কেয়ামতের দিন আসমান-জমিন কি পরিবর্তন হবে?

কেয়ামতের দিন আসমান-জমিন কি পরিবর্তন হবে?

অনলাইন ডেস্ক

কেয়ামত যে হবে সেটিতে সন্দেহ নেই। আল্লাহর নির্দেশের অপেক্ষা মাত্র। একদিন এই পৃথিবী ধংস হয়ে যাবে। কোন প্রাণী থাকবে না।

সবাইকে দাঁড়াতে হবে কেয়ামতের ময়দানে। আসলে কেয়ামত শব্দের অর্থ হলো- ‘উঠে দাঁড়ানো’।

হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালামের সিঙ্গায় প্রথম ফুঁৎকারে সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। দ্বিতীয় ফুঁৎকারে পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকে যত জীবের সৃষ্টি হয়েছিল, তা আবার জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে।

মহাপ্রলয়ের পর সব সৃষ্টি যে মাঠে উপস্থিত হবে; তাহলো কেয়ামতের মাঠ। এ কেয়ামতের মাঠ কেমন হবে? সে সময় বর্তমান আসমান-জমিন কি পরিবর্তন হবে?

কেয়ামতের মাঠের বর্ণনা

মহান আল্লাহ তাআলা আসমান-জমিনের পরিবর্তন সম্পর্কে ঘোষণা করেন-
یَوۡمَ تُبَدَّلُ الۡاَرۡضُ غَیۡرَ الۡاَرۡضِ وَ السَّمٰوٰتُ وَ بَرَزُوۡا لِلّٰهِ الۡوَاحِدِ
‘(স্মরণ কর) যেদিন এই পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবী হবে এবং আকাশমন্ডলীও। আর মানুষ (কবর থেকে) বের হবে একক প্রতাপশালী আল্লাহর সামনে। ’ (সূরা ইবরাহিম: আয়াত ৪৮)

এ আয়াতে পৃথিবী ও আসমানসমূহকে পাল্টে দেওয়ার অর্থ কি?

এ আয়াতে কেয়ামতের ভয়াবহ অবস্থা ও ঘটনাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। কেয়ামতের দিন বর্তমান পৃথিবী পাল্টে দেয়া হবে এবং আসমানসমূহও। সবাই এক ও পরাক্রমশালী আল্লাহর সামনে হাজির হবে।

পৃথিবী ও আসমান পাল্টে দেওয়ার এরূপ অর্থও হতে পারে যে, তাদের আকার ও আকৃতি পরিবর্তন করে দেওয়া হবে। যেভাবে কোরআনুল কারিমের অন্যান্য আয়াত ও হাদিসে সমগ্র ভূপৃষ্ঠকে একটি সমতল ভূমিতে পরিণত করে দেওয়ার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এতে কোনো ঘর ও বৃক্ষের আড়াল থাকবে না এবং পাহাড়, টিলা, গর্ত, গভীরতা কিছুই থাকবে না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা আরও ঘোষণা করেন-
فَیَذَرُهَا قَاعًا صَفۡصَفًا لَّا تَرٰی فِیۡهَا عِوَجًا وَّ لَاۤ اَمۡتًا یَوۡمَئِذٍ یَّتَّبِعُوۡنَ الدَّاعِیَ لَا عِوَجَ لَهٗ ۚ وَ خَشَعَتِ الۡاَصۡوَاتُ لِلرَّحۡمٰنِ فَلَا تَسۡمَعُ اِلَّا هَمۡسًا
‘এরপর তিনি তাকে (ভূমিকে) মসৃণ সমতলভূমি করে ছাড়বেন। তাতে তুমি দেখবে না কোন বক্রতা ও উচ্চতা। সেদিন তারা (ফেরেশতার) আহবানকারীর অনুসরণ করবে; যার কথা এদিক ওদিক হবে না। দয়াময়ের সম্মুখে সেদিন যাবতীয় আওয়াজ স্তব্ধ হয়ে যাবে (এমনভাবে) যে মৃদু গুঞ্জন ছাড়া তুমি কিছুই শুনবে না। ’ (সূরা ত্বহা: আয়াত ১০৬-১০৮)

মূলত মহাপ্রলয়ের মাধ্যমে আসমান-জমিন ও এর মধ্যে যত সৃষ্টি, উঁচু-নিচু, নদ-নদী আছে সব কিছু এক সমতল ভূমিতে পরিণত করে সব সৃষ্টিকে ওঠে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে। যে দিনটিতে এসব পার্থক্য বা ব্যবধান থাকবে না সব কিছুই সমতল হয়ে যাবে; সেটিই হবে কেয়ামতের মাঠ।

আরও পড়ুন


সূরা বাকারা: আয়াত ১৩৪-১৩৮, প্রত্যেক মানুষ তার কাজের জন্য দায়ী

যেভাবে তিন ছাত্রলীগ নেতার সহায়তায় ইকবালকে ধরে পুলিশ

সুপার টুয়েলভে স্কটল্যান্ড

বেপরোয়া গতি সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ : প্রধানমন্ত্রী


কেয়ামতের দিন এগুলো থাকবে না, বরং সব পরিষ্কার ময়দান হয়ে যাবে। হাদিসের বর্ণনায় এসেছে-

হজরত সাহল ইবনু সাদ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, কেয়ামতের দিন মানুষকে সাদা ধবধবে রুটির ন্যায় জমিনের ওপর একত্রিত করা হবে। সাহল বা অন্য কেউ বলেছেন, তার মাঝে কারও কোনো পরিচয়ের পতাকা (ঘর, উদ্যান, বৃক্ষ, পাহাড়, টিলা ইত্যাদি) থাকবে না। ’ (বুখারি, মুসলিম)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কেয়ামতের ময়দানের ভয়াবহতা আসার আগে আমলি জিন্দেগি যাপনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

news24bd.tv এসএম

এই রকম আরও টপিক