সকল নাগরিকের জন্য 'অবসরভাতা' চালু করা হোক

সকল নাগরিকের জন্য 'অবসরভাতা' চালু করা হোক

Other

আমরা বেশিরভাগই পরিশ্রমী 'বেসরকারি' মানুষ। সারাজীবন এলেবেলে ধরনের চাকুরি করি। না আছে যোগ্য সম্মান, না আছে যোগ্য পারিশ্রমিক। বিক্রয় প্রতিনিধি, বীমা এজেন্ট, বেসরকারি শিক্ষক, সাংবাদিক, গার্মেন্টেসর এক্সিকিউটিভ, একাউন্ট অফিসার, স্টোর ইনচার্জ- এরকম এক দীর্ঘ তালিকাতেই আমাদের অধিকাংশ মানুষের বাস।

সারাজীবন হাড়ভাঙা খাটুনি করে প্রতি মাস শেষে যে বেতন পাই সেটি বাড়িভাড়াতেই চলে যায়। সঞ্চয়ের কোনো সুযোগ নেই।
তারপরও যদি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া গ্রামের বাড়ির দুই শতক জায়গা বিক্রি করে কিংবা আধপেটা খেয়ে লাখ দুয়েক টাকা জমাতে পারি, সেই টাকা বিনিয়োগের কোনো সুযোগ নেই।

জমি কিনতে যাবেন তো কিস্তির পর কিস্তি দিয়ে যাবেন, তারপর একদিন শুনবেন সেই কোম্পানি হাওয়া হয়ে গেছে।

নানা ধরনের হায় হায় কোম্পানির ফাঁদে হারাবেন সর্বস্ব।

আমাদের টাকা তাই খেয়ে যায় শেয়ার মার্কেটের ফড়িয়ারা, এহসান গ্রুপ-যুবক-ডেস্টিনি-ইভ্যালির ধান্দাবাজরা।

যখন বুড়ো হয়ে যাব, তখন আমরা কীভাবে চলব? আমাদের চাকুরিরই নিশ্চয়তা নেই, পেনশনের তো বালাই-ই নেই। আর সরকারি ছোট চাকুরিও যারা করেন, তাঁরাও এককালীন যে টাকাটা পান সেই টাকাটা কোথায় খাটাবেন?

একটা মোটামুটি ব্যবস্থা ছিল সঞ্চয়পত্র। সারাজীবনে কয়েক লাখ টাকা যোগাড় করতে পারলে সেই টাকায় কেনা সঞ্চয়পত্রে কয়েক হাজার টাকা পেলে কষ্টেক্লিস্টে অন্তত একটা মানবিক সম্মান রেখে জীবনপাত করতে পারতেন আমাদের বুড়ো মানুষগুলো।

কিন্তু সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও কমিয়ে আনা হলো। দেশে টাকা রাখার জায়গা নেই, তাই সাধারন এলেবেলে মানুষের টাকা এখন আর লাগছে না কারো। তাছাড়া এই হারে ইন্টারেস্ট দিয়ে টাকা রাখাটাও এখন অর্থনৈতিক দিক থেকে যৌক্তিক না।

আমি তাই জোর দাবি জানাই যে সকল নাগরিকের জন্য 'অবসরভাতা' চালু করা হোক। কর্মক্ষম প্রতিটি মানুষ প্রতি মাসে তাঁর ইচ্ছানুযায়ী একটি অংশ টাকা এই সরকারি স্কিমে জমা রাখবেন। বিনিময়ে বয়স ৬০ বছর পার হলে, তিনি বাকি জীবন সরকার থেকে একটি মাসিক পেনশন পাবেন। পেনশনের পরিমান এমন হবে যাতে তিনি বাকি জীবন একটি সম্মানজনক অবস্থায় জীবনযাপন করতে পারেন।
রও পড়ুন:

জন্মদিনে সৃজিতের কাছে কী চাইলেন মিথিলা?

বায়ু দূষণের তালিকায় বাংলাদেশ প্রথম, ঢাকা তৃতীয়

৪৫ মিনিট পর হাসপাতালে অলৌকিকভাবে বেঁচে উঠলেন নারী!

গাড়ি সাইড দেয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধর করলেন এমপি রিমন!


এটি কোনো আহামরি বা আচানক ব্যবস্থা নয়। বিদেশে এরকম সুযোগ আছে সবার জন্য। এজন্যই ওসব দেশে রিটায়ারমেন্টের পরে বুড়োবুড়িরা একটি স্বচ্ছল জীবন যাপন করতে পারেন। ঘুরতে পারেন, বেড়াতে পারেন, রোগে ভুগলেও সাহস হারান না। মাথার উপর একটি ছাদও থাকে।

আমাদের দেশে এই ব্যবস্থা সরকারের তরফ থেকে চালু করতে হবে। সারাজীবন টেনশনের জীবন যাপন করে এদেশের অধিকাংশ মানুষ। অন্তত মরার আগে কয়েটা দিন দুশ্চিন্তাহীন কাটানোর প্রত্যাশা করা খুব বেশি কিছু না।

(মত-ভিন্নমত বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

news24bd.tv/ নকিব