ঘুষ গ্রহণ ও আইনি সহায়তা চাইতে আসা লোকজনদের মারধরের অভিযোগে নওগাঁর নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেনকে থানা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আজ (২৮ মে) সকালে নওগাঁর পুলিশ সুপার (এসপি) ইকবাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এসপি ইকবাল বলেন, শনিবার রাতে নিয়ামতপুর থানার ওসি আকরাম হোসেনকে থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আইনের সহায়তা চাইতে আসা মানুষের কাছে ঘুষ দাবি এবং ঘুষ না পেয়ে অসহায় মানুষদের মারধর, সেই সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে ওসি আকরামের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, গেল ১৬ মার্চ নিয়ামতপুর থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন আকরাম হোসেন। কিন্তু মাত্র দুই মাসের মধ্যে তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহণ, উৎকোচের টাকা না পেয়ে থানায় আসা সাধারণ মানুষকে মারধর ও মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়াসহ নানা অভিযোগ উঠে। এছাড়া ওই থানার এক নারী কনস্টেবলকে অনৈতিক প্রস্তাবেরও অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
গেল ২০ মে এসব ঘটনা উল্লেখ করে ওসি আকরাম হোসেনের দ্রুত অপসারণ চেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলে লিখিত অভিযোগ দেন নিয়ামতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এনামুল হকসহ স্থানীয় ৮ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
ঘটনা খতিয়ে দেখতে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। শুরু হয় তদন্ত। নওগাঁর পুলিশ সুপার বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মুহাম্মদ রাশিদুল হককে প্রধান করে গঠন করা হয় ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, মান্দা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান এবং সহকারী পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মতিয়ার রহমান।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মুহাম্মদ রাশিদুল হক জানান, বুধবার (২৩ মে) নিয়ামতপুর থানায় বসে তদন্ত কমিটি অভিযোগকারীদের সাথে কথা বলে তদন্ত কাজ শেষ করে। পরদিন (২৪ মে) পুলিশ সুপার বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন জানান, নিয়ামতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এনামুল হকসহ স্থানীয় ৮ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির সুপারিশ মোতাবেক নিয়ামতপুর থানার ওসি আকরাম হোসেনকে থানা থেকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
রানা/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর
