চমেক ছাত্রলীগের ‘চাঁদাবাজি’ থেকে বাদ নেই অ্যাম্বুলেন্সও!

চমেক ছাত্রলীগের ‘চাঁদাবাজি’ থেকে বাদ নেই অ্যাম্বুলেন্সও!

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ক্যাম্পাসে গত শুক্রবার চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ মারামারিতে লিপ্ত হয়। দু পক্ষের এই সংঘর্ষে  মেডিকেল কলেজের দুই ছাত্র আহত হন। এর জের ধরে পরদিন শনিবার সকালে ক্লাসে যাওয়ার সময় হামলা করা হয় এক পক্ষের অনুসারী মাহাদি জে আকিবকে। দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্র বর্তমানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

  

এ ব্যাপারে পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান বলেন, আধিপত্য বিস্তারের জন্য মারামারিতে লিপ্ত হয় দুই গ্রুপ। এ ছাড়া চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ আছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।

 সংঘাতের কারণ চাঁদাবাজি

চমেক  ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিবাদমান পক্ষগুলোর আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ের মূলে রয়েছে চাঁদাবাজি।

মূলত এ নিয়েই সংগঠনটির দুটি পক্ষ বারবার মারামারিতে লিপ্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল থেকে রোগী ও লাশ পরিবহনে প্রতিটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স থেকে মাসে ৭০০ টাকা তোলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এখন প্রায় ১০০টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে।  

জানা গেছে, চমেক হাসপাতাল এলাকার কিছু ওষুধের দোকান দালালনির্ভর ব্যবসা করে। মেডিকেলের পূর্ব গেটের ২৫টি দোকান দীর্ঘদিন ধরে এই দালালনির্ভর ব্যবসা করে আসছে বলে অভিযোগ। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দোকানগুলোর পক্ষে দালালেরা কাজ করেন। আবার দালালদের নিয়ন্ত্রণ করে কলেজ ছাত্রলীগ।  এসব দালালের নিয়ন্ত্রণ চমেক ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে। সেই ২৫  ওষুধের দোকানে ৫৮ জন দালাল রয়েছে। কোন দিন কোন কোন দোকানের সিরিয়াল আসবে, তা নির্ধারণের জন্য লটারি করেন তারা। এ জন্য ২৫ দোকানের প্রত্যেককে সপ্তাহান্তে দুই হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। এভাবে মাসে দুই লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়।

ছাত্রলীগের পক্ষ দুটির একটি চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক ধরে এই পক্ষ কলেজ ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।

তবে তিন বছর ধরে নাছিরপন্থীদের বাইরে ছাত্রলীগের আরেক পক্ষ সক্রিয় রয়েছে। পক্ষটি শিক্ষা উপমন্ত্রী ও চমেক হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী। এই দুই পক্ষ গত দুই বছরে ক্যাম্পাসে অন্তত চারবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে। দুপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে আসছে।

আরও পড়ুন:

ঘুষ নিয়ে চশমা ফিরিয়ে দিল বানর, ভিডিও ভাইরাল

প্রাণ গেল ভাই-বোনসহ একই পরিবারের চার শিশুর!

জান্নাতে যাওয়ার সহজ নেক আমল 


প্রসঙ্গত, শনিবার রাতের সেই ঘটনার মীমাংসা করতে পরদিন(৩০ অক্টোবর) সকালে দুই গ্রুপের নেতাদের নিজের কক্ষে ডাকেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার। ওই সময়ে ৬২ ব্যাচের আরও কয়েকজনসহ ক্যাম্পাসে ছিলেন মাহাদী জে আকিব। ঠিক সেই সময় আগের রাতের হামলার শোধ নিতে তাদের ধাওয়া করে আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারীরা। দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় একপর্যায়ে সিএনজির সাথে ধাক্কা লেগে রাস্তায় পড়ে যান আকিব। এ সময় তাকে ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর করে আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারীরা। আকিবের রাজনৈতিক সহকর্মীদের অভিযোগ, তাকে কাঁচের ভাঙ্গা বোতল দিয়ে মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করার পাশাপাশি ক্ষুর দিয়েও আঘাত করা হয়।

হামলায় গুরুতর আহত হলে তাৎক্ষণিক মস্তিস্কে অপারেশন করতে হয় আকিবের। এরপরই তাকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে আইসিইউতে রাখা হয়। একদিন পর রোববার (৩১ অক্টোবর) তার ভেন্টিলেটর সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়।

news24bd.tv/আলী