ইউপি ও পৌরসভা নির্বাচনে আরও খুনোখুনির আশঙ্কা

ইউপি ও পৌরসভা নির্বাচনে আরও খুনোখুনির আশঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক

সারাদেশে দ্বিতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি), পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কয়েক জেলায় বড় ধরনের সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, তৃতীয় ও পরবর্তী ধাপগুলোয়ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির ঘটনা ঘটতে পারে। ইতোপূর্বে পুলিশ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত সভায় ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচন কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় মাঠপুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী মাঠপর্যায়ের পুলিশ ইউপি ও পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত এলাকাগুলোয় টহল ও নজরদারি জোরদার করেছে।

এর পরও প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় হামলা, সংঘর্ষ ও খুনোখুনির মারাত্মক অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, ‘ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে সতর্ক থাকা ও স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) বলেছি যাতে নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো ধরনের সহিংসতা ঘটতে না পারে। পাশাপাশি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আমরা বিশেষ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। নির্বাচন কমিশনার, কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সফর করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।

’ তৃতীয় ধাপে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ১৬ ইউনিয়ন পরিষদে।  

নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা প্রস্তুতি বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমরা ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছি। নির্বাচনে যাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখছি। পাশাপাশি তফসিল ঘোষিত এলাকাগুলোয় পুলিশি টহল ও তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। ’ ইসি ও পুলিশের উচ্চ পর্যায় থেকে সতর্কবার্তা এবং মাঠপর্যায়ের পুলিশ সতর্ক থাকার পরও নির্বাচনে খুনোখুনি ও সহিংসতা থামছে না।   

উল্লেখ্য, শনিবার (১৬ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নেথোয়াই মারমাকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাগুরা সদর উপজেলার জগদল ইউনিয়নে নির্বাচনী সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। প্রথম ধাপের নির্বাচনে কক্সবাজারের মহেশখালীতে সহিংসতায় নিহত হন দুজন আর বরিশালের গৌরনদীতে নিহত হন দুজন। আর ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত হয়েছিলেন ১১৭ জন।  

পুলিশ সদর দফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, যে এলাকায় ইউপি নির্বাচন হবে সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশের পাশাপাশি আধিপত্য বিস্তার, হামলা-পাল্টা হামলা, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ সন্ত্রাসকান্ড ও কেন্দ্র দখলের মতো অপরাধ ঘটতে পারে। এ আশঙ্কায় সম্প্রতি পুলিশ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত অপরাধ পর্যালোচনা সভায় আইজিপি মাঠপুলিশকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘ইউপি নির্বাচনে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার, বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারসহ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে। তাই এ বিষয়ে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলা পুলিশ সুপারদের এ বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন আইজিপি।

আরও পড়ুন


দলে পরিবর্তন, এক নজরে ওমানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল মারা গেছেন

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, আরও দুদিন বৃষ্টির সম্ভাবনা

চিকিৎসকের আত্মহত্যা, লাশের পাশে পড়ে থাকা চিঠিতে যা লেখা ছিল


পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন ও প্ল্যানিং) মো. হায়দার আলী খান বলেন, ‘স্থানীয় পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাচনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়। মাঠপুলিশকে সেভাবেই নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও টহল এবং স্ট্রাইকিং ফোর্সের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য চেয়ে একটি চাহিদা দেওয়া হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সে অনুযায়ী সরবরাহ করে। এর বাইরে পুলিশ একটি নিজস্ব নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে কাজ করছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা ও ঝুঁকির বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদন থাকলে সেগুলো আমলে নিয়ে মাঠপর্যায়ে নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানোর নির্দেশনা দিয়েছি। ’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদে সহিংসতার বিষয়টি নির্ভর করে মূলত প্রার্থীদের আচরণের ওপর। খুনোখুনি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারসহ সামগ্রিক বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি। পুলিশ ছাড়াও বিজিবি, আনসার সদস্যরাও নির্বাচনী নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকেন। তারা নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা রোধে কাজ করছেন। ’  সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

news24bd.tv রিমু