আসছে ভয়ানক সৌরঝড়, ভেঙে পড়তে পারে ইন্টারনেট যোগাযোগ

আসছে ভয়ানক সৌরঝড়, ভেঙে পড়তে পারে ইন্টারনেট যোগাযোগ

অনলাইন ডেস্ক

প্রায় ১০০ বছর পর ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ের (সোলার স্টর্ম)  মুখোমুখি হতে যাচ্ছে পৃথিবী। এতে বিশ্বের সকল ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। আর এটি কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ধরনের সৌরঝড়কে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘করোনাল মাস ইজেকশান (সিএমই)’।

যা গোটা সৌরমণ্ডলের পক্ষেই হয়ে ওঠে অত্যন্ত বিপজ্জনক।

আমেরিকার আরভিনে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই অশনিসঙ্কেত দিয়েছে।

সৌরঝড় কী?
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, সৌরঝড়ের নাম হলো ‘করোনাল ম্যাস ইজেকশন’। সৌরঝড়ের কারণে সূর্য থেকে তীব্র চৌম্বকীয় কণার নিঃসরণ হয়।

আর এই কণাগুলো ঘণ্টায় কয়েক মিলিয়ন কিলোমিটার বেগে ছুটে বেড়ানোর ক্ষমতা রাখে। যা ১৩ ঘণ্টা থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। তবে পৃথিবীর পরিমণ্ডল কণাগুলো থেকে রক্ষা করে আমাদের। এক্ষেত্রে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও তীব্র বৈদ্যুতিক তরঙ্গ প্রবাহিত হওয়ার ফলে মানুষের তৈরি অবকাঠামোগুলোর ক্ষতি করার সম্ভাবনা থাকে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৮৫৯ ও ১৯২১ সালে আধুনিক এই পৃথিবীতে এমন সৌরঝড় হয়েছিল। তাই বলা যেতে পারে, ১০০ বছর পর ফের এমন ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে পৃথিবী। এর আগে ১৯২১ সালে সৌরঝড়ে পৃথিবীর যে ক্ষতি হয়েছিল তা অকল্পনীয়। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যার নাম ‘ক্যারিংটন এফেক্ট’। তখন ঝড়ের কবলে পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বিশালাকৃতির চৌম্বক ক্ষেত্রে বড় বড় ফাটল ধরেছিল। এসবের ফাঁকা জায়গা দিয়ে বিষাক্ত সৌরকণা আর মহাজাগতিক রশ্মি প্রবেশ করেছিল।

 সোলার, সৌর ঝড়

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, পৃথিবীর উপর এমন ভয়ঙ্কর সৌরঝড় (সিএমই)-এর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রতি দশকে ১ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ। এবারও তেমনই একটি সৌরঝড়ের কবলের শিকার হতে পারে পৃথিবী। এর সম্ভাবনাই বেশি। তবে এবার ১৮৫৯ ও ১৯২১ সালের মতো তীব্র না হলেও ১৯৮৯ সালের মার্চে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা সিএমইর ঝাপটায় কানাডার পুরো কুইবেক প্রদেশে টানা ৯ ঘণ্টা ‘ব্ল্যাক আউট’ হয়ে যাওয়ার মতো হতে পারে।

আরও পড়ুন:

৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আজ

যেসব শর্তে জামিন পেলেন কিং খানপুত্র আরিয়ান

ফরজ গোসল অবহেলার শাস্তি


এই মহাজাগতিক ঘটনার ফলে কিছুক্ষণের জন্য হলেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে গোটা ভারতীয় উপমহাদেশ, দক্ষিণ মেরু, উত্তর মেরু, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপের যাবতীয় রেডিয়ো যোগাযোগ ব্যবস্থা। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বিশ্বের একাংশের বিদ্যুৎসেবা। ব্যাহত হতে পারে জিপিএস ও মোবাইল সেবাও।

news24bd.tv

সৌরঝড় কেন হয়?
বিগত ৩০ বছরে সমগ্র বিশ্বে দ্রুত সময়ে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হয়েছে। এই সময়ে অনেক কম সক্রিয় ছিল সূর্য। তবে বর্তমান অবকাঠামো শক্তিশালী কোনো সৌরঝড়ে টিকতে পারবে কিনা তা নিয়ে এখনো বিস্তর কোনো গবেষণা হয়নি।
 
গবেষণার একজন লেখক যুক্তরাষ্ট্রের আরভাইনের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার কম্পিউটার বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক সংগীতা জ্যোতি জানিয়েছেন, কম ও বেশি সক্রিয়তার চক্রের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হয় সূর্য। প্রতি ১১ বছরে আবর্তিত হয়ে থাকে এই চক্র। এছাড়া ১০০ বছরের আরেকটি চক্র রয়েছে সূর্যের। বিশ্বে ইন্টারনেট অবকাঠামোর উন্নয়নের সময়ে সূর্য কম সক্রিয় ছিল। তবে ১০০ বছরের চক্রে শিগগিরই পৌঁছাবে।

news24bd.tv/আলী