একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জোব্বাধারী থাকবে, শর্টস পরা পোলাপানও ঘুরবে

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জোব্বাধারী থাকবে, শর্টস পরা পোলাপানও ঘুরবে

Other

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে দিয়ে একদল 'জোব্বাধারী' হেটে যাচ্ছেন, এটা নিয়ে আপনাদের অনেকের হা হুতাশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় প্রগতিশীলতার চারণভূমি, এখানে এসে মোল্লারা দখল করে নিচ্ছে, এটা যদি আপনার হা হুতাশের কারন হয় তাহলে বলতে হয়, আপনি আসলে প্রগতিশীলতাই বুঝতে পারেন নি।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জোব্বাধারী থাকবে, শর্টস পরা পোলাপানও ঘুরবে; এই বৈচিত্রকে ধারন করাটাই প্রগতিশীলতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদে কেউ সারারাত এবাদত করবে, আবার অন্য কেউ টিএসসিতে শুধু গানবাজনাই করবে, কেউ আবার এই দুই দলে নেই তারা জিমে গিয়ে শরীর চর্চা করে দিন কাটাবে, পড়ুয়া লোকজন হয়তো লাইব্রেরির বাইরের দুনিয়াটাই চিনবে না-এরকম নানা ধরনের শিক্ষার্থীর সমাহার একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে।

দেখতে হবে যে এরা যাতে কেউ কারো স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করে। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, ভিন্ন মত ও পথের সম্মিলনই আরাধ্য।

আপনি যদি মনে করেন যে জোব্বাধারীরা এসে এখানে বাড়াবাড়ি করে অন্যের ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে, তাহলে আজকে আপনি যে জোব্বাধারীদের ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছেন-সেটাকেও দোষ হিসেবে দেখতে হবে।
অর্থনীতির পরিবর্তনের কারনে এখন বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষের মধ্যে উচ্চশিক্ষা গ্রহনের সুযোগ আরো বেশি সৃষ্টি হয়েছে, মধ্যবিত্ত শ্রেনীর একক আধিপত্য এবং তাঁদের সাংস্কৃতিক বিশ্বাসই একমাত্র চর্চিত হবে, সেই দিন আর থাকবে না।

সব ছাত্রই আমাদের দেশের অংশ, তাঁদের সমান অধিকার ও সম্মান থাকতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মাদ্রাসা ছাত্র যদি প্রথম হয়, তাহলে সেটার জন্য মাদ্রাসাকে দোষারোপ তো করা যাবেই না, বরং খুশি হওয়া উচিত যে জনগোষ্ঠির যারা মাদ্রাসা শিক্ষা পেয়েছেন, তাঁদের মাঝেও যে মেধাবী মানুষ আছেন, সেটা প্রমানিত হলো। আমাদের মুখস্ত নির্ভর যে শিক্ষাব্যবস্থা সেখানে মাদ্রাসা ছাত্র আর কলেজ ছাত্রের মাঝে আদৌ কোনো ব্যবধান খুঁজতে যাওয়া বাতুলতা।

আরও পড়ুন

প্রায় দুই মাস ধরে লা পালমা দ্বীপের অগ্নুৎপাত চলছে

আরবী পড়তে গিয়ে যৌন নিপীড়নের শিকার শিশু!

সম্পূর্ণ নতুন আলোয় সৌদির পর্যটন স্থান দেখার সুযোগ

স্বল্প খরচে ৪০ হাজার কর্মী নেবে রোমানিয়া

একদিন যে মাদ্রাসা ছাত্রদেরকে ভেবেছিলেন যে দুনিয়াদারির সাথে সংশ্রবহীন, তাঁরাও দুনিয়াদারির জ্ঞান লাভ করে জীবনযাপন করতে পারবেন, তাঁদের বুদ্ধিবৃত্তিক কন্ট্রিবিউশন করতে পারবেন-এটি একটি সুখবর।

আমার কাছে জরুরি প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের সবার জন্য একই মানের ও কারিকুলামের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা। এবং একই সাথে বুদ্ধি ও চিন্তা শক্তি বাড়ানোর মতো করে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো, শুধু নোট মুখস্ত করা আর সাজেশন দেখে দেখে পড়া এই শিক্ষায় দুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে চলা যাবে না।

শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবার জন্য উন্মুক্ত থাকুক, পোশাক-ধর্মবিশ্বাস-আচার-শ্রেণী এসব যেন মানুষের সম্মান  হ্রাস বৃদ্ধির নিয়ামক না হয়।

লেখাটি আরিফ জেবটিক ফেসবুক থেকে নেওয়া।  (সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

news24bd.tv/এমি-জান্নাত