কমন কোল্ড: শীতে সর্দি-জ্বরে করণীয়

কমন কোল্ড: শীতে সর্দি-জ্বরে করণীয়

অনলাইন ডেস্ক

ভ্যাপসা গরমে ঠাণ্ডা কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। নাক দিয়ে ক্রমাগত পানি পড়া, নাক বন্ধ, হাঁচি-কাশি, মাথাব্যথা, হালকা জ্বর, কাঁপুনিই এর প্রধান লক্ষণ। আবহাওয়ার আকস্মিক ও দ্রুত পরিবর্তন মিলিয়ে প্রকোপটা এ সময়ই বেশি হয়।   করোনার সময় এসব উপসর্গ আতঙ্কের হলেও, পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাদের কারও কারও করোনা ও ডেঙ্গিু ধরা পড়লেও অধিকাংশই ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত।

প্রায় ঘরে ঘরে এখন এমন রোগী।

শীত আসছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এ সময় অনেকেই সর্দি-জ্বরে ভোগেন। চিকিৎসকদের কাছে সমস্যাটি ‘কমন কোল্ড’ হিসেবে পরিচিত।

দুইশ’র বেশি ভিন্ন ভিন্ন ভাইরাস সর্দি-জ্বরে ভোগাতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সর্দি-জ্বর হয় রাইনোভাইরাস দ্বারা।

সর্দি-জ্বরের উল্লেখযোগ্য উপসর্গসমূহ হলো: 
নাক থেকে পানি পড়া, জ্বর, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, শরীর ম্যাজম্যাজ করা ও কাশি-হাঁচি। এসব উপসর্গ হলো ইমিউন সিস্টেমের প্রাকৃতিক নিরাময় প্রক্রিয়ার অংশ। চিকিৎসা না করলেও এগুলো সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে দূর হয়ে যায়। কিন্তু ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হলে, অ্যাজমা বা অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রীয় সমস্যা থাকলে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।  

অনেকে সর্দি-রকে গুরুত্ব দিতে চান না। কিন্তু এ সময় ঘরে থাকার প্রয়োজন আছে। এ সময় বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম নিলে শরীরের বিস্ময়কর উপকার হয়। শরীরের পক্ষে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করা সহজ হয়। চিকিৎসকদের মতে, পর্যাপ্ত ঘুম হলো সর্দি-জ্বরের সর্বোত্তম ওষুধ। সাইনাস প্রেশার কমাতে মাথার নিচে অতিরিক্ত বালিশ দিন। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস আরো সহজ হবে ও কাশির প্রবণতা কমবে।   

সর্দি-জ্বরে ভুগলে গরম হার্বাল চা, লেবু পানি পান করলে অথবা তরল জাতীয় খাবার খেলে ভালো অনুভব করবেন। গরম পানীয় নাকের অস্বস্তি কমায়, শরীরে পানিশূন্যতা এড়ায় ও গলা ব্যথায় স্বস্তি দেয়। চিকেন স্যুপ শ্লেষ্মা পাতলা করে ও শ্বাসতন্ত্রের প্রতিবন্ধকতা দূর করে। হার্বাল চা বা লেবু পানিতে মধু মেশালে কাশির প্রবণতা কমে যাবে ও রাতে ভালো ঘুম হবে। এটা মাথাব্যথা ও দুর্বলতা কমাতেও সাহায্য করে।

লবণ পানির গড়গড়া গলা আর্দ্র করবে এবং সাময়িক স্বস্তি দেবে। গলা ব্যথার পাশাপাশি গলার ফোলাও কমবে। দিনে কয়েকবার করতে হবে। মাঝেমধ্যে নাক ঝাড়ুন। এতে নাক পরিষ্কার থাকবে ও শ্বাসতন্ত্রীয় প্রতিবন্ধকতা এড়ানো যাবে। তবে এ কাজে কঠোর হবেন না, নমনীয়তা বজায় রাখুন। এ সময় টিস্যু ব্যবহার করতে হবে এবং হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।  

হিউমিডিফাইয়ার চালু করলে ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা যোগ হবে এবং শুষ্ক সাইনাস স্বস্তি পাবে। বাতাসের বাড়তি আর্দ্রতায় শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ হবে। জ্বর বেশি না থাকলে কুসুম গরম পানিতে গোসল করলেও উপকৃত হবেন। এতে নাকের প্রতিবন্ধকতা কমবে ও মাংসপেশি শিথিল হবে।

সর্দি-জ্বরের স্থায়িত্ব ১০ দিনের বেশি হলে অথবা উপসর্গের তীব্রতা বিপজ্জনক মনে হলে চিকিৎসকের দ্বরস্থ হতে হবে।  

প্রতিকারের উপায়
* খেতে হবে তাজা ফলের জুস।
* ঘুম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কাজেই ঠান্ডা বা সর্দিজ্বরের সময় বিশ্রাম নিলে বা বেশি ঘুমালে দ্রুত আরোগ্য লাভ সম্ভব।

* ঘরোয়া দাওয়াই হিসাবে এ সময় আদা-লেবুমিশ্রিত রং চা, আদা ও লেবুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খেতে পারেন। আরামবোধ করবেন। আঙুরের রসও কাশি দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।

* ঋতু পরিবর্তনের এ সময় শরীরে প্রচুর পানি প্রয়োজন। শরীর ডিহাইড্রেটেড হলেই গায়ে ব্যথা, মাথাধরা শুরু হয়। সুস্থ-অসুস্থ সবাইকেই তাই এ সময় বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। সেইসঙ্গে

* লেবু, কমলা, জাম্বুরা, আমড়াসহ বিভিন্ন টকজাতীয় ফল জ্বর-সর্দি-কাশিতে উপকারী।

news24bd.tv/আলী