সব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী, অভিযোগ মানা হয়নি গঠনতন্ত্র

সব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী, অভিযোগ মানা হয়নি গঠনতন্ত্র

অনলাইন ডেস্ক

তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে গঠনতন্ত্র মানা হয় নি এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে অনেক। এবার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায়। তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নির্ধারণে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মাত্র একজন করে নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এই তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয় তিন দিন আগে।

অভিযোগ রয়েছে, রাউজানে চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী মনোনয়ন নির্ধারণে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র মানা হয়নি। গেল নির্বাচনেও প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন দিতে একক প্রার্থীর নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে রাউজানের সব কটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

রাউজান থেকে এবার যে ১৪ জনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে তাতে রয়েছেন গতবারের বিজয়ী বর্তমান ১২ জন চেয়ারম্যান।

আর দুটি ইউনিয়নে নতুন মুখ। নতুন দুজন হলেন নোয়াপাড়া ইউনিয়নে বাবুল মিয়া ও বিনাজুরীতে রবীন্দ্রলাল চৌধুরী।

ইউপি নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে উল্লেখ আছে, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য সমন্বিতভাবে কমপক্ষে তিনজন প্রার্থীর প্যানেল মনোনয়ন বোর্ডের কাছে পাঠাতে হবে। ৩(ক)তে উল্লেখ আছে ইউনিয়ন পরিষদের শুধু চেয়ারম্যান পদের জন্য আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনোনয়ন দেবে।

আগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে এক হাজার সাতটি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান উপজেলার ইউনিয়নগুলো রয়েছে। হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়ার ২৬টি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পেতে রয়েছে প্রার্থীর ছড়াছড়ি। এই ইউনিয়নগুলোর  প্রতিটি থেকে কমপক্ষে তিনজন, সর্বোচ্চ ১৩ জনের নামের তালিকা কেন্দ্রে গেছে। হাটহাজারীর চিকনদণ্ডি ও উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নে সর্বোচ্চ ১৩ জন করে মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। ব্যতিক্রম শুধু রাউজান উপজেলা।

রাউজানের স্থানীয় কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রতিটি ইউনিয়নে তৃণমূল থেকে একজনের নাম পাঠানো হলেও সেখানে আরো কয়েকজন করে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু তাঁদের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়নি। ১৪টি ইউনিয়নে মনোনয়নের জন্য যে ১৪ জনের নাম আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে, সেখানে একাধিক প্রার্থী না থাকায় ওই ব্যক্তিরাই চেয়ারম্যান পদের জন্য নৌকা নিয়ে লড়বেন এটা প্রায় নিশ্চিত! শুধু তাই নয়, দলের মনোনয়ন পেলে তাঁরাই বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ শেষ ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে রাউজানের ১৪টির মধ্যে ১২টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তৃণমূলের নেতারা জানান, বিদ্রোহী প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেওয়ার কেন্দ্রীয় নির্দেশনা থাকলেও রাউজান থেকে এবার যে ১৪ জনের তালিকা কেন্দ্রে গেছে তাতে কদলপুর ইউনিয়নে গতবার দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী বর্তমান চেয়ারম্যান তসলিম উদ্দিনের নামও কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

জানতে চাইলে রাউজান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন বলেন, ‘চেয়ারম্যান পদের জন্য ১৪ জনকে মনোনীত করে ঊর্ধ্বতন শাখায় (দলের বিভিন্ন দপ্তরে) পাঠানো হয়েছে। যাঁকে উপযুক্ত মনে করা হয় তাঁর নামের প্রস্তাব ইউনিয়ন থেকে উপজেলা ও জেলা হয়ে কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়। ’

হাটহাজারী আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী যাঁরা ছিলেন তাঁদের সবার নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এখানে তৃণমূল থেকে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে তাতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সইসহ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। ’

আরও পড়ুন


মাদরাসায় ঢুকে ছাত্র-শিক্ষকসহ ৬ জনকে হত্যা

বিল থেকে কিশোরের মরদেহ উদ্ধার, পাওয়া যায়নি পরিচয়

যেসব কারণে রাগ করেছেন মহানবী (সা.)


উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান বলেন, ‘রাউজানের ইউনিয়নগুলো থেকে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নের জন্য একক প্রার্থী পাঠানো হয়েছে। হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়ার ইউনিয়নগুলোতে কমপক্ষে তিনজন সর্বোচ্চ ১৩ জনের নামও কেন্দ্রে গেছে। দলীয় মনোনয়নের আবেদন কেন্দ্র থেকে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এতে করে কেউ বঞ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই। সর্বোপরি দলের মনোনয়ন বোর্ড যাঁকে নৌকা প্রতীক দেবে তাঁর জন্য দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে বিজয়ী করতে হবে। ’

news24bd.tv রিমু