ধর্ষণের পর হত্যা, অপরাধী ছেলেকে বাঁচাতে বাবার কাণ্ড

ধর্ষণের পর হত্যা, অপরাধী ছেলেকে বাঁচাতে বাবার কাণ্ড

Other

নাটোরের লালপুরে সাত বছর বয়সী একটি মেয়েকে ধর্ষণের পরে হত্যার ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ দুপুরে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেন জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নাটোরের লালপুর উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের আব্দুলপুর মধ্যপাড়া গ্রামের শিশু নুসরাত জাহান বাবলীকে (৭) একা পেয়ে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে হাঁসুয়ার আঘাতে হত্যা করে কিশোর ইলিয়াস হাসান ইমন (১৫)। মৃত্যু নিশ্চিতের পর মরদেহ গুম করার উদ্দেশে বস্তায় ভরে টয়লেটের ট্যাংকিতে ভরে রাখে।

একদিন পর বাবলীর লাশ আবার ট্যাংকি থেকে তুলে বাবলীর বাড়ির অদূরে একটি ধানক্ষেতে ফেলে রাখে ইমন। নিখোঁজের আগে বাবলী ইমনদের বাড়িতে আসার কথা জানাজানি হলে বাবা ফাইজুল ইসলামের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করে ইমন। তখন বস্তাবন্দি মরদেহটি দূরের আরেকটি ধানক্ষেতে ফেলে আসে ইমনের বাবা ফাইজুল।

এর আগে, শনিবার রাতে কিশোর ইমন ও তার বাবা ফাইজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাঁসুয়াটি উদ্ধার করা হয়েছে।  

পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, গত ১৯ অক্টোবর নিহত বাবলী ও হত্যাকারী ইমনসহ বেশ কয়েকজন শিশু পিকনিকের জন্য প্রতিবেশী আরশেদ আলীর বাড়িতে যায়। রান্না শেষে গোসলের জন্য সবাই বাড়ি গেলে ইমনও তার বাড়িতে চলে যায়। ইমন তার বাড়িতে একা থাকা অবস্থায় শিশু বাবলী তার বাড়িতে যায়। এ সময় বাবলীকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে ইমন। বাবলী কান্নাকাটি করলে ইমন তার গলা চেপে হত্যার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে বাবলী নিস্তেজ হয়ে পড়লে ধারালো হাঁসুয়ার উল্টোদিক দিয়ে ঘাড়ে আঘাত করলে বাবলীর মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, বাবলীকে হত্যার পর তাৎক্ষণিক মরদেহ বাড়ির পরিত্যক্ত টয়লেটে ফেলে দেয় কিশোর ইমন। পরদিন ২০ অক্টোবর রাতে টয়লেট থেকে মরদেহ তুলে বাবলীর বাড়ির ৫০০ মিটার দূরে জিয়া মেম্বারের আম বাগানের পাশের ধানক্ষেতে ফেলে রাখে। পরদিন বাবা ফাইজুল ছেলে ইমনের কাছে জানতে চান তাদের বাড়িতে বাবলীর আসার ঘটনা সত্য কি না। এ সময় বাবার কাছে হত্যা ও মরদেহ রেখে আসার স্থান বলে দেয় ইমন। তখন বাবা ফাইজুল ছেলেকে বাঁচাতে ধানক্ষেত থেকে বস্তাটি সরিয়ে আরেকটু দূরে মাসুদ রানার ধানক্ষেতে ফেলে আসে।

আরও পড়ুন:স্বামীকে কুপিয়ে সেই দা নিয়ে ঘরের দরজায় বসেছিলেন স্ত্রী

এসপি লিটন কুমার বলেন, হত্যার দিন দুপুরে আরশেদ আলীর বাড়িতে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে বাবলীর বাবা আত্মীয়-স্বজনদের জানানোর পাশাপাশি আব্দুলপুর এলাকায় মাইকিং ও রেল স্টেশনে পোস্টারিং করেন। নিখোঁজের চতুর্থ দিন তিনি জানতে পারেন তার বাড়ির ৭০০ মিটার দূরে একটি জমিতে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি মরদেহ পড়ে আছে। ঐ সময় সেখানে গিয়ে মেয়ের অর্ধগলিত লাশ শনাক্ত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জোবায়ের, লালপুর থানার ওসি ফজলুর রহমান, ডিবি পুলিশের ইনচার্জ জালাল উদ্দীনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

news24bd.tv নাজিম