ভাববেন না কাউকে চাকরি দেয়ার ক্রেডিট নিতে লেখাটি লিখলাম

ভাববেন না কাউকে চাকরি দেয়ার ক্রেডিট নিতে লেখাটি লিখলাম

Other

অনেক বছর আগের কথা, চ্যানেল আই সিদ্ধেশ্বরীর অফিসের সিকিউরিটি পার হয়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নামতেই দেখি আমার সাভার স্কুলের এক সহপাঠী দাড়িয়ে। বন্ধুটি স্কুল জীবন থেকেই ঢাকার একটি পত্রিকায় স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে লেখালেখি করতো।

যাইহোক, অনেক বছর পর স্কুলের ক্লাসমেট পেয়ে খুব খুশি হলাম। জানতে চাইলাম এখানে কি করছিস? ও বললো অনেক দিন ধরেই টিভি প্রতিনিধি হওয়ার চেষ্টা করছি।

একজন সাব এডিটরের সাথেও ২/১ বার যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। এর আগেও দুইদিন এসেছি, কিন্তু সিকিউরিটি কিছুতেই ভিতরে ঢুকতে দেয় না। একবার যদি নিউজ ডিপার্টমেন্টে কারো সাথে কথা বলতে পারতাম! আমি জানি সিকিউরিটি ভেতরে ঢুকতে দিলেও নিউজ রুমে কারো রেফারেন্স ছাড়া বন্ধুটি ঢুকতে পারবে না। সিকিউরিটি রব কাকাকে বললাম আমার বন্ধু আমার সাথে ভিতরে যাবে।

কাকা হাসি মুখে অনুমতি দিয়ে দিলেন।  

তখন চ্যানেল আই এর হেড অফ নিউজ ছিলেন শাহ্‌ আলমগির ভাই। অসাধারণ ব্যাক্তিত্বের অধিকারী এই মানুষটি আমার গানকে ভালবাসতেন ও সন্তানের মত স্নেহ করতেন। তাই বন্ধুটিকে নিয়ে সরাসরি ঐ প্রথম আমি আলমগির ভাইকে কোন অনুরোধ করার জন্য তার রুমে গেলাম। পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললাম, এ আমার বন্ধু, আমরা এক স্কুলের ছাত্র। ওর সাংবাদিকতায় আগ্রহ আছে, কাগজে লিখে, প্রয়োজনীয় ট্রেনিং পেলে টিভি সাংবাদিকতায়ও অবশ্যই ভালো করবে। অন্তত ওর যোগ্যতা প্রমানের জন্য হলেও কিছুদিনের সুযোগ করে দিন। যদি ভালো করে রাখবেন, না হয় বিদায় করে দিবেন।  
শাহ্ আলমগির ভাই হাসিমুখে আমার কথা রাখলেন। আমার বন্ধুটি এখন বাংলাদেশের ওয়েল রিকগনাইজড সিনিয়র সাংবাদিক।

ভাববেন না কাউকে চাকরি দেয়ার ক্রেডিট নিতে লেখাটি লিখলাম। লিখলাম এই কারনে যে, আমি ঐদিন চাইলে বন্ধুটিকে পাশ কাটিয়ে এক কাপ চা খাইয়ে চলে যেতে পারতাম,কিন্তু তা করিনি। করিনি বলেই সে তার যোগ্যতা প্রমান করতে পেরেছে। আপনিও কারো মধ্যে ভালো কিছু করার সম্ভাবনা দেখলে সে আপনার অপরিচিত হলেও পা টেনে না ধরে সুযোগ করে দিন। সে তার নিজের যোগ্যতাতেই টিকে যাবে। নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আরও দশটা মানুষকে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী সুযোগ করে দিবে।

আরও পড়ুন:

পাকিস্তানকে সমর্থন করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে : মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

মাটির পাত্রে চা পান কি নিরাপদ? 

আমার ক্লাসমেটের সাথে ঐ দিনের পর এতো বছরেও কোনদিন বসে আড্ডা দেয়া হয়নি। সে কোনদিন আমাকে এক কাপ চা খাওয়ানোর সুযোগও পায়নি। কিন্তু আমি জানি, ও আজীবন আমাকে মনে রাখবে। যতবার ওর আমার উপকারের কথা মনে হবে, ততবার ও কাউকে না কাউকে উপকার কারবে। আপনার কতটা সফল সেটা বড় কথা নয়, অন্যের যোগ্যতা বা সাফল্যে খুশি হওয়া প্র্যাকটিস করুন।   
  
সংগত কারনেই স্কুলের বন্ধুটির নাম লিখলাম না।

লেখাটি প্রীতম আহমেদ- এর ফেসবুক থেকে নেওয়া (সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

 news24bd.tv/এমি-জান্নাত