রাজধানীর ঢাকার পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বালু নদীর তীরভূমি ও নদীগর্ভ ভরাট করে দখলের অভিযোগে প্রাণ-আরএফএল গ্ৰুপের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) । এছাড়া বালু ভরাটে সহযোগিতা করায় দুটি ড্রেজার কোম্পানি ও অজ্ঞাত ৮-১০ জনকে মামলায় আসামী করা হয়েছে। আজ রবিবার রাতে খিলক্ষেত থানায় মামলাটি দায়ের করেন টঙ্গী নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক (বওপ) রেজাউল করিম।
এর আগে গতকাল দুপুরে রাজাখালী নৌপুলিশ ফাঁড়ির সহযোগিতায় খিলক্ষেত থানাধীন পাতিরা মৌজায় বালু নদীতে অভিযান চালায় বিআইডব্লিউটিএ।
এ সময় সরকারি সংস্থাটির কর্মকর্তারা দেখতে পান, দুটি ড্রেজার দিয়ে বালু নদীর পশ্চিম পাশে তীরভূমি ও নদীগর্ভ ভরাট করছে প্রাণ-আরএফএল গ্ৰুপ। ইতোমধ্যে নদীর ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর সীমানা পিলারের অভ্যন্তরে প্রায় ১২ হাজার ৫০০ বর্গফুট নদীর জমি ভরাট করা হয়ে গেছে।অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া টঙ্গী নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, আমাদের দেখে ড্রেজার দুটি পালিয়ে যায়। তাই কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, ভরাট করে নদীর গতিপথ সংকুচিত করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এতে নৌ দুর্ঘটনার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। পরিবেশ ভারসাম্য নষ্ট হয়। সরকার দখলদারদের হাত থেকে সারাদেশের নদ-নদী উদ্ধারে বদ্ধ পরিকর। আইন অনুযায়ী, নদীর সীমানা পিলারের মধ্যে কোন ভরাট বা স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এমনকি সীমানা পিলারের বাইরে ১৫০ ফুট পর্যন্ত জায়গায় কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে বিআইডব্লিউটিএ’র অনুমতি নিতে হবে। প্রাণ-আরএফএল গ্ৰুপ সীমানা পিলারের ভেতরেই দৈর্ঘ্যে ২৫০ ফুট ও প্রস্থে ৫০ ফুট নদীর জমি ভরাট করে ফেলেছে। অভিযান চালিয়ে ভরাট কাজ বন্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। একইসঙ্গে ভরাটকৃত জায়গা পুনরায় খনন করার জন্য তাদেরকে বলে এসেছি। আমরা নিয়মিত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করব।
আরও পড়ুন:
দুই সন্তানের বাবার নামে প্রেমিকার মামলা
সুইমিং পুলে শুয়ে কী বললেন শ্রাবন্তী?
চলছে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় : হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা
খিলক্ষেত থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুন্সী ছাব্বীর আহম্মদ বলেন, নদী ভরাট নিয়ে আমরা বিআইডব্লিউটিএ থেকে একটা এজাহার পেয়েছি। এর ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু হয়েছে। মামলা নম্বর ২৪, তারিখ ২৪-১০-২০২১। তদন্ত করে এ ব্যাপারে বলা যাবে।
এদিকে গতকাল অভিযান চালানো ওই স্থানে সরেজমিন দেখা যায়, নদীর মধ্যে এখনো বালু ভর্তি অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে পাঁচটি বাল্কহেড। সীমানা পিলার থেকে নদীর দিকে অন্তত ১০০ ফুট পর্যন্ত বালু ভরাট করা হয়েছে। সেখানে লাগানো হয়েছে ‘ক্রয়সূত্রে এই সম্পত্তির মালিক প্রাণ-আরএফএল গ্ৰুপ’ লেখা সাইনবোর্ড। এছাড়া প্রাণ-আরএফএল’র পুরনো কিছু নিরাপত্তা চৌকি, রেডিমিক্স ও কংক্রিট ব্লক ফ্যাক্টরি এবং গোডাউনের একাংশ সীমানাপিলার ছাড়িয়ে চলে এসেছে নদীর দিকে।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, নদী দখল-দূষণ মুক্ত করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। ঢাকার চার পাশে প্রবাহমান বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদী দখল, দূষণমুক্ত করা ও মৃতপ্রায় নদীগুলোকে উদ্ধারে হাইকোর্টের বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনার আলোকে জেলা প্রশাসক, বিআইডব্লিউটিএ এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহ সুষ্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেছে। এর আগেও আমরা বালু নদীতে অভিযান চালিয়েছি। পুনর্দখল ঠেকাতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
news24bd.tv/এমি-জান্নাত