মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠত্বের বৈশিষ্ট্য

মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠত্বের বৈশিষ্ট্য

অনলাইন ডেস্ক

মহান আল্লাহ তা’আলা মুসলিম উম্মাহকে শ্রেষ্ঠ উম্মাহ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। তাই এ উম্মাহর শ্রেষ্ঠত্বের অনেক বৈশিষ্ট্য পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। মহান আল্লাহ মুসলিম জাতির প্রধান তিনটি বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন।   

ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা শ্রেষ্ঠ জাতি, মানুষের কল্যাণে তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে, তোমরা সত্কাজের আদেশ দেবে, অসত্কাজ থেকে নিষেধ করবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে।

’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)

১. আল্লাহর জন্য নিবেদিত : একজন মুসলিমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তাঁর জীবনের সব কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী, আপনি বলুন, নিশ্চয়ই আমার নামাজ, ইবাদত ও আমার জীবন-মৃত্যু সব কিছু উভয় জগতের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য। ’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১৬২)
২. সহজ পন্থা অবলম্বন : মহান আল্লাহ মুসলিম উম্মাহর জন্য জীবনব্যবস্থাকে সহজ করেছেন। আর জীবনযাপনে তাদের সহজ পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন।

ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে যা সহজ তাই চান, তিনি তোমাদের জন্য যা কঠিন তা চান না। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫) 

অপর আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহ কারো ওপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করেন না, যা তার সাধ্যে নেই, তার ভালো কাজ তার জন্য হবে, তার মন্দ কাজের প্রতিফলও তার জন্য হবে। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৮৬)

৩. ইসলামের আহ্বান : ইসলামের দিকে মানুষকে আহ্বান করা মুসলিম জাতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য; বরং ভালো কাজের দিকে মানুষকে ডাকা এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করাও মুসলিমের কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী, আপনি বলুন, হে মানবসমাজ, আমি তোমাদের সবার কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে নবী হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১৫৮)

৪. একতাবোধ : একতাবোধ মুসলিম জাতির আরেক বৈশিষ্ট্য। জাতি, বর্ণ, শ্রেণি-স্তর সবাইকে নিয়ে মুসলিম সমাজ গড়ে উঠবে। তাদের মধ্যে কোনো শ্রেণিবৈষম্য বা বিরোধ-বিভক্তি থাকবে না। আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘এবং তোমাদের এই যে জাতি তা তো একই জাতি, আমিই তোমাদের প্রতিপালক; অতএব আমাকে ভয় করো। ’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ৫২)

৫. সহানুভূতিশীল : পরস্পরের প্রতি অনুকম্পা ও সহানুভূতি মুসলিমদের অনন্য বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল এবং তাঁর সঙ্গীরা কাফিরদের প্রতি কঠোর ও পরস্পরের প্রতি সহাভূতিশীল। ’ (সুরা ফাতাহ, আয়াত : ২৯)

৬. যেকোনো স্থানে নামাজ আদায় : মুসলিম উম্মাহর জন্য জমিনকে পবিত্র ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমাকে পাঁচটি বৈশিষ্ট্য দেওয়া হয়, যা আমার আগে কোনো নবীকে দেওয়া হয়নি। আমাকে ভীতির মাধ্যমে এক মাস ভ্রমণের সাহায্য করা হয়েছে। আমার জন্য পুরো জমিনকে মসজিদ ও পবিত্র ভূমি করা হয়েছে।  

অতএব আমার উম্মতের সবাই যেন নামাজের সময় হলে তা আদায় করে। আমার জন্য যুদ্ধলব্ধ সম্পদ হালাল করা হয়েছে। আগেকার সময় একজনকে একটি গোত্রের কাছে পাঠানো হতো, আমাকে পুরো মানবজাতির কাছে পাঠানো হয়েছে। আমাকে (কিয়ামতের দিন) সুপারিশের অধিকার দেওয়া হয়েছে। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৩৮)

আরও পড়ুন:


৬ ঘণ্টা পর সচল হলো ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম

বৃহস্পতিবার শপথ নেবেন মমতা

প্যানডোরা পেপার্স: বিশ্বনেতাদের দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার

এবি ব্যাংকের ডিএমডি আব্দুর রহমান গ্রেপ্তার


৭. সর্বজনীনতা : ইসলাম সর্বজনীন জীবনবিধান। সমগ্র মানবজাতির জন্য ইসলামের আগমন হয়েছে। জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমাকে পাঁচটি বৈশিষ্ট্য দেওয়া হয়, যা আমার আগে কোনো নবীকে দেওয়া হয়নি।

আগেকার সময় একজনকে একটি গোত্রের কাছে পাঠানো হতো, আমাকে পুরো মানবজাতির কাছে পাঠানো হয়েছে। আমাকে (কিয়ামতের দিন) সুপারিশের অধিকার দেওয়া হয়েছে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫২১)

আল্লাহ বলেন, ‘আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বিনকে পূর্ণাঙ্গ করেছি, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ পরিপূর্ণ করেছি এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বিন হিসেবে মনোনীত করেছি। ’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৩)