কক্সবাজারে চলতি সপ্তাহে ৩টিসহ সারাদেশে ৭টি বন্যহাতির মৃত্যু

মাটি চাপা দেওয়া হচ্ছে মৃত হাতিকে

কক্সবাজারে চলতি সপ্তাহে ৩টিসহ সারাদেশে ৭টি বন্যহাতির মৃত্যু

Other

কক্সবাজারে হাতির আবাসস্থল উজাড়, চলাচলের করিডোরে চরমভাবে বাধাগ্রস্থ, খাদ্য সংকট ও মানুষের নির্মমতায় মারা পড়ছে বন্যহাতি। আবাসস্থল ছেড়ে লোকালয়ে হানা দেয়ায় বন্যহাতি ও মানুষের মধ্যে দ্বন্ধ তৈরী হচ্ছে। এ কারণে ফসল রক্ষায় বিদ্যুৎ শক ও গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে।

চলতি সপ্তাহে কক্সবাজারে ৩টিসহ সারাদেশে ৭টি বন্যহাতি মারা গেছে।

এক বছরে কক্সবাজার অঞ্চলে ১০টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। বনাঞ্চল দখল, বনাঞ্চলে চাষাবাদ আর হাতির দাঁত বিক্রির জন্য ধারাবাহিকভাবে হত্যা করা হচ্ছে হাতি। এমন ঘটনায় সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না থাকায় হাতি হত্যাকারিরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে।

সারাদেশের ২৬৮টি মহাবিপন্ন এশিয়ান হাতির দুই তৃতীয়াংশের বসবাস কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে।

কিন্তু কক্সবাজার ও পার্শ্ববর্তী বনাঞ্চলে রেললাইন, রোহিঙ্গা বসতি, বিভিন্ন প্রকল্প, অবৈধ জবরদখলসহ বিভিন্ন কারণে এসব হাতির নিরাপদ আবাসস্থল ধ্বংস, পর্যাপ্ত খাদ্যাভাব, চলাচলের করিডোর চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হয়েছে। যার কারণে এসব হাতি লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। এতে হাতি ও মানুষের মধ্যে দ্বন্ধ তৈরী হচ্ছে। এর মধ্যে অসাধু লোকজন হাতি ঠেকাতে নিষ্ঠুরভাবে গুলি ও বিদ্যুতের তার ব্যবহার করে হাতি হত্যায় মেতে উঠেছে। চলতি সপ্তাহে কক্সবাজারে ৩টিসহ সারাদেশে ৭টি বন্যহাতি মারা গেছে। এক বছরে কক্সবাজার অঞ্চলে ১০ টি হাতির মৃত্যু হয়েছে।

সর্বশেষ বন্যহাতিটি মারা হয়েছে ২১ নভেম্বর ভোররাতে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের গজালিয়ার সাতঘরিয়াপাড়া সংলগ্ন ক্লিব্বা নামক এলাকায়। উক্ত হাতিটি বিদ্যুৎতের ফাঁদ বসিয়ে হত্যার অভিযোগ করছেন বনবিভাগ।

মহাবিপন্ন এশিয়ান হাতিকে বিদ্যুৎ শক ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতারা।

কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদ সভাপতি দীপক শর্মা দীপু এবং এনভায়রনমেন্ট পিপল প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ জানান, নিরাপদ আবাসস্থল তৈরী, খাদ্য সংকট দুর করা, হাতি চলাচলের করিডোর নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রাখা, হাতি হত্যায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা, মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরী, বনভূমি দখল রোধ, বনাঞ্চল তৈরীসহ মহাবিপন্ন এই এশিয়ান হাতি সুরক্ষায় সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে মানুষের নির্মমতায় দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে পড়বে বন্যহাতি।

বনাঞ্চল ধংস করে রোহিঙ্গা জনবসতি, অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও বনাঞ্চলে হাতির আবাসস্থল ধংসের কারণে মানুষের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হওয়ার কথা উল্লেখ করে কক্সবাজার বনবিভাগ বলছেন- মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি বনাঞ্চলে হাতির করিডোর ও আবাসস্থল বৃদ্ধি সহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: আনোয়ার হোসেন এবং কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: সারওয়ার আলম।

একের পর এক বন্যহাতির মৃত্যুতে এশিয়ান হাতি বিলুপ্ত হওয়ার আশংকাসহ হত্যাকারিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি স্থানীয় সচেতন মানুষের।

আরও পড়ুন


চালককে সরিয়ে ড্রাইভিং, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ২ যুবকের মৃত্যু

news24bd.tv এসএম