দশ-বারোটি দেশের সাথে প্রতিযোগিতায় আমাদের অবস্থান আট-নয় নম্বরে

দশ-বারোটি দেশের সাথে প্রতিযোগিতায় আমাদের অবস্থান আট-নয় নম্বরে

Other

দুনিয়াতে ক্রিকেট খেলে কয়টা দেশ? —সর্বোচ্চ পনেরােটা। ক্রিকেট দুনিয়ায় সবচেয়ে জনবহুল দেশ হলো ভারত। সুতরাং ক্রিকেট খেলাটা টিকে আছে এই ভারতকে দিয়েই। ভারত থাকায় বাণিজ‍্যটা টিকে আছে।

ভারত ক্রিকেট না খেললে, ভবিষ‍্যতে এই খেলার অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।

একটা দেশের জন‍্য, জাতির জন‍্য ক্রীড়া খুব প্রয়োজনীয়। সেটা ক্রিকেট হোক কিংবা দাঁড়িয়াবান্ধাই হোক। বিনোদন, শরীর চর্চা—সবকিছুর বিবেচনাতেই ক্রীড়া প্রয়োজন।

কিন্তু কোন নির্দিষ্ট খেলাকে যদি জাতির আত্মপরিচয়ের একমাত্র বাহক, গৌরবের একমাত্র ধারক কিংবা জাতীয় আবেগের কেন্দ্রবিন্দু ভাবা হয় তাহলে সেটা ভয়ংকর! জাতীয় জীবনে আমাদের যেহেতু প্রাপ্তি নেই বললেই চলে, তাছাড়া উল্লাসের মতো যেহেতু অন‍্যকিছু নেই, সুতরাং অন্ধের যষ্ঠি ক্রিকেট নিয়ে মাতামাতি হয়। হবে।

কিন্তু এই দশ-বারোটি দেশের সাথে প্রতিযোগিতায় আমাদের অবস্থান আট-নয় নম্বরে। অথচ ক্রিকেটে টাকা কিন্তু কম খরচ হয় না। আফগানিস্তান বিশ বছর ধরে যুদ্ধ করেও যদি আমাদের মতো পারফর্ম করে, তাহলে বুঝতে হবে সমস‍্যাটা সাধারণ নয়।

বাংলাদেশের পনের-ষোল বছরের ছেলে-মেয়েরা যে বিশ্ব গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেয়, সেখানে প্রায় শতাধিক দেশ অংশগ্রহণ করে। সেই প্রতিযোগিতায় ওরা স্বর্ণ পদক পায়। রৌপ‍্য পায়। অথচ ওদের ট্রেনিং করানোর মতো যথেষ্ট টাকা নেই। ওদেরকে কোচ দেয়ার মতো বিদেশ থেকে কাউকে আনা যায় না। ক‍্যাম্পিং করার জন‍্য পর্যাপ্ত টাকা পাওয়া যায় না। সেই প্রতিযোগিতায় আমেরিকার স্টুডেন্টরা থাকে, ইউরোপের প্রায় সবগুলো দেশের স্টুডেন্ট থাকে। চীন-জাপান-ভারতের স্টুডেন্টরা থাকে। অথচ আমাদের স্টুডেন্টরা তেমন কোন আহামরি সুবিধা না পেয়েই বিশ্ব জয়ের চেষ্টা করছে। অথচ তাদেরকে দেখার কেউ নেই।

ইসরাইল ক্রিকেট খেলে না। দ. কোরিয়া ক্রিকেট খেলে না। ফুটবলেও যে তারা বিশ্বসেরা তেমন নয়। কিন্তু তারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবনের জাত। এত ক্ষুদ্র জাতি কি করে পৃথিবীতে উদ্ভাবনে শ্রেষ্ঠ হয়ে যায়—সেটা কি আমরা কখনো ভাবি? সিঙ্গাপুর ক্রিকেট খেলে না। তাতে কি সে দেশের কিছু আসে যাচ্ছে? এত ক্ষুদ্র একটা দেশ অথচ এশিয়ার মধ‍্যে সবচেয়ে ইনোভেটিভ দেশ!

মহামারির দুই বছরে আমরা নিজেরা একটা টেস্টিং মেথোড উদ্ভাবন করতে পারলাম না, টেস্টিং মেথোড ফ্রি করতে পারলাম না—এটা ভাবলে লজ্জাই লাগে।

ক্রিকেট নিয়ে দেশের নীতি-নির্ধারকদের নির্বোধ শিশুসুলভ আচরণটা অদ্ভুত লাগে। একটা খেলায় ভালো করলেই, নেতা-নেত্রীরা গিয়ে পর্যন্ত আবেগের ঢল নামিয়ে দেয়। অথচ পৃথিবীর দুইশ দেশ এই খেলা নিয়ে কোন খোঁজই রাখে না।  

কিন্তু দেশে যে একটা বিশ্বমানের ইউনিভার্সিটি নেই, বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান নেই—সে নিয়ে কোন পরিকল্পনা নেই। ইনোভেশনে যে আমরা আফগানিস্তানের কাতারে পড়ে আছি, সে নিয়ে কোন দুঃখবোধ নেই।  

আরও পড়ুন:

তালেবান নিয়ে প্রশ্নে কড়া জবাব দিলেন মোহাম্মদ নবী


news24bd.tv/ নকিব