ক্রাইম পেট্রোল শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে দুই স্কুলছাত্র

ক্রাইম পেট্রোল শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে দুই স্কুলছাত্র

অনলাইন ডেস্ক

টাকার জন্যে বগুড়ার গাবতলীতে সানজিদা খাতুন (৪) নামে এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের। তারা হলো- নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়াদ (১৫) এবং ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী শুভর (১৪)।

হত্যার শিকার ওই শিশুর লাশ শনাক্তে প্রথমে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়াদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার দেওয়া তথ্য মতে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী শুভর বাড়িতে রাখা স্টিলের বাক্স থেকে সানজিদার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত সানজিদা গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের লাঠিমার ঘোন উত্তরপাড়া গ্রামের রাজমিস্ত্রি শাহীন প্রামাণিকের মেয়ে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত রিয়াদ লাঠিমার ঘোন উত্তরপাড়া গ্রামের প্রবাসী উজ্জ্বলের ছেলে আর সাজু প্রামাণিকের ছেলে শুভ।

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে নিহত সানজিদার লাশ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর দুই কিশোর শিশু সানজিদাকে অপহরণ এবং হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল জানিয়েছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শুভ জানিয়েছে, তার খালার বিয়ে উপলক্ষে নতুন জামা-কাপড় কেনার টাকার জন্য তারা সানজিদাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করে।

তিনি বলেন, দুই কিশোর জানিয়েছে, তারা ভারতীয় বেসরকারি টিভি চ্যানেলের (সনি আট) ক্রাইম পেট্রোল অনুষ্ঠান দেখে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপহরণের কৌশল রপ্ত করে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার দুপুরে একটি মোবাইল ফোন থেকে স্থানীয় এক নারীর মোবাইল ফোনে কল করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। ওই নারী বিষয়টি নিখোঁজ সানজিদার বাবাকে জানান। এরপর সানজিদার বাবা সেই নম্বরে যোগাযোগ করে। কয়েকবার কথা বলার পর অপহরণকারীরা টাকার অঙ্ক কমিয়ে ৫০ হাজার দাবি করে এবং বুধবার রাত ৭টার দিকে টাকাটা গ্রামের একটি কালভার্টের নিচে রেখে আসতে বলে। পাশাপাশি বিষয়টি পুলিশকে না জানানোর জন্যও হুঁশিয়ারী দেওয়া হয়।

এরপর সানজিদার বাবা শাহীন প্রামাণিক পুরো ঘটনাটি গাবতলী থানায় জানায়। পুলিশ আগে থেকেই সেই কালভার্টের পাশে ওঁত পেতে থাকে। এরপর রাত ৭টার দিকে এক ব্যক্তিকে ওই কালভার্টের কাছে আলো দিয়ে কিছু খুঁজতে দেখে পুলিশ ও সানজিদার স্বজনরা সেখানে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে ধরে ফেলে। পরে ওই ব্যক্তি একই গ্রামের প্রবাসী উজ্জ্বলের ছেলে রিয়াদ। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ রাত ১১টার দিকে একই গ্রামে সাজুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি স্টিলের বাক্সের ভেতর থেকে নিহত সানজিদার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে। পরে ওই রাতেই পাশের কদমতলী গ্রামে নানার বাড়ি থেকে পুলিশ রিয়াদের সহযোগী শুভকেও গ্রেপ্তার করে।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল জানান, রিয়াদ নিজেকে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী দাবি করেছে। আর শুভ বলেছে, সে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। তিনি বলেন, ওই হত্যার ঘটনায় নিহত সানজিদার বাবা শাহীন প্রামাণিক বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে গাবতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামিকে আদালতে পাঠানো হবে।

আরও পড়ুন


নওগাঁয় নির্বাচনী সহিংসতায় আহত যুবকের মৃত্যু, এলাকায় আতঙ্ক

news24bd.tv এসএম