আমরা আনন্দবাজারকে আনন্দবজর বলে ডাকি

আমরা আনন্দবাজারকে আনন্দবজর বলে ডাকি

অনলাইন ডেস্ক

আলেকজান্ডারের সাথে আফগানিস্তানের একটা ঐতিহাসিক সম্পর্ক আছে। আড়াই হাজার বছর আগে আলেকজান্ডার ভারতবর্ষ আক্রমণ করতে এসেছিলেন, যখন তখন প্রথম ব্যাক্ট্রিয়াতে আক্রমণ করে জয় করেন। ব্যাক্ট্রিয়া হচ্ছে আজকের আফগানিস্থানের বলখ প্রদেশ।

আফগানিস্তানের চৌত্রিশটা প্রদেশের একটা হচ্ছে বলখ প্রদেশ।

ব্যাক্ট্রিয়ার রাজা ছিলেন তখন ওয়াখাশেরিদ। পশ্চিমারা এই পার্সিয়ান নাম উচ্চারণ করে অক্সিয়ারটেস বলে। এর প্রতিদান অবশ্য আফগানেরা দিয়েছে। তারাও আলেকজান্ডারকে ডাকে সিকান্দার শাহ বলে।
এই যেমন ধরেন, কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা আমাদের গুলশানকে গুলশন লেখে বলে আমরা আনন্দবাজারকে আনন্দবজর বলে ডাকি।

যাই হোক, ওয়াখাশেরিদ পরাজিত হলেও তিনি ছিলেন আলেকজান্ডারের শ্বশুর। ওয়াখাশেরিদের কন্যা রুখসানাকে বিয়ে করেছিলেন আলেকজান্ডার। ব্যাক্ট্রিয়ার রমণীরা নাকি অপূর্ব সুন্দরী হতেন সেই সময়ে। ব্যাক্ট্রিয়ার আরো একটা সুনাম ছিল তা হচ্ছে, ব্যাক্ট্রিয়ার রাজাদের প্রচুর সোনাদানা ছিলো। এই নিয়ে নানা গল্প কথা চালু ছিলো কারণ সেই সোনাদানা তো কেউ দেখেনি কখনো। রুডিয়ার্ড কিপলিং এ নিয়ে একটা কাহিনী লিখেছেন যার উপজীব্য ছিল ব্যাক্ট্রিয়ার সোনাদানা। কাহিনীটার নাম দ্য ম্যান হু উড বি কিং।
 
তবে আশ্চর্য ব্যপার হচ্ছে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের কয়েক মাস আগেই এই সোনাদানার একাংশ খুঁজে পাওয়া যায়। বলখের জওজযান বলে একটা জায়গা আছে সেখানে ব্যাক্ট্রিয়ার রাজাদের কবর ছিলো। সেই কবর খুড়ে পাওয়া যায় বহুমূল্য সব সোনাদানা আর জহরত, সেই সাথে প্রাচীন স্বর্ণ মুদ্রা। সেগুলো কাবুল যাদুঘরে স্থান পায়।  
আফগানিস্তানের কমিউনিস্ট জামানায় পশ্চিমে একটা গুজব ছিল যে এই সোনাদানা সোভিয়েত ইউনিয়নে পাচার করা হয়েছে। এই গুজব থেকে বাঁচার জন্য নজিবুল্লাহ ব্যাক্ট্রিয়ার সম্পদ নিয়ে কাবুলে বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য একটা প্রদর্শনীর আয়োজন করে। তার ছয় মাস পরেই নজিবুল্লাহর পতন হয়। কিন্তু অবাক বিষয় ব্যাক্ট্রিয়ার সোনাদানা আর খুঁজে পাওয়া যায়না।
 
২০০১ সালে তালেবানদের প্রথম সরকারের পতন হলে কয়েকজন বর্ষিয়ান আফগান আর্কিওলজিস্ট বলেন, তারা নজিবুল্লাহকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে ব্যাক্ট্রিয়ার সম্পদ জাদুঘরে না রেখে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে, ব্যাংক অফ আফগানিস্তানের যে গোপন ভল্ট আছে সেখানে রাখতে। নজিবুল্লাহ তাই করেন। কারণ এই আর্কিওলজিস্টরা বুঝতে পেরেছিলেন নজিবুল্লাহর পতন হতে যাচ্ছে, আর এই অস্থির সময়ে এই সম্পদ লুট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর। এবং তাই হয়েছিলো। নজিবুল্লাহর পতনের পর দফায় দফায় জাদুঘর লুট হয়।

আরও পড়ুন:

এবার নারীরাও ব্যবহার করবে কনডম!

ডিভোর্স দেয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন, আত্মহত্যার চেষ্টা স্বামীর

মাকে পিটিয়ে হত্যা; ছেলের মৃত্যুদণ্ড 

প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের গোপন ভল্টে ঠিকই পাওয়া গেল ব্যাক্ট্রিয়ার সোনাদানা। আর্কিওলজিষ্টেরা মিথ্যা বলেনি। এখন আমেরিকা আর ইংল্যান্ড বললো যে, এই সোনাদানা আফগানিস্তানে রাখা নিরাপদ নয় এটা সরিয়ে নিতে হবে আফগানিস্তানের বাইরে। পরে সবকিছু ঠিকঠাক হলে এগুলো ফেরত দেয়া হবে।
সেই সোনাদানা এখন পালা করে একেক দেশ রাখছে। দুই হাজার দশ সালে ইংল্যান্ডে ব্যাক্ট্রিয়ার সোনাদানা নিয়ে একটা প্রদর্শনীও হয়। এই সোনা কী আফগানরা কখনো ফেরত পাবে?

সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়।

news24bd.tv/এমি-জান্নাত