জাপানী নারীদের দীর্ঘ যৌবনলাভের গোপন রহস্য

জাপানী নারীদের দীর্ঘ যৌবনলাভের গোপন রহস্য

অনলাইন ডেস্ক

চারটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপের সঙ্গে প্রায় ৬ হাজার ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে ছোট্ট একটি দেশ জাপান। সহজ, সরল ও অনাড়ম্বর জীবনযাপনের জন্য জাপানের অধিবাসীরা সারা বিশ্বে সুপরিচিত। সেই সঙ্গে পরিচিত সদা যৌবনময়ী হাসিখুশি, প্রাণবন্ত ও সুঠাম জাপানি নারীরাও। এর সবচেয়ে বড় কারণ জাপানের সংস্কৃতি ও তাদের বেছে নেয়া জীবনযাপনের ধরণ।

সৌন্দর্যের বিষয়টি আপেক্ষিক হলেও জাপানী নারীদের দেখে যে তাদের বয়স অনুমান করা যায় না, তা সকলেই মানেন। কিন্তু এর পেছনে রহস্য কী? অনেক সময় তাদেরকে স্বাস্থ্য ধরে রাখার বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন করলে তারা হয়তো শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে। কারণ এর জন্য তাদেরকে আলাদা কিছু করতে হয় না। দীর্ঘ জীবন ও সুস্বাস্থ্যের রহস্য লুকিয়ে আছে তাদের জীবনাচরণের মধ্যেই।

দেখে নেয়া যাক জাপানী নারীদের সৌন্দর্য ও সুস্বাস্থ্যের গোপন রহস্য-

cha

১. সবুজ চা পান করা

গ্রীন টি বা সবুজ চা বিশ্বের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে পরিচিত। এটি ৮ম শতাব্দী থেকেই চীনে পান করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন ভেষজ রোগের চিকিৎসায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গ্রীন টি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।  

ভারতীয় সংস্কৃতিতে এটি রক্তপাত বন্ধে ও ক্ষত সারানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এটি মানসিক স্বাস্থ্য ও হৃদযন্ত্র ভালো রাখে। এটি শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। গ্রীন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টিতে ভরপুর একটি পানীয়।

এছাড়া গ্রীন টিতে রয়েছে ক্যাফেইন এবং অ্যামাইনো এসিড এল-থেনাইন, এই দুটি উপাদানের সংমিশ্রণ একসঙ্গে মস্তিষ্কের গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। নিয়মিত গ্রীন টি পান করলে স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়।  

গ্রীন টি থেকে সর্বোচ্চ উপকার পেতে দিনে ২ থেকে ৩ কাপ গ্রীন টি পান করা উচিত।

Japan

২. ফারমেন্টেড খাবার গ্রহণ

ফারমেন্টেড খাবার গ্রহণের প্রক্রিয়া দেখতে ভালো না লাগলে বা শুনতে খুব ভালো না শোনালেও এর কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। ফারমেন্টেশন বা গাঁজানো প্রক্রিয়াটি ব্যাকটেরিয়া বা ইস্টকে সুগার বা স্টার্চ খাওয়ানোর একটি প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে খাদ্যে উপকারী এনজাইম, বি-ভিটামিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এবং প্রোবায়োটিক ইত্যাদি উপাদান নষ্ট হয় না।

পরিচিত ফারমেন্টেড খাবারের মধ্যে রয়েছে সাওয়ারক্রাউট, কিমচি, দই, আচার এবং মিসো সুপ। পানীয়ের মধ্যে রয়েছে কম্বুচা, কেফির ইত্যাদি।

Mach

৩. সামুদ্রিক খাবার

দ্বীপরাষ্ট্র হওয়ায় জাপানে সামুদ্রিক খাবারের কোন অভাব নেই। দেশটির খাবার টেবিলে অহরহই দেখতে পাওয়া যায় স্কুইড, মাছ, অক্টোপাস, ঈল কিংবা শেলফিশ। এছাড়া জাপানি খাবার সুশি, সালাদ, কারি এবং টেম্পুরাতেও সামুদ্রিক খাবার ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে। কখনো গ্রীল, আবার কখনো জাপানী নিজস্ব ভাত ও মিসো সুপের সঙ্গে দেখতে পাওয়া যায় সামুদ্রিক খাবার।

সামুদ্রিক খাবার প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ইত্যাদিতে পরিপূর্ণ থাকে। কাজেই খাবারের টেবিলে এসব খাবারের উপস্থিতি একটি শক্তিশালী হৃদযন্ত্রের নিশ্চয়তা দেয়।

khabar

৪. স্বল্প আহারের অভ্যাস

জাপানী সংস্কৃতিতে 'ইচিজু-সানসাই' বা 'ওয়ান স্যুপ, থ্রি সাইডস' নামে একটি কথা প্রচলিত আছে যা খাবারের সময় মেনে চলা হয়। সাধারনত একবেলার জাপানি খাবারে সামান্য ভাত বা নুডলস থাকে, এরসঙ্গে প্রধান খাবার হিসেবে থাকে মাছ, মুরগী, শূকরের মাংস বা গরুর মাংস। এর সঙ্গে 'সাইড ডিশ' হিসেবে থাকে আচার দেওয়া সবজি এবং মিসো স্যুপ।  

প্রথমে শুনতে এটাকে অনেক বেশি খাবার মনে হলেও প্রতিটি খাবারই থাকে সামান্য পরিমাণে। ফলে প্রতি বেলায় শরীরে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের সমন্বয় ঘটে। এছাড়া জাপানি আদবকায়দা অনুযায়ী, প্রতিটি খাবারই থাকে আলাদা আলাদা পাত্রে যেন একটার সঙ্গে আরেকটি খাবারের স্বাদ মিশে না যায়। ফলে প্রত্যেকে কতোটুকু খাবার গ্রহণ করছে তা সে সহজেই বুঝতে পারে।

আরও পড়ুন:

পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা কে এই ইকবাল?

আগামী মাসেই ফেসবুকের প্রতিদ্বন্দ্বী নিয়ে আসছেন ট্রাম্প

পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ রেখে গদা নিয়ে যায় ইকবাল

মানবদেহে প্রতিস্থাপিত হল শূকরের কিডনী


khabr, family

৫. চলতি পথে খাবার নয়

খাবার গ্রহণকে জাপানে প্রায় উপাসনার পর্যায়ে দেখা হয়। ফলে ব্যস্ততার অজুহাত দিয়ে চলার পথে বা হাঁটতে চলতে তারা কখনোই খাবার গ্রহণ করে না। আর দিনের মাঝে যত ব্যস্ততাই থাকুক, খাবার গ্রহণের সময়টা তারা খুবই মনোযোগ দিয়ে নিয়ম মেনে খাবার গ্রহণ করে।  

news24bd.tv/ নকিব