সংখ‍্যাগরিষ্ঠ ধর্মের অংশ হিসেবে অপমানিত বোধ করছি

সংখ‍্যাগরিষ্ঠ ধর্মের অংশ হিসেবে অপমানিত বোধ করছি

Other

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যখন ঈদের শুভেচ্ছা বার্তা দেয়, বাংলাদেশের মানুষ খুশিতে গদগদ হয়ে যায়। ট্রুডো এই কাজটা মূলত করে কানাডার সংখ‍্যালঘু মুসলিমদের সাহস দেওয়ার জন‍্য। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে তাদেরকে মানসিক শক্তি যোগান দেয়। একজন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তার দেশের সংখ‍্যালঘুদের সাহস দেওয়াকে সে একটা কর্তব‍্য মনে করে।

 

নিউজিল‍্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা যখন মাথায় কাপড় দিয়ে মুসলিম কমিউনিটির অনুষ্ঠানে যায়, মুসলমানদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করে, আমরা তখন বাহবা দেই। জেসিন্ডা মূলত নিউজিল‍্যান্ডের সংখ‍্যালঘু মুসলিমদের সাহস দেওয়ার জন‍্যই এ কাজ করে। কিন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা যখন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টানদের উৎসবে গিয়ে ওদেরকে মানসিক শক্তি যোগাতে যায়—তখনই আমরা মেনে নিতে পারি না। সেসব খবরের লিংকে অশ্রাব‍্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকি।

প‍্যারিসে ধর্মের অবমাননা হলে আমরা ক্ষুদ্ধ হই। ব‍্যথিত হই। অথচ পাশের বাড়ির ভিন্নধর্মালম্বীদের উৎসব মেনে নিতে পারি না। তাদের ধর্মের আচার মেনে নিতে পারি না। অন‍্য ধর্মের আচারের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা প্রকাশ করেতে পারি না।  

একটা স্ট‍্যাটাস দিলে বিশ্ববিদ‍্যালয়ের শিক্ষককে তড়িৎ গতিতে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু সাম্প্রদায়িক সংঘাতের জন‍্য যারা দায়ী ও জড়িত—তাদের কি শাস্তি হয়? প্রশাসন শুধু ষড়যন্ত্রই খুঁজে বেড়ায়। ষড়যন্ত্র, ভাবমূর্তি আর অনুভূতি—এই তিনে আবর্তিত এক জাতি।

আরও পড়ুন:


ফতুল্লায় সুজন ফকির হত্যাকাণ্ডে দুই ঘাতক গ্রেপ্তার

মন্দিরে হামলার ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে প্রশ্ন রিজভীর

প্রেম করে বিয়ে করায় ৪ নাতি ও ২ মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা

বড় ভাই শেখ জামালের মতো সেনা অফিসার হতে চাইতো শেখ রাসেল: প্রধানমন্ত্রী


বাংলাদেশের সংখ‍্যাগরিষ্ঠ ধর্মের অংশ হিসেবে আমি কখনো আলাদা শক্তি পাইনি। আলাদা কোনো সুযোগ পাইনি। বরং একজন চতুর্থ শ্রেণির নাগরিকের চেয়েও বেশি প্রবঞ্চনার শিকার হয়েছি। আমাদের দেশেটাতে যাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও টাকা আছে—তারাই যাচ্ছেতাই করতে পারে। তারাই সকল সুবিধা ভোগ করে। তাদের জন‍্যই বিচার আছে। অন‍্যান‍্যরা চতুর্থ শ্রেণির নাগরিক হিসেবেই বেঁচে থাকে। কিন্তু আজ যখন অসংখ‍্য হিন্দু ধর্মালম্বীরা কালো ব‍্যাজ ধারণ করেছে, লাঞ্ছিত ও অপমানিত বোধ করছে—সংখ‍্যাগরিষ্ঠ ধর্মের অংশ হিসেবে তখন নিজেই অপমানিত বোধ করছি।

আজীবন স্বপ্ন দেখি, বাংলাদেশের একজন নাগরিক কখনোই ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, জাত-জন্মপরিচয়ের জন‍্য কোনোপ্রকার প্রবঞ্চনা ও লাঞ্ছনার শিকার হবে না।

news24bd.tv/তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর