিক্রি হচ্ছে পানির দরে। সংরক্ষণাগার থাকলে সারা বছর এই মাল্টা বাজারে পাওয়া যেত। এতে অধিক মূল্য পেতেন কৃষকরা।
এদিকে শ্যামলের মাল্টা বাগান দেখে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে অনেক বেকার যুবক এখন মাল্টা চাষে ঝুঁকেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মাল্টা ছাড়াও আমের বাগান এবং ডেইরী ফার্ম রয়েছে শ্যামলের।
বরিশাল অঞ্চলে মাল্টা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত্ব। ভিটামিন- সি এর ঘাটতি পূরণে প্রত্যেক বাড়ির পতিত জমিতে কমপক্ষে একটি-দুটি করে বারি-১ ও ২ জাতের মাল্টা চারা রোপনের আহ্বান জানিয়েছেন এই কৃষি কর্মকর্তা। বরিশালে একটি কৃষি সংরক্ষণাগারের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এবার বরিশাল জেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। আগামীতে ১ শ’ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ সম্প্রসারন করার পরিকল্পনা করেছে কৃষি বিভাগ।
news24bd.tv এসএম