বিএনপির আন্দোলনের হাতিয়ারে মরিচা ধরে গেছে: ওবায়দুল কাদের

বিএনপির আন্দোলনের হাতিয়ারে মরিচা ধরে গেছে: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির আন্দোলনের হাতিয়ারে মরিচা ধরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপির কথিত জোয়ার এখন ভাটায় পরিণত হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।  

আজ শনিবার (২ অক্টোবর) সকালে মন্ত্রী তাঁর বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন।  

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য উপস্থাপন করেন আর মাঝে মাঝে তাঁর বাকচাতুর্য কল্পনাকেও হার মানায় বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।

বিএনপির জনসমর্থনের জোয়ারে নাকি সরকারের হৃদকম্প শুরু হয়েছে, বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যেের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এসব সৃজনশীল কথামালার চাতুরীতে ফখরুল ইসলাম আলমগীর আত্মতৃপ্তি বোধ করতে পারেন। কর্মীদের রোষানল থেকে নিজেদের সুরক্ষার জন্য কল্পনার ফানুস উড়াতে পারেন। কিন্তু বাস্তবের সাথে তাদের বক্তব্যে বিপরীত তা দেশের মানুষ ঠিকই জানেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে ভরাডুবির আশংকা বিএনপিকে আগেই পেয়ে বসেছে।

তাই তাদেরই হৃদয়ে হৃদকম্পন শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ ভয়ে কাঁপে না, চ্যালেঞ্জ আর লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়াই বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি। আর সেই রাজনীতিই আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করে যাচ্ছে।  

এদেশের রাজপথ জানে আওয়ামী লীগের আন্দোলন - সংগ্রামের বীরত্বগাথা আর সমৃদ্ধ ইতিহাস উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণ জানে বিএনপির হঠকারিতা, গণতন্ত্র হত্যা, ষড়যন্ত্র, লুটপাট আর সুবিধাবাদী রাজনীতির কথা।  

বিএনপির জনসমর্থনের জোয়ারতো গত তের বছরে কোন নির্বাচনে দেখা যায়নি দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা ভরাডুবির ভয়ে এখন নির্বাচন বিমুখ, তাই রাজপথ আর ভোটের ময়দান ছেড়ে গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনীতিকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে।  

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা সরকার আর আওয়ামী লীগকে হুমকি ধামকি দিয়ে লাভ নেই। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের যে অপচেষ্টা করছেন তা আমাদের অজানা নেই। বিএনপির সবকিছুতেই শর্ত এবং মামার বাড়ির আবদার। নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার গঠন করলে নাকি তারা নির্বাচনে অংশ নিবেন, আসলে বিএনপি ভালো করেই জানে তত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি একটি মীমাংসিত বিষয়।  

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন রেখে বলেন, তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল কে করেছে? উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হয়েছে, এ পদ্ধতি ছিলো একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা, দীর্ঘ মেয়াদে তত্বাবধায়ক সরকার চলতে পারে না।  
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের গণতন্ত্র যখন এগিয়ে যায় তখন সরকার ও নির্বাচন ব্যবস্থার উপর আস্থা ফিরতে শুরু করে।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, এ প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারের কোন হস্তক্ষেপ নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে বহুদলীয় তামাশা আর সুবিধাবাদ চালু করেছিলো, যাদের দলের অভ্যন্তরে নেই গণতন্ত্রের চর্চা, আজ তারাই গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিবকে প্রশ্ন করে বলেন আপনি নির্বাচিত হয়েও কেন সংসদে গেলেন না? এটা কোন গণতন্ত্র? ভোটাধিকার নিয়েতো আপনারাই ছিনিমিনি খেলে ছিলেন।

কারা হ্যাঁ - না ভোটের প্রহসন করেছিলো? কারা সেনাপ্রধান পদ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছিলো? কারা ১৫ ফেব্রুয়ারীর ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিলো? কারা ১ কোটি ২৭ লাখ ভূয়া ভোটার সৃষ্টি করে জনগণের অধিকার হরণ করতে চেয়েছিলো?  এতসব প্রশ্নের জবাব আশা বিএনপি মহাসচিব দিবেন বলে আশা করেন ওবায়দুল কাদের।  

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক স্পষ্ট করে বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সময় মতো সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি মীমাংসিত বিষয় নিয়ে অযথা মাঠ গরম না করতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহবান জানান।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশন ঘোষিত বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য আগামী ২ অক্টোবর থেকে ৬ অক্টোবর সকাল ১০ঃ৩০ থেকে বিকাল ৫ পর্যন্ত মনোনয়নের আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা প্রদানের তারিখ নির্ধারণ করেছে।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আগ্রহী প্রার্থীদের ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে থেকে দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা প্রদান করতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে এবং কোন ধরনের লোকসমাগম ছাড়া প্রার্থী নিজে অথবা প্রার্থীর একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা প্রদান করতে হবে।

আরও পড়ুন


ক্যাশ আউটে খরচ কমাল বিকাশ

কেকেআরের অধিনায়ক হিসেবে সাকিবকে চান আকাশ চোপড়া

ভুলে যাই বাস্তবতা

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর বর্ণাঢ্য জীবনী


আবেদনপত্র সংগ্রহের সময় সকল প্রার্থীদের অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সঙ্গে আনতে হবে এবং আগামী ৬ অক্টোবর ২০২১ বিকাল ৫ টার মধ্যে মনোনয়ন ফরম জমা প্রদান করতে হবে।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভরাডুবির আশংকায় বিএনপি সরে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বিএনপিসহ সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহবান জানান।  

নির্বাচন কমিশন অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহনে বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন সরকার সুষ্ঠু ভোট গ্রহনে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।  

ওবায়দুল কাদের আবারও হুঁশিয়ার করে আওয়ামী লীগের সর্বপর্যায়ের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কোন মদদ ও প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে হবে। তিনি দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে একযোগে কাজ করারও আহবান জানান।

news24bd.tv এসএম