তাঁরা কেউ-ই ইংরেজিতে লেখেননি, কারণ কাজটি অনুবাদকের!

তাঁরা কেউ-ই ইংরেজিতে লেখেননি, কারণ কাজটি অনুবাদকের!

Other

সৈয়দ শামসুল হক সাহিত্যিক ইংরেজি কম জানতেন না। মোহাম্মদ রফিক কম জানেন না। দেবেশ রায় বা শংখ ঘোষও কম জানতেন না। কিন্তু তাঁরা কেউ-ই ইংরেজিতে লেখেননি।

 

ইংরেজির মাধ্যমে নিজের লেখা বিশ্বব্যাপী পরিব্যাপ্ত হোক, তা সবাই চাইতেন। কিন্তু মনে করতেন সেই কাজটি তাঁদের নয়। অনুবাদকের। নিজের লেখা নিজে ইংরেজিতে অনুবাদ করতে গেলে যতটা সময় ও শ্রম ব্যয় হবে, সেই সময়ে নতুন আরেকটি লেখাতেই মনোনিবেশ করতেন তাঁরা।

এমন নয় যে তাঁরাও বুকার বা নোবেলের প্রত্যাশী ছিলেন না। কিন্তু সেই দৌড়ে নামলে যত সময় এবং যত কাণ্ড-কারখানার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, তাতে অংশগ্রহণ করার মনোভাব বা শক্তিব্যয়ের সক্ষমতাও তাঁদের ছিল না। তবু কেউ অন্য ভাষায় তাঁদের লেখা অনুবাদ করতে চাইলে খুশি হতেন নিশ্চিত।

আরও পড়ুন:


সাধারণ হাজতির মতোই থাকতে হবে আরিয়ানকে, মানতে হবে রুটিন

টিভির পর্দায় লাল রঙের পানীয় পান করতে পারবে না নারীরা

প্রেমিকার সঙ্গে হোটেলে শারীরিক সম্পর্ক, সকালে পালালো যুবক

দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে যৌনকর্মীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা


আমি, সত্যি বলতে, ইংরেজি জানিই না প্রায়। তার জন্য কোনও হীনম্মন্যতাও নাই। লিখতে শুরু করার দিন থেকে এত বছর ধরে বাংলাভাষাটিই ভালোভাবে শেখার সাধনা করে যাচ্ছি।  

সেই আমিও চাই আমার লেখা ইংরেজি তো বটেই, স্প্যানিশ, হিন্দি, উর্দু এবং আরবিতে অনূদিত হোক। আরো অন্য কোনো ভাষাতে অনূদিত হলে সেটি বাড়তি পাওয়া।

আমার লেখার অনুবাদ কামনা করি কারণ আমার কাছে বুকার, নোবেলের চাইতে ভিন্ন ভাষার ঋদ্ধ পাঠকের কাছে পৌঁছানোটাই বড় পুরস্কার। বাংলাদেশের ঋদ্ধ পাঠকরা আমাকে গ্রহণ করেছেন, এটি আমাকে সাহস জোগায়। আমার পায়ের তলার মাটি হচ্ছেন বাংলার পাঠকরা।
এবার একটু তিক্ত সত্যি কথা বলি।  

ভারতের মতো বাংলাদেশেও বিদেশী প্রকাশনা সংস্থার স্কাউটরা আসেন ভালো বইয়ের খোঁজে। কিন্তু ভারতের, এমনকী শুধু কলকাতার যত লেখকের বই ইংরেজি প্রকাশনা সংস্থাগুলো থেকে ছাপা হয়, বাংলাদেশের লেখকরা সেই তুলনায় গণনাতেই আসেন না। তারমানে কি বাংলাদেশের সাহিত্যের মান খুব খারাপ?

আসল উত্তরটা জানাই।

বিদেশী প্রকাশকদের স্কাউট, প্রতিনিধিরা আসেন কিছু প্রতিষ্ঠানে। আর কিছু ব্যক্তির কাছে। তারা জানতে চান ভালো লেখক এবং বইয়ের খবর। ঐসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ভালো বইয়ের খোঁজ না দিয়ে নিজেদের বই গছিয়ে দেন তাদের হাতে। ব্যক্তিপর্যায়ের লেখকরাও সেটাই করেন।

সেইসব বই যখন বিশেষজ্ঞদের কাছে উপস্থাপন করে প্রকাশনীগুলো, তখন সবগুলোই বাতিল হয়ে যায় নিম্নমান বা গড়মানের কারণে। বিদেশী বড় প্রকাশকরা তো আর আমাদের দেশের মতো মুখ চিনে, পদ-পদবি দেখে বা পয়সা নিয়ে বই ছাপে না। বছরের পর এমন ঘটনা ঘটার কারণে বিদেশী প্রকাশকরা আর বাংলাদেশে স্কাউট পাঠানোই বন্ধ করে দিয়েছে প্রায়।

(মত-ভিন্নমত বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

news24bd.tv/ কামরুল