পা দিয়ে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা দেয়া সেই ছুরাইয়ার স্বপ্ন প্রতিবন্ধী স্কুল প্রতিষ্ঠার

পা দিয়ে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা দেয়া সেই ছুরাইয়ার স্বপ্ন প্রতিবন্ধী স্কুল প্রতিষ্ঠার

Other

শেরপুর সদর উপজেলার আন্ধারিয়া সুতিরপাড় গ্রামের প্রতিবন্ধী কন্যা ছুরাইয়া। বাকপ্রতিবন্ধী ও দুই হাতেও শক্তি পায় না মেধাবী এই শিক্ষার্থী। তাই কানে শুনে আর দুই পায়ের সাহায্যে লিখে লেখাপড়া করে সফলতার সাথে এইচএসসি পাস করেছে সে। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবার দৃষ্টি কেড়েছে ছুরাইয়া।

তার স্বপ্ন, পড়াশোনা শেষ করে প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার।

মাওলানা মো. ছফির উদ্দিন ও মুর্শিদা ছফিরের তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে ছুরাইয়া জন্ম থেকেই এমন। এরপরও বাবা-মা হাল ছাড়েননি। তাকে ভর্তি করে দেন আন্ধারিয়া সুতিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

সে হাত দিয়ে কোন কাজ করা বা লিখতে না পারলেও দুই পা দিয়েই লেখার কৌশল রপ্ত করে। কথা বলতে না পারায় শিক্ষকদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেই পড়া শিখতো ছুরাইয়া। কারোর সাহায্য ছাড়াই দুই পায়ে লিখেই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। এরপর সে আন্ধারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে জেএসসিতে জিপিএ-৪ ও ২০১৮ সালে এসএসসিতে জিপিএ ৪.১৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। আর ২০২০ সালে শেরপুর মডেল গার্লস ডিগ্রি কলেজ থেকে জিপিএ ৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় সে।

এলাকাবাসী প্রথমে তাকে অবহেলা করলেও ছুরাইয়ার এ অদম্য চেষ্টায় এখন তাকে উদাহরণ মনে করে সবাই। শুধু তাই নয় দুই পায়ে মোবাইল ব্যবহারসহ সব ধরনের কাজ করে থাকে ছুরাইয়া।

ছুরাইয়ার স্বপ্ন, সে পড়াশোনা শেষ করে তার মতো সকলের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবে। আর সে স্বপ্ন পূরণের সিড়ি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘খ’ ইউনিটে ভর্তির হতে পরীক্ষাও দিয়েছে এ বছর। ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে দু’পায়ে লিখে পরীক্ষা দেয়ায় সবার নজরেও আসে সে।

আরও পড়ুন


স্বাস্থ্যবিধি মেনে টরন্টোয় শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের প্রস্তুতি

পটুয়াখালীর নিউমার্কেটে শতাধিক দোকান আগুনে ভস্মীভূত

শেখ হাসিনাবিহীন ভবিষ্যত হতে পারে ধ্বংস ও প্রতিহিংসার!

গাজীপুরের সাফারী পার্কে স্থান হলো বিজিবির হাতে আটক আর্জেন্টিনার সেই প্রাণীর


প্রতিবন্ধী হওয়া স্বত্ত্বেও ছুরাইয়ার অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে আর বাবা-মার সহযোগিতায় সে মেধাবী শিক্ষার্থী। তাই তার বাবা-মা এখন তাকে বোঝা মনে করেন না। তাকে নিয়ে তাদের স্বপ্ন, সরকারের সাহায্য পেলে একদিন সে অনেক বড় হবে বলে মনে করেন চরপক্ষীমারী বীরমুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান মডেল স্কুল সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. ছফির উদ্দিন।  

দুই হাতেই শক্তি না থাকায় তার মা গোসল, খাওয়ানোসহ অন্যান্য কাজ করে আসছেন। ছুরাইয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তার মা মুর্শিদা ছফির।

ছুরাইয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ায় খুশি মডেল গার্লস কলেজের তার শিক্ষক মিতালী রানী বাগচি।

ছুরাইয়ার পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ।

এলাকাবাসীসহ সব মহলের দাবি, প্রতিবন্ধী ছুরাইয়ার স্বপ্ন পূরণে সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এগিয়ে আসবে। এতে উদাহরণ হয়ে থাকবে প্রতিবন্ধি ছুরাইয়ারা।

news24bd.tv এসএম