পায়ের ওপর পা তুলে বসায় ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যা!

পায়ের ওপর পা তুলে বসায় ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যা!

পায়ের ওপর পা তুলে বসায় ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যা!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকায় নিম্নবর্ণের দুজন ব্যক্তিকে নির্যাতন করেছিলেন উচ্চবর্ণের হিন্দুরা। এ ঘটনা থানায় জানালে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর উচ্চবর্ণের হিন্দুরা দলবেঁধে হামলা করে নিম্নবর্ণের তিনজনকে হত্যা ও ছয়জনকে জখম করেন।

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের শিভগাঙ্গা জেলার কাচানাথাম গ্রামে গত ২৮ মে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে রুশ সংবাদ সংস্থা স্পুতনিক।

মাদুরাইভিত্তিক এনজিও এভিডেন্সের পরিচালনা প্রধান এ কাথিরের বরাতে ঘটনার বিবরণ জানিয়েছে সংবাদ সংস্থাটি।

এতে বলা হয়, গত ২৩ মে কারুপাসামি মন্দিরের সামনে থেইভেনথিরান ও প্রভাকারান নামে দুই দলিত হিন্দু পায়ের ওপর পা তুলে বসেছিলেন। এ নিয়ে উচ্চবর্ণের দুই হিন্দু আপত্তি তোলেন।

নিম্নবর্ণের হয়েও পায়ের ওপর পা তুলে বসায় উচ্চবর্ণের হিন্দুদের সম্মানহানি হয়েছে অভিযোগ করে থেইভেনথিরান ও প্রভাকারানকে অপদস্থ করা হয়।

এ ঘটনায় উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে দলিতরা থানায় অভিযোগ করেন। তারা অভিযোগে চান্দ্রাকুমারা নামের একজনের কথা উল্লেখ করলে তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

এর পর চান্দ্রাকুমারার ১৯ বছর বয়সী ছেলে সি সুমন প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে প্রায় ২০ সহযোগীকে নিয়ে দলিতদের বাড়িতে হামলা চালায়।

২৮ মে রাত ৯টার পর ওই হামলা চালানোর সময় দলিতদের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। এর পর তাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে হামলাকারীরা।

জানা গেছে, এ হামলায় অন্তত নয়জন দলিত আহত হয়েছেন। এর মধ্যে হাসপাতালে নেয়ার পথে দুজন মারা যান। আরেকজন চিকিৎসাধীন বৃহস্পতিবার হাসপাতালে মারা যায়।

ভারতের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৩৫ কোটি। এর মধ্যে ১৬ শতাংশই নিম্নবর্ণের দলিত হিন্দু। তারা নিয়মিত সহিংসতা, ধর্ষণ ও ভূমিদস্যুতার শিকার হচ্ছে।

তামিলনাড়ুর দলিতরা ‘আদি দ্রাবিড়’ নামে পরিচিত। তাদের ‘অস্পৃশ’ মনে করা হয়। নিয়মিত নিপীড়নের শিকার হলেও তাদের পক্ষে খুব সময় পুলিশ সক্রিয় থাকে।

রাজ্যটিতে অস্পৃশতার ধারণা দূরীকরণে কর্মরত সমাজকর্মী চেল্লাকান্নু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ডিএনএকে বলেছেন, যে কাচানাথাম গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটেছে সেখানে দলিতদের ৩০টি ও উচ্চবর্ণের পাঁচটি পরিবারের বসবাস। তার পরও গ্রামটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলিতরা শোষণ- বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। তাদের ১৫০ একর কৃষিজমি থাকলেও তাতে সেচ দেয়ার জন্য তাদের নির্ভর করতে হয় উচ্চবর্ণের হিন্দুদের মর্জির ওপর।

চেল্লাকান্নুর মতে, পুলিশ আরও আগে ব্যবস্থা নিলে তিনজন দলিতকে প্রাণ হারাতে হতো না।

 

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কেআই)

সম্পর্কিত খবর