কানাডায় বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে আগ্রহ আছে, প্রয়োজন মানসম্মত ছবি

কানাডায় বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে আগ্রহ আছে, প্রয়োজন মানসম্মত ছবি

Other

কানাডার মূলধারায় বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নিয়ে তুমুল আগ্রহ আছে। সেই আগ্রহকে কাজে লাগাতে মানসম্পন্ন ভালো ছবির যোগান বাড়াতে হবে। কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং চলচ্চিত্রসেবীরা এই মত দিয়ে বলেছেন, টরন্টো ফিল্ম ফোরামের ব্যানারে তাঁরা মূলধারা এবং বিভিন্ন কমিউনিটিতে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রকে জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা করছেন।

কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুনদেশ’ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘ শওগাত আলী সাগর লাইভে’র আলোচনায় তারা এই মত প্রকাশ করেন।

বক্তারা বাংলা চলচ্চিত্রের বর্তমান দূরাবস্থার জন্য সহায়ক নীতিমালার অভাব এবং বিশ্বপরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের গুণগত উৎকর্ষতার দিকে মনোযোগ না দেয়াকে দায়ী করেন। তারা বলেন, যে কোনো তরুণ এখন চাইলেই বিশ্বের যে কোনো দেশের ভালো সিনেমা দেখতে পারে। এই বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে কাহিনী এবং চলচ্চিত্র নির্মাণে গুনগত মানের দিকে মনোযোগি না হলে সিনেমাকে মানুষের কাছে ফিরিয়ে আনা যাবে না।

স্থানীয় সময় সোমবার রাতে ‘টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এবং বাংলা চলচ্চিত্র’ শীর্ষক এই আলোচনায় অংশ নেন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সভাপতি, চলচ্চিত্র নির্মাতা এনায়েত করীম বাবুল, বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের সাবেক সভাপতি, চলচ্চিত্র নির্মাতা আমিনুল ইসলাম খোকন এবং টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২১ এর ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা ফায়েজ নুর ময়না।

প্রসঙ্গত, টরন্টোয় বসবাসরত বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সংগঠন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের উদ্যোগে ‘টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফেস্টিভ্যাল ২০২১’ চলছে। ছয় দিনের এই উৎসবে ১১০টি দেশের ৩০০টি বিভিন্ন ধরনের চলচ্চিত্র দেখানো হচ্ছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতা এনায়েত করীম বাবুল বলেন, কানাডা বহু সংস্কৃতির দেশ। এখানে নানা দেশের নানা ভাষার মানুষ বসবাস করেন। তাঁরা নিজেদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে চর্চায় রেখেই মূলধারার সংস্কৃতির সাথে যুক্ত হতে চায়। তিনি বলেন, ভালো ছবি নিজেরা দেখবো, অন্যকে দেখাবো এবং ভালো ছবির নির্মাতাদের সহযোগিতা দেবো- এই মূলনীতি নিয়েই টরন্টো ফিল্ম ফোরামের যাত্রা শুরু হয়েছিলো। এখন তারা ভালো বাংলা চলচ্চিত্রকে বহু সংস্কৃতির দর্শকদের সামনে তুলে ধরার কাজ করছেন।   

চলচ্চিত্র নির্মাতা আমিনুল ইসলাম খোকন বলেন, তাদের মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এ বছর ৭১ জন কানাডীয়ান নির্মাতা তাদের ছবি নিয়ে অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং চলচ্চিত্র চর্চায় প্রতি কানাডীয়ান নির্মাতাদের আগ্রহ বাড়ছে বলেই এতো বিপুল সংখ্যক নির্মাতা বাংলাদেশিদের একটি আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন।

আরও পড়ুন


সংশপ্তকের জন্য জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

কুষ্টিয়ার খোকসায় দুই শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত

মুফতি কাজী ইব্রাহীমকে আটক করেছে ডিবি

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে সাকিব আল হাসানের আবেগঘন স্ট্যাটাস


আমিনুল ইসলাম খোকন জানান, প্রবাসে নতুন প্রজন্মের সামনে বাংলা চলচ্চিত্রকে তুলে ধরতে ফিল্ম ফোরামে একটি কোর্স শুরুর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এই কোর্সের মাধ্যমে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের বিভিন্ন বিষয় তাদের সামনে তুলে ধরা হবে। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের চিন্তাটা সম্পূর্ণ ভিন্ন রকম। তারা সামনের দিকে তাকাতে চায়। পুরো বিশ্বের তথ্য হাতের মুঠোয়, সেখানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের তথ্যটাও ঢুকিয়ে দিতে হবে।

ফয়েজ নুর ময়না তার আলোচনায় বলেন, বাংলাদেশের, বাংলা ভাষায় ভালো চলচ্চিত্র হয় – সেটি আমরা কানাডীয়ানদের জাাননোর চেষ্টা করছি। আমাদের কাজ হচ্ছে চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং দর্শকের সাথে যোগসূত্র স্থাপন করে দেয়া। তিনি জানান, টরন্টো ফিল্ম ফোরাম কানাডার বিভিন্ন এথনিক গ্রুপের কাছে বাংলাদেশির চলচ্চিত্র তুলে ধরার পরিকল্পনাও নিয়েছে।  

আলোচনায় অংশ নিয়ে ‘নতুনদেশ’ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বলেন, নেটফ্লিক্স এর মতো আন্তর্জাতিক ওয়েব প্লাটফরমগুলোয় বাংলাদেশি এবং বাংলা ভাষার কনটেন্ট এর তেমন উপস্থিতি দেখা যায় না। নেটফ্লিক্স টরন্টোয় নিজস্ব অফিস স্থাপন করছে। তারা এথনিক কনটেন্টের দিকে মনোযোগি হবে। তিনি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রসেবীদের সেদিকে মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বর্হিবিশ্বে বাংলা ভাষার এবং বাংলাদেশ বিষয়ক বিষয়বস্তুর চলচ্চিত্রের উপস্থিতি বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

news24bd.tv এসএম