মানুষের সঙ্গে যেভাবে কথা বলতেন বিশ্বনবী

মানুষের সঙ্গে যেভাবে কথা বলতেন বিশ্বনবী

অনলাইন ডেস্ক

বিশ্বনবী হয়রত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব সময় মানুষের জন্য উত্তম আদর্শ। তার নির্দেশনায় কেউ কখনও পথভ্রষ্ট হবে না। তার দেখানো পথেই লুকায়িত কল্যাণ ও মুক্তি। সবার সাথে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ব্যবহার ছিল মানবিক।

হাদিসে বিশ্বনবীর কথা বলার ধরণ সম্পর্কে বলা হয়েছে।

মানুষের জীবন পরিচালনায় বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বোত্তম অনুকরণীয় আদর্শ। তাঁর কথা-বার্তা ধরনেও রয়েছে শিক্ষা। তিনি কি ভাবে, কোন ভঙ্গিতে কথা বলতেন! তাঁর পরিবার ও সাহাবায়ে কেরামে বর্ণনা থেকে যা পাওয়া যায়।

তাহলো-

১. স্পষ্ট ও ধীর স্থির কথা

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনভাবে কথা বলতেন, যা শুনে সবাই তার কথাগুলো আত্মস্থ করতে পারতেন। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের মতো এমন তাড়াতাড়ি কথা বলতেন না; এক নাগাড়ে কথা বলে যেতেন না। বরং তিনি স্পষ্ট ও ধীর-স্থিরভাবে কথা বলতেন। তার বৈঠকে যারা উপস্থিত থাকতো; সবাই তার কথাগুলো মুখস্থ করে ফেলতো। ’ (তিরমিজি)

২. সহজ ও নরম

বিশ্বনবীর কথাগুলো ছিল এত সহজ ও নরম যে, সবার কাছে তার কথাগুলো বোধগম্য ছিল এবং সহজেই শ্রোতারা তা বুঝতে পারতেন। কথা বলার সময় উম্মতের প্রতি এতো খেয়াল রাখতেন যে, কে কতটুকু কথা বুঝতে সক্ষম; সে অনুসারেই তিনি কথা বলতেন। তার কথা বলার ধরন কখনও শ্রোতাদের বুঝ শক্তির সীমা অতিক্রম করেনি। সহজ ও নরম কথা বলার ক্ষেত্রেও তিনি অত্যন্ত ধৈর্যশীল ও সহনশীল ছিলেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা বলার পদ্ধতি ছিল ধীর-স্থির; যারাই তার কথা শুনতো সবাই তা বুঝতে পারতো। ’ (আবু দাউদ)

হজরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এক ব্যক্তি উপস্থিত হয়ে তাঁর সঙ্গে ভয়ে ভয়ে কথা বলতে লাগলো; এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, তুমি ভয় করো না; কেননা আমি কোনো রাজা-বাদশাহ নই। আমি তো এক নারীর সন্তান; যিনি শুকনো মাংস খেয়েছেন। ’ (ইবনে মাজাহ)

আরও পড়ুন


সূরা বাকারা: আয়াত ১২৮-১৩৩, আল্লাহর নির্দেশ ও হয়রত ইব্রাহিম (আ.)

কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধু মিডিয়া সেন্টার’

সাইবার আগ্রাসন থামছেই না

সুতার বাড়তি দামে বিপাকে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা


৩. বার বার কথা বলা

কথা বলায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন বিনয়ী, উদার ও প্রশস্ত হৃদয়ের অধিকারী। তার কথা বুঝার সুবিধার্থ তিনি একটি কথা তিনি বার বলতেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, (কোনো) কথাকে ভালভাবে বুঝার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার কথাকে তিন বার করে পুনরাবৃত্তি করতেন। ’ (বুখারি)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা বলার ধরনও মুমিন মুসলমানের জন্য অনুপ্রেরণা। তিনি মানুষের সঙ্গে নরম ও কোমল ভাষায় কথা বলতেন। ব্যবহারেও তিনি কোমল ছিলেন। তাই কোনো মুসলিমের কথা বলার ধরন যেন এমন না হয় যে, কথা শুনেই যেন কারো মধ্যে ভয় সৃষ্টি হয়। কথা যেন এত কঠিন না হয় যে, বুঝতে কষ্ট হয়। কথা যেন এমন না হয় যে, তাতে অস্পষ্ট ও অভদ্রতা প্রকাশ পায়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বনবীর কথা বলার ধরন অনুযায়ী কথা-বার্তা বিনিময় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

news24bd.tv এসএম